মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
দক্ষিণ চীন সাগর থেকে শুরু করে তাইওয়ান-সহ একাধিক বিষয়ে ক্রমে সঙ্ঘাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। এমন পরিস্থিতিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক করার উদ্দেশ্যে সোমবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসের মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ওই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে সঙ্ঘাত থামাতে নীতিগত সীমারেখা তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
হোয়াইট হাউস থেকে টেলিভিশন পর্দায় জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনায় বাইডেন বলেন, ‘ইচ্ছাকৃতভাবেই হোক বা অনিচ্ছায়, দুই দেশের মধ্যে চলা প্রতিযোগিতা যাতে সঙ্ঘাতের রূপ না নেয় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমাদের একটি সীমারেখা তৈরি করতে হবে।’ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের সঙ্গে সঙ্ঘাত এড়াতে কিছু সুনির্দিষ্ট নীতি বা ‘সীমারেখা’ তৈরি করতে চাইছেন বাইডেন। আর সেই নীতিগত ‘গার্ডরেল’ তৈরির জন্য বেইজিংয়ের উপর চাপ তৈরি করছেন তিনি। বেইজিং থেকে শি ‘আমার পুরোনো বন্ধু’ বলে বাইডেনকে সম্বোধন করেন। তিনি বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ ও সহযোগিতা জোরদার করা প্রয়োজন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাইডেনের অভিষেকের পর শি’র সঙ্গে দুবার ফোনালাপ হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শি চীনের বাইরে যেতে রাজি হননি। এ কারণে দুই নেতার কাছে অনলাইন ভিডিও বৈঠক ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেন, চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক শর্ত নির্ধারণের একটি সুযোগ হলো এ বৈঠক। বৈঠকে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে তাইওয়ান ইস্যু। বাইডেন বৈঠকের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তাইওয়ানের সঙ্গে চীনের চলমান উত্তেজনা নিরসনের চেষ্টা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঊর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাইডেন স্পষ্ট করতে চান যে চীন-তাইওয়ান ইস্যুতে আমরা ভুল পথে যেতে চাই না।’ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাশাগুলো পূরণের চেষ্টা করেছে। ওই প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, বৈঠকটি এমন পর্যায়ের নয় যে এ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসবে বা অমীমাংসিত বিষয়ের মীমাংসা হয়ে যাবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি হয়। উহানে করোনাভাইরাসের উৎস সন্ধান নিয়ে সে সময় চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে উত্তেজনা শুরু হয়। একপর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধও শুরু হয়। ট্রাম্পের তুলনায় অনেকটা উদারভাবে বাইডেন পরিস্থিতি সামলিয়েছেন। গতকাল তিনি ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলারের অবকাঠামো প্যাকেজবিষয়ক আইনে সই করেছেন। অর্ধশতাব্দীর মধ্যে এটি অন্যতম বড় প্যাকেজ। চীনা সরকারের বিনিয়োগ ধরার ক্ষেত্রে এটিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ মনে করছেন বাইডেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব বদলাচ্ছে। আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’
পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কয়েক দশক ধরে কাজ করেছেন বাইডেন। তিনি প্রায়ই বলেন, সরাসরি বৈঠকের বিকল্প ফোনের আলোচনা হতে পারে না। প্রায় দুই বছর ধরে শি জিনপিং চীনের বাইরে যান না। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে কপ-২৬ সম্মেলন এবং জি-২০ সম্মেলনে যোগ না দেয়ায় শির কড়া সমালোচনা করেন বাইডেন। ট্রাম্পের সময়ের তুলনায় চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে। তবে তাইওয়ান নিয়ে উত্তেজনার কারণে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক বিপজ্জনক হতে পারে। সাম্প্রতিক কয়েক বছরে তাইওয়ানের কাছে চীন সামরিক মহড়া বাড়িয়েছে। অক্টোবরে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা এলাকায় রেকর্ডসংখ্যক যুদ্ধবিমান অনুপ্রবেশ করে।
প্রয়োজনে তাইওয়ানের পাশে থাকবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্রের নেয়া কোনো পদক্ষেপ চীন মেনে নেবে না বলেও সাফ জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ান ই। মার্কিন ঊর্ধ্বতন ওই কর্মকর্তা আভাস দিয়েছেন, তাইওয়ানের প্রতি চীনের দখলদারি ও উসকানিমূলক আচরণের বিষয়ে বাইডেন সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানাবেন। তবে ওই কর্মকর্তা এও বলেন, দুই দেশ জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। সূত্র : ব্লুমবার্গ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।