Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুর্নীতিতে তোলপাড় খুলনা সিটি কর্পোরেশন

প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল খুলনা মহানগরীর ‘লিনিয়ার পার্ক’ ও ‘শহীদ হাদিস পার্ক নির্মাণ’ প্রকল্প বাস্তবায়নে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রকল্প দু’টি সরেজমিনে পরিদর্শন ও প্রতিটি কাজ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করেছে প্রতিনিধি দলটি। অপরদিকে, বিপুল অংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি)’র লাইসেন্স ও যানবাহন শাখার চারজন কর্মকর্তাকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গত বুধবার আর্থিক অনিয়ম তদন্তে গঠিত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর কেসিসি’র ভারপ্রাপ্ত মেয়র আনিসুর রহমান তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেন। এসব দুর্নীতি ঘটনা ফাঁস হওয়ায় তোলপাড় চলছে কেসিসিতে; আলোচনা-সমালোচনায় মুখর খুলনাঞ্চল।
লিনিয়ার পার্ক ও হাদিসপার্ক প্রকল্পের তদন্তের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত-১) শেখ আব্দুস সালাম বলেন, প্রকল্প দু’টির কারিগরী দিকগুলো সরেজমিনে তদন্ত করা হচ্ছে।
বিশেষ করে প্রকল্পভুক্ত কাজগুলো সিডিউল অনুযায়ী হয়েছে কি না সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে যেহেতু বিষয়টি টেকনিক্যাল সে জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের দিয়েই পরিমাপ করা হচ্ছে। তাদের রিপোর্ট পেলেই এবিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। অনিয়ম ও দুর্নীতি হলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান তিনি।
কেসিসি সূত্র জানায়, খুলনার ঐতিহ্যবাহী শহীদ হাদিস পার্কটি উন্নয়নের জন্য ৮ কোটি ৪১ লাখ ২৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০১১ সালে একটি প্রকল্প শুরু হয়।
প্রকল্পটির সর্বশেষ বাস্তবায়নকাল ২০১৪ সালের মার্চ পর্যন্ত ছিল। কিন্তু কাজ সমাপ্ত হয়নি। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক ও করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ নাজমুল ইসলাম খাতা কলমে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত দেখিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
অপরদিকে, ২০০৮-৯ অর্থবছরে নগরবাসীর চিত্ত-বিনোদনের জন্য ময়ূর নদীর তীরে ১৪ একর জায়গা ঘিরে একটি পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয় কেসিসি। পার্কটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২২ কোটি ৮৪ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। ২০১৪ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও নির্ধারিত মেয়াদে কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হয় কেসিসি।
কিন্তু প্রকল্প পরিচালক মোঃ লিয়াকত আলী খান খাতা-কলমে ২০১৪ সালের জুলাই মাসে প্রকল্প সমাপ্ত দেখিয়ে রিপোর্ট দেন। এসব কারণে প্রকল্প দু’টিতে ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়ম ও জালিয়াতির আশ্রয় নেয়ার অভিযোগ ওঠে। যা তদন্ত করছে দুদক। কেসিসি’র চাকরিচ্যুত হওয়া ৪ কর্মকর্তা হলেন লাইসেন্স শাখার ভারপ্রাপ্ত পরিদর্শক মোঃ রফিকুল ইসলাম, এফএম আব্দুর রশিদ, মোঃ ইউনুস আলী ও মোঃ রবিউল ইসলাম। গত প্রায় একযুগ ধরে মাস্টাররোলে এই পদে কর্মরত ছিলেন।
এ ব্যাপারে কেসিসি’র ভারপ্রাপ্ত মেয়র আনিসুর রহমান বিশ্বাস বলেন, তোলপাড় যতোই হোক, এধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান চলবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুর্নীতিতে তোলপাড় খুলনা সিটি কর্পোরেশন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ