বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিভিন্ন কারণে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি পিছু ছাড়ছে না। একদিকে নদী পার হতে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দীর্ঘ সময় সিরিয়ালে অপেক্ষা, অপরদিকে সড়কে শৃঙ্খলা না থাকায় পাটুরিয়া থেকে ফেরিতে নদী পার হয়ে এসেও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানজটের কারণে গন্তব্যে পৌছাতে দীর্ঘ সময় বিলম্ব হচ্ছে। এর উপর বাড়তি যোগ হয়েছে বৈরি আবহাওয়া। সব মিলিয়ে ভোগান্তির অপর নাম দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুট।
জানা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি সংকট, ঘাট সংকট, নাব্যতা সংকট ও নদীতে তীব্র ¯্রােতের ফেরি চলাচল ব্যহত হচ্ছে। এছাড়াও বৈরি আবহাওয়ার কারনে ফেরিগুলো পরিচালনা করতে হচ্ছে সাবধানে। এতে করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সাধারণ মানুষের রাজধানীর সাথে যোগাযোগে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে সামনে আসছে কুয়াশার মৌসুম। বর্তমান নানা সংকটের সাথে আগামীতে যুক্ত হবে ঘন কুয়াশায় ঘন্টার পর ঘন্টা ফেরি বন্ধ থাকা। এ পরিস্থিতিতে আগামীতে সাধারন মানুষের দূর্ভোগ আরো কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবানা দেখা দিয়েছে।
বিআইডব্লিটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয় সুত্রে জানাযায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমান ৬ টি রোরো (বড়) ও ৮টি ইউনিটিলিটি (ছোট) ফেরি মিলে মোট ১৪টি ফেরি চলাচল করছে। দৌলতদিয়া প্রান্তে ৭ টি ঘাটের মধ্যে ৪টি ঘাট সচল রয়েছে। ৩ টি ঘাট দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ঘাট বন্ধ, ফেরি সংকট এবং পাটুরিয়া প্রান্তে নদীতে নাব্যতা সংকট থাকায় ব্যস্ততম এ নৌরুটে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। যে কারণে প্রতিনিয়ত দৌলতদিয়া ঘাট অভিমুখে নদী পারের অপেক্ষায় যানবাহনগুলোকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। অপরদিকে পাটুরিয়া ঘাট থেকে নদী পার হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে নামার পরও যানবাহনগুলোকে চরম যানজটের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। দৌলতদিয়া ঘাটগামী যানবাহন গুলো দ্রুত ফেরির নাগাল পেতে সিরিয়াল ভেঙে এলেমেলো ভাবে অগ্রসর হওয়ায় অনেক সময় পুরো মহাসড়ক আটকে যাচ্ছে। এতে নদী পার হয়ে আসা যানবাহনগুলোও ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে।
এদিকে সোমবার বিকেলে সরেজমিনে দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখাযায়, সেখানে ঢাকা খুলনা মহা সড়কের দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট থেকে গোয়ালন্দ ফিড মিল পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার এলাকায় এক সাড়িতে পারের অপেক্ষায় আটকে আছে অন্তত ৫ শত পন্যবাহি ট্রাক ও ১ শত যাত্রিবাহি বাস।
সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী গামী জাকের পরিবহনের যাত্রী মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, ঢাকা গাবতলী থেকে রওনা দিয়ে ফেরিতে নদী পার হয়ে এসে দৌলতদিয়া ঘাটে পৌছায় তাদের বাসটি। কিন্তু দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে নামার পর দীর্ঘ ২ ঘন্টা লাগে তাদের বাসটির যানজট এড়াতে। ঘাট অভিমুখে আসা যানবাহনগুলো এলোমেলো ভাবে ঢুকে পড়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকাগামী জেআর পরিবহনের যাত্রী সোহেল আহমেদ জানান, দৌলতদিয়া ঘাটে সারা বছরই দুর্ভোগ লেগেই থাকে। কখনও ফেরি সংকট, কখনও নাব্যতা সংকট আবার ঘন কুয়াশা। এভাবে সারা বছর একটার পর একটা সমস্যা থাকেই। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুর্ভোগ সহ্য করে করে চলাচল করতে হয়। তিনি আরও বলেন, যানজটের কারণে আমার মত হাজার হাজার মানুষের গুরত্বপূর্ণ সময় দৌলতদিয়া ঘাটে বসে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ-পশ্চিঞ্চলের মানুষের কথা চিন্তা করে কর্তৃপক্ষের উচিত এ রুটে ফেরি বৃদ্ধি করা।
সাধারন পন্যবাহি ট্রাক চালক আব্দুল হামিদ মিয়া বলেন, ২ দিন গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় সিরিয়ালে আটকে থেকে গত ৩ দিন আগে দৌলতদিয়া ঘাটে আসি। এখনও ফেরির নাগাল পাইনি। কখন পাব বলতে পারছি না। ভাড়ার টাকা দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটেই খরচ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চললে মালিক বাঁচবে কিভাবে। আমরা বাঁচবো কিভাবে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোঃ শিহাব উদ্দিন জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি সংকট এবং নদীতে নাব্যতা সংকট রয়েছে। যে কারণে গত কয়েকদিন যাবৎ ফেরি চলাচল কিছুটা ব্যহত হচ্ছে। যে কারণে গত কয়েকদিন উভয় ঘাটে কিছু যানবাহন পারের অপেক্ষায় সিরিয়ালে আটকে থাকতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৪টি ফেরি চলাচল করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।