Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চলতি বছর ৫০ হাজার কোটি ডলার হারিয়েছে বিভিন্ন দেশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

বিশ্বজুড়ে এমন বেশ কয়েকটি দেশ রয়েছে, যেখানে করপোরেট ও আয়কর হার অনেক কম। এ সুযোগে দেশগুলোয় মুনাফার অর্থ সরিয়ে নেয় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ও অতি ধনীরা। রাজস্ববঞ্চিত হয় বিভিন্ন দেশ। এভাবে কর জালিয়াতির মাধ্যমে চলতি বছর ৪৮ হাজার ৩০০ কোটি ডলার হারিয়েছে দেশগুলো। এ অর্থ দিয়ে পুরো বিশ্বের মানুষকে অন্তত তিনবার কভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকা দেয়া সম্ভব। যদিও প্রকৃত কর জালিয়াতি ও ফাঁকির পরিমাণ আরো অনেক বেশি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর দ্য গার্ডিয়ান। নতুন একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কর জালিয়াতির আনুমানিক লোকসান গত বছরের ৪২ হাজার ৭০০ কোটি থেকে ২০২১ সালে ৪৮ হাজার ৩০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। এ অর্থের প্রায় ৪০ শতাংশের জন্য দায়ী যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ ওভারসিস টেরিটরি (বিওটি) ও লন্ডন শহর নিয়ে গঠিত একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কর জালিয়াতি ও ফাঁকি দেয়ার সুযোগ তৈরি হয়। ট্যাক্স জাস্টিস নেটওয়ার্ক (টিজেএন), গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ট্যাক্স জাস্টিস ও গ্লোবাল ইউনিয়ন ফেডারেশন পাবলিক সার্ভিসেস ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে সমীক্ষাটি পরিচালনা করেছে। দ্য স্টেট অব ট্যাক্স জাস্টিস ২০২১ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তঃসীমান্ত করপোরেট ট্যাক্স জালিয়াতির মাধ্যমে ৩১ হাজার ২০০ কোটি ডলার সরিয়ে নিয়েছে বহুজাতিক করপোরেশনগুলো। পাশাপাশি অতি ধনী ব্যক্তিরা ১৭ হাজার ১০০ কোটি ডলার কর ফাঁকি দিয়েছে। টিজেএনের ডাটা বিজ্ঞানী মিরোস্লাভ পালানস্কি বলেন, পরিসংখ্যানটি কেবল আইসবার্গের অগ্রভাগকে তুলে ধরে। কর জালিয়াতির প্রকৃত পরিমাণ অনেক বেশি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিম্ন আয়ের দেশগুলো প্রতি বছর যে পরিমাণ কর রাজস্ব হারায়, সে অর্থ দিয়ে দেশগুলো জনসংখ্যার ৬০ শতাংশকে কভিড টিকার আওতায় আনতে পারে। এ অর্থ দরিদ্র ও ধনী পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে টিকাদান হারের বৈষম্যও দূর করতে পারে। সমীক্ষায় উঠে এসেছে ধনী দেশগুলো বৈশ্বিক কর ক্ষতির ৭৮ শতাংশের জন্য দায়ী। এ কর জালিয়াতি বন্ধে আন্তর্জাতিক কর বিধি নির্ধারণের দাবি উঠেছিল। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত মাসে প্যারিসভিত্তিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) ১৫ শতাংশ ন্যূনতম করপোরেট করহার নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছনোর ঘোষণা দেয়। ওইসিডির মধ্যস্থতায় প্রায় ১৪০টি দেশ এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ চুক্তির মাধ্যমে কর স্বর্গ থেকে হারানো রাজস্বের কিছু অর্থ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। টিজেএনের প্রধান নির্বাহী অ্যালেক্স কোবহাম বলেন, আরো একটি মহামারীর বছর পার হচ্ছে। এ সময়ে বিশ্বের অতি ধনী ব্যক্তি ও বহুজাতিক করপোরেশনগুলো পাবলিক অর্থ থেকে আরো অর্ধ ট্রিলিয়ন ডলার ছিনিয়ে নিয়েছে। বৈষম্য মোকাবেলা করার জন্য করের অর্থ আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে। যদিও অতি ধনীদের জন্য এটি অনেকটা ঐচ্ছিক করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মানুষের সুস্থতা ও জীবিকা রক্ষার জন্য বিশ্বজুড়ে কর ব্যবস্থাকে পুনরায় ঢেলে সাজাতে হবে। অন্যথায় মহামারীজনিত কারণে সৃষ্ট নিষ্ঠুর বৈষম্য আমাদের অন্ধকারে ঠেলে দিতে পারে। কর জালিয়াতির জন্য আমরা সবাই ভুগছি। ট্যাক্স জাস্টিস স্টেট অনুযায়ী, এজন্য নির্দিষ্ট কিছু দেশ দায়ী। এখন সময় এসেছে দেশগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসার। গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ৫০ হাজার কোটি ডলার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ