Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফের সামাজিক মাধ্যমে মানুষের হৃদয় কেড়েছে রাজপথে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০২১, ৮:১৫ পিএম | আপডেট : ৮:১৮ পিএম, ২৫ নভেম্বর, ২০২১

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আবারও মাঠে নেমেছে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে বিভিন্ন এলাকায় খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। পরে তারা গুলিস্তানের জিপিও এলাকায় নূর হোসেন চত্বর সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করে।

শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন আবারও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। রাজধানীর গুলিস্তানে নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের নিহতের ঘটনায় বিচার চেয়ে শুরু হওয় এই আন্দোলনের নজরকাড়া বিভিন্ন ছবি-ভিডিও এখন ভাইরাল সামাজিক মাধ্যমে। শিক্ষার্থীদের সুশৃঙ্খল আন্দোলন ও তাদের যৌক্তিক দাবি-দাওয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন-প্লাকার্ড নেটিজেনদের হৃদয় কেড়েছে।

জানা গেছে, গুলিস্তান, ফার্মগেট এবং কাকরাইলে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানের পাশাপাশি হাফ ভাড়ার দাবিও করছেন। সাইন্সল্যাব মোড়ে বাসে হাফ ভাড়া করার দাবিতে আন্দোলন করার জন্য শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। আন্দোলনের ছবি শেয়ার করে তাতে সমর্থন দিয়েছেন নেটিজেনরা।

নটরডেম ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে ফেসবুকে জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘যখন দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ি চাপায় নটরডেম ছাত্রের মৃত্যুর প্রতিবাদে ছাত্ররা সমগ্র রাজধানীজুড়ে রাজপথে অবস্থান নিয়েছে সিটি করপোরেশনে ঢুকে প্রতিবাদ করেছে ঠিক তখনই উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ি চাপা দিয়ে আরো একজনকে হত্যা করেছে। যতদূর জানি নিহত ব্যক্তি সংবাদকর্মী। এদেশের সংবাদ শিল্পের জড়িত মানুষেরা লেজুড়বৃত্তির কারণে প্রতিবাদের শক্তি, ভাষা ও নৈতিকতা হারিয়েছে। তাই হয়তো এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ হবে না।
কিন্তু আমরা যারা রাজপথে চলি তারা জানি রাজধানীতে সিটি কর্পোরেশনের গাড়িগুলো কতটা বেপরোয়া চলাফেরা করে। আমার ব্যক্তিগত একটা অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করি।
মাস ছয়েক আগে বারিধারা থেকে বাসায় ফিরছিলাম বিশ্বরোড ধরে। ওই সময় সামনে একটি ময়লার গাড়ি পড়ে যা সম্পূর্ণ ময়লায় ভর্তি ছিল। গাড়ি থেকে পানি পড়ছিল রাস্তায় এবং দুর্গন্ধ এত ব্যাপকভাবে ছড়াচ্ছিল যে, রাস্তার দুই পাশের লোকজন মাস্ক এর উপরে হাত দিয়ে নাক চেপে ধরে যাচ্ছিল। আমি মোটরবাইক চালাচ্ছিলাম। ভাবলাম গাড়িটাকে ওভারটেক করি। যতবার ওভারটেক করতে গিয়েছি ততোবারই ওই ময়লার গাড়ি আমাকে আটকে দিয়েছে, কখনো রাস্তার পাশে চেপে দিয়েছে। মালিবাগ চৌধুরীপাড়া আবুল হোটেল পর্যন্ত গাড়িটি আমাকে ক্রস করতে দেয়নি। ওইখানে এসে আমি ভিন্ন রাস্তায় প্রবেশ করি।
আমি অবাক হয়ে ভাবি, এলডিসি থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নের প্রস্তাব জাতিসংঘে অনুমোদনের সুখবর নিয়ে যেদিন বাংলাদেশের রাজপথ ও সোশ্যাল মিডিয়া সরব থাকার কথা, সেই দিন রাজপথ ও সোশ্যাল মিডিয়া সরব হলো— নিরাপদ সড়কের দাবিতে।’’

জাহিদুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘এদের সবগুলো দাবি যৌক্তিক, দাবি গুলো আমারও। দয়া করে এদের রাজনৈতিক টার্গেট বানাবেন না। নওশাবা গং রা গতবারের মতো তাদের ইস্যুতে গুজব রটাবেন না। ছাত্রদের এই আন্দোলন সফল হোক......।’’

ক্ষোভ জানিয়ে মাহিম মুসাদ্দিক লিখেছেন, ‘‘প্রতিবারে একজন না একজন মারা যায়, তারপর আন্দোলন চলে কয়েকদিন। তারপর সবঠিক হয়। আসলে এই দেশে জিনিসের দাম ঠিকই বাড়ে, অথচ মানুষের জীবনের দাম বাড়ে না..!’’

মামুনুর রশিদ লিখেছেন, ‘‘সড়কে প্রতিটি দুর্ঘটনার জন্য সরাসরি দায়ী দুটি পক্ষ! ০১. BRTA: যারা অবাধে বাছবিচার এবং কোনো মানদণ্ড ছাড়াই অনৈতিক উপায়ে গাড়ির ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স দিচ্ছে! ০২. পুলিশ প্রশাসন: যারা টোকেন সহ অনৈতিক উপায়ে লাইসেন্স ও ফিটনেস ছাড়াই হেল্পার/সহকারীদের গাড়ি চালানোর সুযোগ দিচ্ছে!’’

তাইমুন আমবিয়া খান লিখেছেন, ‘‘মানুষ তো মানুষ নাই। ওই ড্রাইভার যদি ট্রাক থামাতো তাহলে হয়তো হাসানের মৃত্যু হতো না। আল্লাহ কেন এমন শাস্তি দেন মা বাবাদের? সরকার কেন ব্যর্থ হয় নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে?
সকল অন্যায়ের সঠিক বিচার হলে আজ অন্যায় কিছুটা হলেও কমত। মানুষ হতে চেষ্টা করত মানুষ।’’

শাহাদাত হোসাইন সোহেল লিখেছেন, ‘‘সিটি কর্পোরেশন এর ময়লার গাড়ির বেপরোয়া চলাচলে অনেক মানুষের প্রানহানি ঘটে -এই নিউজ প্রায় দেখি। কিন্তু আজ পযন্ত জানতে পারলাম না এই রকম দুঘটনার কোন ড্রাইভারের শাস্তি হয়েছে। ইয়া বড় একটা গাড়ি, বেহুশের মতো চালায়। আপসোস আমাদের প্রানের কোন দাম নাই!! এই গাড়ির সাথে আহত বা নিহত হলে মনে হয় সব দায় আমাদের।’’

মুনির আহমেদ লিখেছেন, ‘‘ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলন। সরকারের জ্বালানি তেল এর দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত এদেশের সাধারণ মানুষের জীবনে যে প্রভাব পড়েছে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ছাত্রদের এই আন্দোলন। এখন একদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি অপর দিকে গণপরিবহনে অরাজকতা মানুষের অসহনীয় দুর্ভোগে ফেলেছে। সন্তানের শিক্ষা ব্যয় বেড়ে গেলে মানুষের পক্ষে জীবন ধারণ কঠিন হয়ে পড়বে।’’

নাসিম লিখেছেন, ‘‘গত বারের আন্দোলন এর পর এই সেক্টর এ কেনো পরিবর্তন আনতে পারে নাই গভর্নমেন্ট। তার মানে গভর্নমেন্ট চায়না পরিবহণ সেক্টর এ পরিবর্তন আসুক. কারণ বড় মাপের একটা চাঁদা এর টাকা পকেট এ আসে.... কি উন্নতি করছে দেশে যে একটা শহরে শৃঙ্খলা আনতে পারেনা।’’

স্বর্ণা ভুইয়া লিখেছেন, ‘‘সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ি গুলোর ড্রাইভাররা নিজেদেরকে কি মনে করে জানিনা এরা খুবই বেপরোয়া গাড়ি চালায় এবং আজ পর্যন্ত অনেককে এদের জন্য প্রাণ দিতে হয়েছে নতুবা হাত পা ভাঙতে হয়েছে। এই ড্রাইভার গুলোর কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত। শাস্তি তো হয়ই না বরং মনে হয় এদেরকে আরো বেশি করে আদর যত্ন করা হয়।’’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিক্ষার্থীদের আন্দোলন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ