পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জ্বালানির মূল্য বাড়ানো সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ‘সরকার জ্বালানিতে আর কত ভর্তুকি দেবে’ পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ, সারসহ বিভিন্ন খাত মিলিয়ে সরকারকে বছরে ৫৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। শুধু জ্বালানি তেলেই ২৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। আমরা কত টাকা ভর্তুকি দেবো? গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি জানান, বাসভাড়া বাড়ানোয় আলোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা হয়েছে। তিনি নারীর সমঅধিকার প্রসঙ্গে শরিয়া আইনে হাত দেয়া সমীচীন নয় বলে মন্তব্য করেন। খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে আমার অথরিটিতে বাসায় থাকতে দিয়েছি। বাকিটা আইনের ব্যাপার। অমানবিক একজন সাজাপ্রাপ্তকে আমি মানবতা দেখিয়ে বাসায় থাকতে দিয়েছি। আমাকে মারতে চেয়েছিল। আমার কাছে আর কত চান? রাখে আল্লাহ মারে কে। আমার ক্ষেত্রেও রাখে আল্লাহ মারে কে?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩১ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত গ্লাসগো, লন্ডন ও প্যারিস সফর করেন। সফরকালে তিনি কপ২৬ সম্মেলন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন ২০২১, ইউনেস্কো সদর দফতরে সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান, ইউনেস্কোর ৪১তম সাধারণ সম্মেলন, প্যারিস শান্তি ফোরাম, ইউনেস্কোর ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। দুই সপ্তাহ বিদেশ সফর শেষে গত ১৪ নভেম্বর দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। ওই সফর নিয়েই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
জ্বালানি ভর্তুকি : সরকার প্রতি বছর ডিজেলে ২৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকিসহ মোট ৫৩ হাজার কোটি টাকা জ্বালানি ভর্তুকি দিচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের প্রতি যে দায়িত্ববোধ, তা নিয়ে আমরা সবসময় সচেতন। করোনাকালে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত কৃষক থেকে শুরু করে কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষ নেই যাদের আমরা অর্থ দিয়ে সাহায্য করিনি। জিনিসপত্রের দাম যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। উৎপাদন বাড়ানোর সব ব্যবস্থা নিয়েছি। বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে। আমাদের তেল কিনে আনতে হয়। উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন কত টাকা ডিজেলে ভর্তুকি দেব? পরে তিনি নিজেই উত্তর দেন। তিনি বলেন, ২৩ হাজার কোটি টাকা ডিজেলে ভর্তুকি দিতে হয়। বিদ্যুৎসহ সব মিলিয়ে ৫৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে থাকি। তিনি আরো বলেন, কৃষকদের জন্য সারের দাম আমরা কমিয়েছি। যে সার ৯০ টাকা ছিল তা কমিয়ে ১৫-১৬ টাকা করেছি। কৃষিতে প্রতিটি ক্ষেত্রে সহায়তা দিয়েছি। কার্ড করে দিয়েছি। এখন কৃষক ১০ টাকায় অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। যার মাধ্যমে ভর্তুকির টাকা সরাসরি তাদের কাছে যায়। করোনার সময় ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছি। সুদের হার কমিয়ে অর্ধেক সরকারের পক্ষ থেকে দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। যাতে ব্যবসা-বাণিজ্য ঠিক থাকে সে জন্য প্রণোদনা দিয়েছি। শ্রমিকরা যাতে বেতন পায় তার ব্যবস্থা করেছি। অনেক উন্নত দেশে খাদ্যের জন্য হাহাকার করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, লন্ডনে সুপারমার্কেটে সাপ্লাই নেই। খাবার জিনিস পর্যন্ত পাওয়া যায় না। তবে বাংলাদেশে কোনো খাদ্যের হাহাকার নেই। সবাই টাকা উপার্জন করে ট্যাক্স কতজন দেয়? সাংবাদিকদের প্রতি এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে তো মানুষ ভালোভাবে খাচ্ছে, চলছে। কিন্তু প্রকৃত ট্যাক্স দিচ্ছে কয়জন? বাস ও অন্যান্য পরিবহনের ভাড়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেশে ছিলাম না ঠিক, তবে দেশের সঙ্গে ছিলাম না তা তো নয়, ডিজিটাল যুগ। বিভিন্ন মাধ্যমে বারবার যোগাযোগ হয়েছে। যারা ভাড়া বাড়াচ্ছিল তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এরপর একটি যৌক্তিক পর্যায়ে ভাড়া রাখা হয়েছে।
বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেউ বিশৃঙ্খলা করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দলের বাইরে যারা কাজ করছে, যারা নির্বাচনে চালাকি করে দলীয়ভাবে কাজ করে বিশৃঙ্খলা করছে তাদের বিচার করা হবে। দলীয় প্রতীক দেয়ার কারণে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সংঘাত হচ্ছেÑ কথাটি ঠিক নয়। তবে কোনো সংঘাত গ্রহণযোগ্য নয়। কোথাও কোথাও সংঘাত হচ্ছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ শুধু চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক দিয়েছে। নির্বাচন মেম্বার পদেও হচ্ছে। তাদের মধ্যেও মারামারি হচ্ছে। তাছাড়া অন্যান্য দলও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বিএনপি দলীয়ভাবে অংশ না নিলেও তাদের প্রার্থীরাও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। সুতরাং দলীয় প্রতীক দেয়ার কারণে সংঘাত হচ্ছেÑ কথাটি ঠিক নয়। শেখ হাসিনা বলেন, এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেউ কোনোভাবে সংঘাতে জড়ালে তার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ নির্বাচনে বিএনপি চালাকি করেছে। ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনে আসেনি কিন্তু তাদের নেতাকর্মীরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তাদের অনেকেই সহিংসতা করেছে। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়ে মারামারিতে উৎসাহ যুগিয়েছে। দলের ব্যবস্থা না হয় আমরা নেব, কিন্তু তাদের ব্যবস্থা কে নেবে।
খালেদার বিদেশে চিকিৎসা : খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা করার সুযোগ দেয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় এই প্রশ্ন করার জন্য আপনাদের লজ্জা হওয়া দরকার। যারা আমার বাপ-মা, ভাই আমার ছোট রাসেলকে পর্যন্ত হত্যা করিয়েছে। আপনার পরিবারকে যদি কেউ হত্যা করত, আর সেই হত্যাকারীকে যদি কেউ বিচার না করে পুরস্কৃত করে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিত, তার জন্য আপনি কী করতেন? আপনি কি ফুলের মালা দিতেন? ’৯৬ সালে আমি বিরোধী দলের নেতা। অথচ বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল রশিদকে পার্লামেন্টে এনে বসিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর খুনি খায়রুজ্জামানের চাকরি ছিল না। তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরি দিয়ে রাষ্ট্রদূত করে বিদেশে পাঠিয়ে পুরস্কৃত করেছে। আর খুনি বাসার! খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে বাসারকে প্রমোশন দিয়ে অবসরের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। কোটালীপাড়ায় বোমা হামলা। ভেবেছিল আমি মরে যাব। তারপরও আমরা অমানুষ না। অমানুষ না দেখেই তাকে (খালেদা জিয়া) তার বাসায় থাকার ব্যবস্থাটুকু আমার এক্সিকিউটিভ অথরিটিতে, আমার হাতে যতটুকু আছে, সেটুকু দিয়ে তার বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পর আমাদের এতজন আহত। ২২ জন মারা গেছে। একদিনও পার্লামেন্টে সেটার ওপর আলোচনা করতে দেয়নি। গ্রেনেড হামলার পর খালেদা জিয়া বলল, আমি নাকি ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলাম। কোটালীপাড়ায় বোমা যখন পোঁতে, এর আগে তার বক্তব্য কী ছিল? শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা, বিরোধীদলীয় নেতাও হতে পারবে না। ভেবেছিল মরেই তো যাব। রাখে আল্লাহ, মারে কে; মারে আল্লাহ, রাখে কে? আমার বেলায় হচ্ছে, রাখে আল্লাহ, মারে কে। তারপরও আবার খালেদা জিয়ার জন্য এত দয়া দেখাতে বলেন? কেউ এই প্রশ্ন করলে আমার মনে হয় অন্তত একটু লজ্জা হওয়া উচিত। আমরা অমানুষ নই। অমানুষ নই দেখেই আমার এক্সিকিউটিভ অথরিটি দিয়ে তাকে বাসায় থাকার, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বাকিটা আইনগত ব্যাপার। তারপরও দুর্নীতি করে দেশটাকে একেবারে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘এত বড় অমানবিক যে তাকেও আমি মানবতা দেখিয়েছি। আমার হাতে যেটুকু পাওয়ার, সেটুকু আমি দেখিয়েছি। আর কত চান, এখন সে অসুস্থ, এই আমি বললাম না, রাখে আল্লাহ মারে কে; মারে আল্লাহ রাখে কে। সেটিই মনে করে বসে থাকুন। এখানে আমার কিছু করার নেই। আমার যতটুকু করার আমি করেছি। বাকিটা আইনের ব্যাপার।
’৭৫-পরবর্তী হত্যাকাণ্ডে জিয়া জড়িত : এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ইলেকশন নিয়ে প্রশ্ন করে কিভাবে। জিয়া ‘হ্যাঁ-না’ ভোটের মাধ্যমে এসেছে। এরপর তার অন্য নির্বাচনগুলো কি নির্বাচন ছিল? ১৯৮১ সালে নির্বাচনে কী হয়েছিল, তা এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে চলে? ইলেকশন কিভাবে করবে তারা? করতে হলে সাংগঠনিক শক্তি ও জনসমর্থন দরকার, তা তো তাদের নেই। তৃণমূলে এমনভাবে উন্নয়ন করেছে আওয়ামী লীগ, তাতে সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। তারা গ্রেনেড হামলা, গুপ্তহত্যা ইত্যাদির মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়। বিদেশ থেকে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের নেতারা। তারা ক্ষমতায় এসেছে অস্ত্রের মাধ্যমে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫-পরবর্তী বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমান সরাসরি জড়িত। ১৯৭৫ সালের পর সংঘটিত বিভিন্ন ক্যুতে সেনাবাহিনীর হাজার হাজার অফিসার ও মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছিল। জিয়াউর রহমান সরাসরি এগুলোতে জড়িত ছিলেন। তার নির্দেশে প্রহসনের বিচারের জন্য সামরিক আদালত বসানো হয়েছিল। কত মানুষ মারা গিয়েছিলেন তার প্রকৃত সংখ্যা বের করা যায়নি বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ভোররাতে বিমানবাহিনীতে সংঘটিত বিদ্রোহ কঠোরভাবে দমন করা হয়েছিল। তখন সামরিক আদালতে ফাঁসি দেয়া হয় ১১ জন অফিসারসহ এক হাজার ৪৫০ বিমান সেনাকে। বরখাস্ত ও চাকরিচ্যুত হন আরো চার হাজার সেনা। নিখোঁজ হন অসংখ্য। সামরিক আদালতে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা সম্প্রতি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ওই সময় আমার ফুফাতো ভাই ফিরোজ কবির চৌধুরী, যিনি ক্যামেরাম্যান ছিলেন, তাকেও হত্যা করা হয়। তাদের হত্যা করে বিলের পানিতে ফেলে দেয়া হয়। জেলখানায় যাদের ফাঁসি হয়েছে, তাদের হয়তো খোঁজ পাব। কিন্তু কত জনকে যে ফায়ারিং স্কোয়াড ও কোর্ট মার্শালে হত্যা করা হয়েছে, সে হিসাব বের করা যাবে কি না জানি না। তবে আমরা তাদের বিষয়ে খোঁজ নেব। স্বজন হারানো অসহায়দের অবস্থা আমি জানি। ওই সময় নিহত অনেকের পরিবারের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। আমিও ভিকটিম পরিবারের একজন। পরিবারের সবাইকে হারানোর পর মামলাও করতে পারিনি, বিচারও চাইতে পারিনি। ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি আইন বাতিল করে বিচার করতে হয়েছে।
ষড়যন্ত্রের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোথায় কী ষড়যন্ত্র হচ্ছে তা আপনারা খোঁজ নেন? দেশের টাকা দিয়ে লন্ডনে আরাম-আয়েশে জীবন কাটাচ্ছে। খালেদা জিয়ার এক ছেলের পাচার করা টাকা তো ফেরত আনলাম। আরেক ছেলে তারেক রহমান লন্ডনে বসে ষড়যন্ত্র করছে। আর কিছু লোক আছে তা প্রচারে ব্যস্ত। অবশ্য টাকা পেলে তো প্রচার করবেই। এখানেও মানি ফ্যাক্ট। কিছু বলার নেই।
জলবায়ু ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তি : প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের কপ সম্মেলনে উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তি হচ্ছে বিশ্বের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা প্যারিস চুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়সহ জলবায়ু অর্থায়ন-প্রক্রিয়াকে আরো ত্বরান্বিত করতে একমত হন। বাংলাদেশসহ ১৪১টি দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে সব ধরনের অরণ্য নিধন রোধে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়সহ জলবায়ু অর্থায়ন-প্রক্রিয়াকে আরো ত্বরান্বিত করতে বিশ্বের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের একমত হওয়াকে এবারের জলবায়ু সম্মেলনের বড় প্রাপ্তি বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতি ঠিক রেখেই উন্নয়ন করা হচ্ছে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হয়েছে যেন সেখানকার দূষিত বর্জ্য এক জায়গায় থাকে এবং তা ব্যবস্থাপনার জন্য সব কিছু করা হচ্ছে। আমরা কার্বন নিঃসরণ করি না। উন্নয়ন হলে পরিবেশের কিছু ক্ষতি হবেই। পুরোপরি পরিবেশ বাঁচাতে হলে গাড়ি, এসি, ফ্রিজ ব্যবহার বাদ দিতে হবে। কারণ এগুলোও পরিবেশের দূষণ ঘটায়। যারা পরিবেশের কথা বলে তারা যাবার সময় গাড়িতেই যায়। পরিবেশের ক্ষতি না চাইলে আমাদের আদিম জগতে ফিরে যেতে হবে।
টিকা নিয়ে অসুবিধা নেই : এখন পর্যন্ত দেশের ৮ থেকে ৯ কোটি মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ২৫ কোটি ডোজ টিকা কেনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টিকা নিয়ে আমাদের কোনো অসুবিধা হবে না। কেউ টিকা থেকে বাদ যাবে না। তিনি বলেন, টিকা অনেক দাম দিয়ে কিনতে হয়। অনেক দাম দিয়ে ২৫ কোটি ডোজ টিকা কিনেছি। শুধু করোনার টেস্ট বাবদ খরচ হয় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে ৮-৯ কোটি মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪ কোটি মানুষকে ডাবল ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। বাকিদের প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে। পেশাজীবী, শ্রমিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাইকে টিকা দেয়া হচ্ছে। কেউ টিকা থেকে বাদ যাবে না।
ক্রিকেট নিয়ে হতাশা নয় : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হেরে যাওয়া নিয়ে হতাশা প্রকাশ না করার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা এত হতাশ হন কেন? আমি এই হতাশা আর দেখতে চাই না। কয়েকটা খেলা তো তারা (ক্রিকেট দল) চমৎকার খেলেছে। কখন যে ব্যাটে বলে ঠিক মতো লাগবে, ছক্কা হবে তা তো বলা যায় না। সবসময় সব অংক মেলে না। এটাও বাস্তব কথা। আমরা যেটা আশা করেছিলাম, আমাদের খেলোয়াড়রা তা খেলতে পারেনি। তাই বলে আমি কিন্তু আমাদের ছেলেদের কখনও হতাশ করিনি। আমি তাদের বলি, আরো ভালো খেল। আরো মনোযোগী হও, আরো অনুশীলন করো। করোনার কারণে তারা অনুশীলন করতে পারেনি। তারপরও বাংলাদেশ আজ বিশ্বকাপে খেলছে, বেশ কয়েকটি দেশকে হারাতে পেরেছে, এটাই তো বড় কথা।
শরিয়া আইনে হাত দেয়া সমীচীন নয় : সম্প্রতি ধর্ষণের রায়ে বিচারকের পর্যবেক্ষণের বিষয়ে বিচারক নিয়োগে সমস্যা রয়েছে কি না প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে বিচারক নিয়োগের কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা হল মনমানসিকতার। নারীদের সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার বিষয়ে শরিয়া আইন ঠিক রেখে নারীদের সম্পত্তিতে অধিকার সমান করা যায় কি না এমন এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শরিয়া আইনে হাত দেয়া সমীচীন বলে মনে করি না। তবে নারীদের অধিকার সঠিকভাবে আদায় করা উচিত। এক্ষেত্রে পুরুষদের এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের দেশের বাস্তবতা হলো, নিজে অনেক বড় বড় কথা বললেও দেখা যায় সে তার বোনের সম্পত্তি দেয় না, চাচা তার মৃত ভাইয়ের সন্তানদের সম্পত্তি দিতে চায় না। এরকম অনেক সমস্যা আমার কাছে এসেছে সেগুলো আমি সমাধান করেছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।