গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
দেশের সর্বপ্রথম জেসিআই স্বীকৃত্ব হাসপাতাল, এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা’য় সম্প্রতি একটি অভিনব চিকিৎসা পদ্ধতি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সেই উপলক্ষ্যে আজ (রোববার) একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগী, রোগীর স্বজন এবং এভারকেয়ারের চিকিৎসকমন্ডলী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
৭২ বছর বয়সী কাজী মো: আব্দুর রউফ কিডনি, ফুসফুস, বার্ধক্য জনিত জটিলতা সহ বিভিন্ন রোগ নিয়ে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকায় ভর্তি হন। এছাড়া পূর্বে তার বাইপাস সার্জারীও হয়েছিল। যথাযথ পর্যবেক্ষণের পর দেখা যায় তার হৃদপিন্ডের একটি ভাল্ব নষ্ট হয়ে গেছে। তখন দায়িত্বরত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. মো: শাহাবউদ্দিন তালুকদার রোগীর শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে তাকে ট্রান্সক্যাথেটার এওর্টিক ভাল্ব রিপ্লেসমেন্ট পদ্ধতির মাধ্যমে ভাল্ব প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। অতঃপর রোগীর সম্মতিতে সফলভাবে ভাল্ব প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা। বর্তমানে রোগী সুস্থ আছেন। উল্লেখ্য যে, এই চিকিৎসার মাধ্যমে দেশে তৃতীয়বারের মতো ট্রান্সক্যাথেটার এওর্টিক ভাল্ব রিপ্লেসমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে।
এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা’র ক্লিনিক্যাল ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. মো: শাহাবউদ্দিন তালুকদার বলেন, মানুষের হৃদপিন্ডে ৪টি চেম্বার থাকে এবং প্রতি চেম্বারে ২টি করে ভাল্ব থাকে। ভাল্বগুলোর শরীরে রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে। এদের মধ্যে এওর্টিক ভাল্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংগসহ অন্যান্য সকল অংগে অক্সিজেনেটেড রক্ত সরবরাহ হয়ে থাকে। তবে কিছু কারণে ভাল্বটি সরু হয়ে যায় এবং শরীরের স্বাভাবিক রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে মানবদেহে নানা সমস্যা ও জটিলতা সৃষ্টি করে। সাধারণত এওর্টিক ভাল্ব স্টেনোসিস ওপেন হার্ট সার্জারীর মাধ্যমে চিকিৎসা করা হলেও, তা বিশেষ করে বয়স্ক রোগীদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সার্জারীর বিকল্প হিসেবে ট্রান্সক্যাথেটার এওর্টিক ভাল্ব রিপ্লেসমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এটি একটি মিনিম্যালী ইনভেসিভ প্রসিডিউর (যেমন, হার্টের রিং প্রতিস্থাপন) এবং পদ্ধতিটি খুব একটা জটিল না হলেও এতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার হয়।” তিনি আরও বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে এই পদ্ধতি অহরহ ব্যবহৃত হলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি নতুন। এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকায় প্রয়োজনীয় অত্যাধুনিক সকল প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা থাকায় আমরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে রোগীর ভাল্ব প্রতিস্থাপন সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছি।”
চিকিৎসা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রোগী বলেন, অভিনব এই পদ্ধতিতে আমার চিকিৎসা সফলভাবে সম্পন্ন করায় এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা, দায়িত্বরত চিকিৎসকবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি এখন অনেকটাই সুস্থ অনুভব করছি।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা’র ক্লিনিক্যাল ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কোঅর্ডিনেটর অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম রেজা; সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. তামজীদ আহমেদ; সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. কাজী আতিকুর রহমান। আরও উপস্থিত ছিলেন কার্ডিওভাস্কুলার ও থোরাসিস সার্জারীর সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো: জুলফিকার হায়দার; এবং সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কোঅর্ডিনেটর ডা. সোহেল আহমেদ; পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট এবং কোঅর্ডিনেটর ডা. তাহেরা নাজরীন; প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. রত্নদীপ চাস্কার; এবং চীফ মার্কেটিং অফিসার ভিনয় কাউল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা’র মেডিকেল সার্ভিস বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর ডা. আরিফ মাহমুদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।