নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দুঃস্বপ্নের প্রথম প্রহরেই ভিত নড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের। ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো উইকেটে নড়েচড়ে বসার আগেই নেই ৪ উইকেট। দলীয় মাত্র ৪৯ রানে একে একে ফিরে গেলেন চার টপঅর্ডার। মনে হচ্ছিল আরেকটি লজ্জার হাতছানি অপেক্ষা করছে দেশের ক্রিকেটের জন্য। তবে এরপরের সময়টা কাটল স্বপ্নের মতো। মোহনীয় ব্যাটিংয়ে নরম রোদে মাখা দিনটা ভুলিয়ে দিল স্বস্তির পরশ। সাম্প্রতিক সময়ে নানা ঘটনায় যে দু’জন ব্যাটসম্যান ছিলেন সবচেয়ে অস্বস্তিতে সেই লিটন দাস, মুশফিকুর রহিমের হাত ধরেই এলো দুর্দান্ত এক দিন।
গতকাল চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের শুরুটা যেমন ছিল, তাতে শেষবেলার ছবি অভাবনীয় কিছুই। প্রথম সেশনে ৪৯ রানে প্রথম ৪ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলা দল দিন শেষ করবে ওই ৪ উইকেটেই আড়াইশ ছাড়িয়ে, ক’জন ভাবতে পেরেছিলেন! চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন আলোকস্বল্পতায় খেলা শেষ হয় ৫ ওভার আগে। তাতে দিন শেষে বাংলাদেশের ঝুলিতে সেই ৪ উইকেটেই ২৫৩ রান। ক্যারিয়ারের আগের ২৫ টেস্টে যার সেঞ্চুরি ছিল না একটিও, টানা বাজে পারফরম্যান্সের কারণে টি-টোয়েন্টি দলে যিনি জায়গা হারান পাকিস্তানের এই সফরেই, সেই লিটন তুলে নিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম শতক। অপরাজিত আছেন ১১৩ রানে। সেঞ্চুরি থেকে একটু দূরে দাঁড়ানো মুশফিক আজ দিন শুরু করবেন ৮২ রান নিয়ে। পঞ্চম উইকেটে দুজনের জুটিতে এসেছে ২০৪ রান। পঞ্চম উইকেটে সাগরিকায় যা সর্বোচ্চ। একইসাথে পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশেরই চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের জুটি।
টস জিতে ব্যাট করার জন্য বেশ আদর্শ উইকেটে সহজেই ব্যাটিং বেছে নেন মুমিনুল হক। যেকোনো উইকেটের সকালের দিকে পেসাররা পান একটু সুবিধা। বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও সাইফ হাসান সেই সময়টাই পার করতে পারেননি। শাহিন শাহ আফ্রিদির প্রথম ওভারেই ফিরতে পারতেন সাদমান। বল তার ব্যাটে লেগে কিপারের হাতে গেলেও আবেদন করেনি পাকিস্তান। পরে এলবিডব্লিউ থেকেও রিভিউ না নেওয়ায় বেঁচে যান তিনি। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। হাসান আলির বলে ফেরেন ১৪ রান। তার আগেই ওই ১৪ রান করেই শাহীনের শিকার হয়ে ফেরত যান সাইফ।
অধিনায়ক মুমিনুল থিতু হওয়ার আগেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরত যান। নাজমুল হোসেন শান্ত খেলছিলেন সাবলীলভাবে। তবে ফাহিম আশরাফের মিডিয়াম পেসে তার আউটটা খুব পীড়াদায়ক। ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারানো দল তখন পায়ের নিচে মাটি খুঁজতে হয়রান। ক্রিজে এসে কঠিন পরিস্থিতি সহজ করার কাজ হাতে নেন লিটন-মুশফিক। লিটন মন দেন রান বাড়ানোয়, মুশফিক শাহিনদের ছোবল সামলান দক্ষ হাতে।
৬৯ রান নিয়ে লাঞ্চ থেকে ফিরে দুজনের ব্যাট যেন আরও চওড়া। শাহিনের দ্বিতীয় স্পেল সামলান অনায়াসে। স্পিনারদের থিতু হতে দেননি। একটু আলগা বল পেলেই রান বের করেছেন তারা। ৯৫ বলে ৬ চার, ক্রিজ থেকে বেরিয়ে মারা একটি ছক্কায় ফিফটি তুলেন লিটন। টেস্টে দশম ফিফটিটা টেনে তিন অঙ্কে নেওয়ার দাবি ছিল তার সামনে। দলের সে চাওয়া লিটন পূরণ করেছেন পরিণত মাথায়। এক পর্যায়ে ৭০ এর ঘরে লিটন-মুশফিক ছিলেন সমান তালে। এরপর লিটন দ্রুত তার রান বাড়িয়ে নেন। ১৯৯ বলে ১০ চারে স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক। ব্যাট উঁচিয়ে জানান দেন তার সামর্থ্যরে ছবি। লিটনের সামনে এখনো আরও উচ্চতায় উঠার পথ।
আলোক স্বল্পতায় দিনের খেলা শেষ হয়ে যায় ১১ মিনিট আগে। মুশফিক অপরাজিত থেকে যান ৮২ রানে। ১৯০ বলের ইনিংসে ১০ চার মেরেছেন টেস্টে বাংলাদেশের বড় ভরসা। দ্বিতীয় শুরুর দিকেই সেঞ্চুরির প্রত্যাশা থাকবে তার ব্যাটে। এই দুজনের চওড়া ব্যাট বাংলাদেশকে আরও কতদূর টেনে নিয়ে যায় সেটাই এখন দেখার বিষয়।
বাংলাদেশ : ৮৫ ওভারে ২৫৩/৪ (সাদমান ১৪, সাইফ ১৪, শান্ত ১৪, মুমিনুল ৬, মুশফিক ৮২*, লিটন ১১৩*; শাহীন ০/৫০, হাসান ১/৩৮, ফাহিম ১/৩৮, সাজিদ ১/৬৮, নোমান ০/৫১) প্রথম দিন শেষে
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।