Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ বিশ্ব সম্প্রদায়ের উন্নয়নে অবদান রাখতে চায়

ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর ক্রিয়েটিভ ইকোনমি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব সম্প্রদায়ের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে অবদান রাখতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, কয়েক দশক ধরে আমাদের দেশের উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সদয় সমর্থনকে আমরা বিনীতভাবে স্বীকার করি। আমরা এখন আমাদের সীমিত সামর্থ্য দিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে অবদান রাখতে চাই।
স্থানীয় সময় গতকাল ফ্রান্সে প্রধানমন্ত্রী ইউনেস্কো সদর দফতরের ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর ক্রিয়েটিভ ইকোনমি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে, সৃজনশীল অর্থনীতিতে বিনিয়োগের ফলে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সম্মিলিত লক্ষ্য পূরণ সম্ভব হবে।

প্রধানমন্ত্রী বিজয়ী নাম ঘোষণা এবং পুরস্কার ও সনদপত্র বিতরণ করেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা পুরস্কার বিজয়ীর প্রশংসা করে বলেন, ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর ক্রিয়েটিভ ইকোনমি পুরস্কার পাওয়ায় আমি এমওটিআইভি ক্রিয়েটিভ লিমিটেডকে (উগান্ডা) অভিনন্দন জানাচ্ছি।

এমওটিআইভিকে ৫৯টি মনোনীত প্রার্থী থেকে এই পুরস্কারের জন্য বাছাই করা হয়। ক্রিয়েটিভ ইকোনমিতে যুব উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে কাজ করার স্বীকৃতিস্বরূপ এমওটিআইভিকে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার দেয়া হয়। শেখ হাসিনা বলেন, সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ইউনেস্কো-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত বিশ্ব মানবতা ও শান্তিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের প্রতি সবচেয়ে উপযুক্ত সম্মান।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এই আন্তর্জাতিক পুরস্কার যা বৈশ্বিক অগ্রাধিকার অর্থাৎ লিঙ্গ সমতা এবং গোষ্ঠী হিসেবে যুবকদের অগ্রাধিকারে অবদান রেখে সৃজনশীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে ইউনেস্কোর প্রচেষ্টাকে আরো বেগবান করবে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ইউনেস্কো সদর দফতরে পৌঁছালে সংস্থার মহাপরিচালক অড্রে আজুল তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার’ অবশ্যই সৃজনশীল উদ্যোক্তা বিকাশের সর্বোত্তম অনুশীলনকে ধারণ, উদযাপন এবং যোগাযোগের মাধ্যমে একটি জ্ঞান বিনিময়ের কৌশল তৈরি করবে।
প্রধানমন্ত্রী কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টিও আমি গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে সম্মরণ করছি। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো জাতির পিতার ৭ই মার্চের ভাষণকে ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’-এ প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে।

তিনি বলেন, এ বছর আমরা আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি। একইসঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। ইউনেস্কো আনুষ্ঠানিকভাবে এই উদযাপনের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

শেখ হাসিনা বলেন, মুজিববর্ষের এই মাহেন্দ্রক্ষণে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার প্রবর্তন এবং বিতরণের জন্য আমি ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ম্যাডাম অড্রে আজুলকে আমাদের আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের পর পরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক করেন। তিনি বিশ্বাস করতেন শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যয় সর্বোত্তম বিনিয়োগ এবং তিনি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক ঘোষণা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ-বিদ্ধস্ত সদ্য-স্বাধীন দেশে নানা ধরনের অর্থনৈতিক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও তিনি প্রায় ৩৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় দেড় লাখ শিক্ষক ও কর্মচারীর চাকরি জাতীয়করণ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামে একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেছি। দেশে এখন প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩৩ হাজার। এগুলোর মধ্যে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি সরকার পরিচালিত। ২০১০ সাল থেকে মাধ্যমিক স্কুল পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হচ্ছে। পিছিয়ে-পড়া এলাকাগুলোতে প্রায় ২৯ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে এক কোটি ৩ লাখেরও বেশি প্রাথমিক শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। মাধ্যমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত আরও প্রায় ৭০ লাখ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন বৃত্তির আওতায় আনা হয়েছে। মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে উপবৃত্তি ও বৃত্তি ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা ‘প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট’ প্রতিষ্ঠা করেছি।
তিনি বলেন, দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএস, পিএইচডি এবং পোস্ট-ডক্টরাল অধ্যয়ন ও গবেষণার জন্য আমরা ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’ চালু করেছি। এ পর্যন্ত প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৮০ জন স্কলারকে ফেলোশিপ দেওয়া হয়েছে।

ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু পুরস্কারের উদ্দেশ্য হলো সৃজনশীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে যুব উদ্যোক্তাদের উন্নীত করে এমন উদ্ভাবনী প্রকল্প বা কর্মসূচি প্রণয়ন ও বিতরণকারী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, একটি সত্তা বা বেসরকারি সংস্থার ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে স্বীকৃতি দেয়া এবং পুরস্কৃত করা।

সৃজনশীল অর্থনীতি পুরস্কারের জন্য জমা দেয়া ৬৯টি মনোনয়নের মধ্যে এমওটিআইভি নির্বাচিত হয়েছে এবং সৃজনশীল অর্থনীতিতে যুব উদ্যোক্তাকে উৎসাহিত করার জন্য উদ্ভাবনী কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার পায়। উগান্ডার কাম্পালায় অবস্থিত এমওটিআইভি একটি সমন্বিত সৃজনশীল স্টুডিও যা সরঞ্জাম এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে একটি প্রভাবপূর্ণ এবং টেকসই উপায়ে সহযোগিতাকে উৎসাহিত করে।

এটি পণ্য এবং ফ্যাশন ডিজাইনের মতো বিভিন্ন ডোমেইন জুড়ে কাজ করে, উদ্যোক্তাদের তাদের ব্যবসাগুলো পরিমার্জন এবং পরিমাপ করতে সহায়তা করে। এমওটিআইভি-র একটি ডিজাইন একাডেমি রয়েছে যা তরুণ উদ্ভাবক, ডিজাইনার এবং ব্যবসায়িক মালিকদের জন্য শেখার সুযোগ প্রদান করে।



 

Show all comments
  • A Khalil Huq ১৩ নভেম্বর, ২০২১, ১:০৪ এএম says : 2
    এতা শুনে ভালো লাগছে যে, বাংলাদেশ এখন বিশ্বকে নিয়ে ভাবে। ধন্নবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • Nazmul Hasan ১৩ নভেম্বর, ২০২১, ১:০৪ এএম says : 2
    Gteat, Our honorable PM now is a world leader
    Total Reply(0) Reply
  • Bijoy Mojumder ১৩ নভেম্বর, ২০২১, ১:০৫ এএম says : 1
    Inshallah we can do that
    Total Reply(0) Reply
  • Md Nadim Hassan ১৩ নভেম্বর, ২০২১, ১:০৫ এএম says : 0
    বাংলাদেশ উন্নত দেশ নাকি স্বল্পোন্নত দেশ?
    Total Reply(0) Reply
  • Borhan Uddin ১৩ নভেম্বর, ২০২১, ১:০৬ এএম says : 2
    Congratulations.wellcome to of our best honorable real current Primeminister with Sheikh Hasina people Republic of Bangladesh ! joy bangla !
    Total Reply(0) Reply
  • Mamunur Rahman ১৩ নভেম্বর, ২০২১, ১:০৬ এএম says : 2
    জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহসী কন্যা দেশওরত্ন শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের উন্নয়ন । জয় বাংলা
    Total Reply(0) Reply
  • Omer Farque ১৩ নভেম্বর, ২০২১, ১:০৬ এএম says : 2
    So much love and honour for the honourable prime minister of Bangladesh.
    Total Reply(0) Reply
  • Md Nahid Pervez ১৩ নভেম্বর, ২০২১, ১:০৬ এএম says : 2
    বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ তৈরী করে বিশ্বে পিতার মুখ উজ্জ্বল করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জয়তু শেখ হাসিনা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ