Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো রেকর্ড পরিমাণ ঋণে জর্জরিত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বৈশ্বিক ঋণের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। কভিডের বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠায় উন্নত দেশগুলোর ঋণ নেয়ার প্রবণতা নিম্নমুখী হয়েছে। যদিও উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর ঋণের পরিমাণ রেকর্ড স্পর্শ করেছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে দেশগুলোর ঋণ ৯২ লাখ ৫০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সের (আইআইএফ) একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। করোনা মহামারীতে বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর দিয়ে সুনামি বয়ে যায়। মহামারীর ক্ষত থেকে দেশের মানুষ ও অর্থনীতিকে টেনে তুলতে পাশে দাঁড়ায় সরকার। দেয়া হয় বিপুল পরিমাণ প্রণোদনা। এ অর্থের জোগানে লাগামহীন ঋণের দিকে ঝুঁকেছে সরকারগুলো। পাশাপাশি ধার-দেনার পরিমাণ বাড়াতে হয়েছে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকেও। এরই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে রেকর্ডের পর সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া প্রান্তিকে মোট ঋণের পরিমাণ ২৯৬ লাখ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে সরকার, পরিবার ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের হিসাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিশ্বজুড়ে মোট ঋণের পরিমাণ কমলেও এখনো তা প্রাক-কভিড স্তরের তুলনায় অনেক উপরে রয়েছে। আইআইএফ জানিয়েছে, তৃতীয় প্রান্তিকে মোট ঋণের পরিমাণ কভিড-পূর্ব সময়ের তুলনায় প্রায় ৩৬ লাখ কোটি ডলার বেশি ছিল। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক উৎপাদনের তুলনায় ঋণের অনুপাত ১০ শতাংশেরও বেশি পয়েন্ট কমেছে। সেপ্টেম্বর শেষে এ অনুপাত ৩৫০ শতাংশে নেমেছে। কভিডের ক্ষত কাটিয়ে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিগুলো পুনরুদ্ধার হওয়ায় জিডিপির তুলনায় ঋণের হার নিম্নমুখী রয়েছে। এ হার চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে সর্বকালের সর্বোচ্চ ৩৬২ শতাংশ ছিল। ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া প্রান্তিকে উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর ঋণ ৯২ লাখ ৬০ হাজার কোটি ডলার পর্যন্ত উঠেছিল। এ ঋণের অধিকাংশই চীনের। এ সময়ে জিডিপির তুলনায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির ঋণের অনুপাত ২০১৯ সালের শেষ থেকে ২৫ পয়েন্ট বেড়ে ৩৩০ শতাংশে পৌঁছেছে। এ সময়ের মধ্যে উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর নেয়া ঋণের ৮০ শতাংশেরও বেশি চীনের। উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর সরকারি ঋণ জিডিপির প্রায় ৬৩ শতাংশ ছিল। উল্লিখিত সময়ে চীন ব্যতীত উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর মোট ঋণের পরিমাণ ৩৬ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলারের রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই ছিল সরকারি ঋণ। তবে দেশগুলোর বৈদেশিক ঋণ জিডিপির ৪৩ শতাংশের নিচে নামার পথে রয়েছে। ২০২০ সালে এ অনুপাত সর্বকালের সর্বোচ্চ ৪৬ শতাংশে পৌঁছেছিল। আইআইএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের শেষের দিক থেকে উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর নেয়া ৯৫ শতাংশেরও বেশি ঋণ স্থানীয় মুদ্রা বন্ডের। পাশাপাশি এ ঋণে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের অনুপাতও কমেছে। স্থানীয় মুদ্রায় ঋণের প্রায় ১৯ শতাংশ বিদেশীদের হাতে রয়েছে। ২০১৯ সালের শেষ দিকে এ হার ২৩ শতাংশ ছিল। ইন্দোনেশিয়া ও রাশিয়ায় বিদেশী মালিকানার এ ঋণ ব্যাপকভাবে কমে গেছে। তবে চীন, পেরু ও দক্ষিণ কোরিয়ায় এ ঋণ বেড়েছে। অন্যদিকে মহামারী শুরুর পর বৈদেশিক মুদ্রার ঋণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে তুরস্ক, সউদী আরব ও কলম্বিয়ায়। মহামারী থেকে পুনরুদ্ধারের পথে থাকায় গত প্রান্তিকে উন্নত অর্থনীতিগুলোর ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার কমেছে। জাপান ও ইউরো অঞ্চলে ঋণের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি কমেছে। দেশগুলোর নেয়া ঋণের বড় একটি অংশ সামাজিক স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় হয়েছে। যদিও খুব সামান্য অংশ গেছে পরিবেশ সুরক্ষা ও আবহাওয়া পরিবর্তন মোকাবেলায়। আইআইএফ বলেছে, বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে জোর প্রচেষ্টা চলছে। আইআইএফ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উদীয়মান অর্থনীতি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ