Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস আজ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

আজ ১৬ নভেম্বর আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস। বিশ্বব্যাপী ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, জঙ্গিবাদের উত্থান, মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং অর্থনৈতিক অসাম্যের মধ্যে সহনশীলতা দিবসের রয়েছে আলাদা তাৎপর্য। সহনশীলতা হলো এক ধরনের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং তা অন্য মানুষের অবাধ অধিকারের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। সমাজে নানামুখী অসংগতির কারণে মানুষ সহনশীল থাকতে পারছে না। মূল্যবোধের অভাবেও মানুষ অধৈর্য্য হয়ে নানা ধরনের অন্যায়-অনিয়মে লিপ্ত হচ্ছে। এর থেকে মুক্তির উপায় অন্বেষণে বিংশ শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে স্নায়ুযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সহিংসতা বৃদ্ধির আশঙ্কায় ইউনেসকো ‘সহনশীলতা’ দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

১৯৯৬ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে এক প্রস্তাবে বিভিন্ন দেশের সরকারকে আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়। লক্ষ্য ছিল শিক্ষা, প্রচারসহ বিভিন্ন উপায়ে সহনশীলতার নানা দিক সবার কাছে তুলে ধরা। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৬ সালের ১৬ নভেম্বর ইউনেসকোর ২৮তম অধিবেশনে ‘সহনশীলতার মৌলিক নীতি ঘোষণা’ গৃহীত এবং প্রতিবছরের ১৬ নভেম্বরকে আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ইউনেসকো ঘোষিত এই আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য হচ্ছে বহুত্ববাদী সংস্কৃতির ভেতর সহনশীলতা শিক্ষার মাধ্যমে পৃথিবীর সব ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের মানুষের সুষম ও শান্তিপূর্ণভাবে জীবনযাপন নিশ্চিত করা।

ধর্মে ধর্মে বিভেদের পরিবর্তে সম্প্রীতি ও শোষণমুক্ত সুষম সমাজ; অসত্য, অমঙ্গল ও অকল্যাণের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত হয়ে দেশের মঙ্গল কামনায় উজ্জীবিত হতে হবে। একত্রে গাইতে হবে জীবনের জয়গান, মতামত ব্যক্ত করতে হবে সাম্প্রদায়িক হানাহানিমুক্ত সুন্দর সমাজ গঠনের পক্ষে। দেশে দেশে যে ধর্মীয় উগ্রবাদের জন্ম হয়েছে, তা থেকে মুক্তির উপায় বের করা জরুরি। উগ্রবাদী শক্তির বিরুদ্ধে সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের সমগ্র জনগোষ্ঠীকে জাগ্রত করতে হলে পারস্পরিক সৌহার্দ্য তথা সহনশীলতা সৃষ্টির বিকল্প নেই। এশিয়ার মধ্যে ভারত, বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার দুই বৃহৎ ধর্মীয় সম্প্রদায় হিন্দু-মুসলমান পরস্পর বিভেদে জড়িয়ে পড়েছে বারবার। এর পশ্চাতে আছে কতিপয় রাজনৈতিক দলের ইন্ধন। এই সাম্প্রদায়িক বিভেদ সচেতন মানুষকে ব্যথিত করে।

প্রতিটি ধর্মের বোধ-বুদ্ধিসম্পন্ন সচেতন মানুষ হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে সম্প্রদায়নিরপেক্ষ সম্প্রীতি প্রত্যাশা করেন। আর এর জন্য দরকার সহনশীল আচরণ। এই সহনশীলতার অর্থ ধৈর্য্য, সহ্য, সহিষ্ণুতা, সহনীয়তা, ক্ষমাশীলতা প্রভৃতি। পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলোতেও বলা হয়েছে ধৈর্য্য বা সহনশীলতা প্রদর্শন করতে এবং সৃষ্টিকর্তার সাহায্য চাইতে। যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করেন তারাই মহান। প্রকৃতপক্ষে মানবধর্মের কথার মধ্যেই আছে সহনশীলতার মৌল ভিত্তি। মানবতা, বহুমাত্রিক ঐতিহ্য-পরম্পরা, বহুত্ববাদী সংস্কৃতি ও সাম্যচিন্তা আমাদের এশিয়ার সমাজব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এই বৈশিষ্ট্য ধরে রাখার জন্য দরকার সামাজিক স্থিতিশীলতা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস আজ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ