Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাতারে বাংলাদেশিসহ হাজার হাজার বিদেশি শ্রমিকের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০২১, ১০:২৮ এএম

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা বা আইএলও বলেছে, কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজনের বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে কমপক্ষে ৫০ জন নির্মাণ শ্রমিক নিহত এবং পাঁচশো জন গুরুতর আহত হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশ, ভারত এবং নেপালের শ্রমিক।

গত বছর কাতারে শ্রমিকের হতাহতের ঘটনার এই তথ্য আইএলও প্রকাশ করেছে শুক্রবার। ঘটনাগুলোর সঠিক তদন্তও করা হয়নি বলে আইএলও উল্লেখ করেছে। আইএলও কাতারে হাজার হাজার বিদেশি শ্রমিকের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলেছেন, শ্রমিকের নিরাপত্তা নিয়ে কোন অভিযোগ এলেই কাতার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তারা তা সমাধানের চেষ্টা করেছে।

২০২২সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক কাতার। সেজন্য দেশটিতে কয়েক বছর ধরে ফুটবলের স্টেডিয়াম সহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের কাজ করছে অনেক দেশের হাজার হাজার শ্রমিক। কাতারে বিশ্বকাপের অবকাঠামোর নির্মাণ কাজে রয়েছেন, এমন একজন বাংলাদেশি শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, দুই বছর আগে তিনি যখন কাজে গেছেন, তখন সেখানে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে তার বাংলাদেশি অনেক সহকর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখন নিরাপত্তা ঝুঁকি অনেক কমেছে বলে তিনি দাবি করেন।

বাংলাদেশের একজন ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জালাল কাতারে ভবন নির্মাণের একটি কোম্পানি পরিচালনা করেন। তিনি বলেছেন, যারা কাজ করতে যায়, তাদের নির্মাণ কাজ সম্পর্কে আগের অভিজ্ঞতা থাকে না। সে বিষয়টিই বড় ঝুঁকি তৈরি করে বলে তিনি মনে করেন। "শুধু বিশ্বকাপের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ কাজেই দুর্ঘটনা ঘটে-তা ঠিক নয়। এখানে স্বাভাবিক নির্মাণ কাজেও দুর্ঘটনা ঘটে" বলেন জালাল। তিনি উল্লেখ করেন, "কাতারে নির্মাণ কাজে শ্রমিকের নিরাপত্তায় যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়া হয়।" "তবে বাঙালীদের একটা গাফিলতি সব ব্যাপারেই থাকে। তাদের গাফিলতি থাকলেও কাতার কর্তৃপক্ষ এখানে স্টেডিয়াম বা অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছে" বলেন জালাল।

এদিকে, আইএলও বলেছে, কাতারে গত বছর বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম সহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে হতাহতাদের বেশির ভাগই বাংলাদেশ ভারত এবং নেপালের শ্রমিক। অভিবাসী শ্রমিকের অধিকার নিয়ে কাজ করেন সুমাইয়া ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, বছর দেড়েক আগে কয়েকজন বাংলাদেশি শ্রমিক কাতারে নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে আহত হয়ে দেশে ফিরেছেন। কিন্তু কাতার কর্তৃপক্ষ থেকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ তারা পাননি। "কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবলের যে কাজ হয়েছে, তাতে কাজের হেজারড বা নিরাপত্তার অভাবে বাংলাদেশের অনেক শ্রমিক ইনজুরড হয়েছে। কিন্তু অঙ্গহানিসহ ইনজুরড হলে ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে আইএলও'র যে বিধান আছে, সে অনুযায়ী তারা ক্ষতিপূরণ পায়নি" বলেন সুমাইয়া ইসলাম।

আইএলও গত বছর কাতারে নির্মাণ কাজে বিদেশি শ্রমিকের আহত এবং নিহত হওয়ার যে পরিসংখ্যান দিয়েছে, তাতে বাংলাদেশের শ্রমিক কতজন ছিল-তার কোন পরিসংখ্যান বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম বিষয়ক কনস্যূলার ড: মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, কাতারে কর্মক্ষেত্রে বাংলাদেশের শ্রমিকের কোন সমস্যা হলে তা তারা সাথে সাথে কাতার কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে থাকেন। তিনি উল্লেখ করেন, তারা সমস্যা বা অভিযোগ তুলে ধরলে কাতার কর্তৃপক্ষ তাতে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। বাংলাদেশ সরকারের হিসাবে বলা হচ্ছে, চার লাখের বেশি বাংলাদেশের নাগরিক কাতারে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করছেন। এর ৮০ শতাংশই সেখানে নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে রয়েছেন। সূত্র: বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ