মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
উত্তরপ্রদেশে একটি অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর মুসলিম যুবক আলতাফকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ জানিয়েছে, আলতাফ আত্মহত্যা করেছে।
উত্তরপ্রদেশের কাশগঞ্জের কোতয়ালি থানায় ২২ বছরের যুবক আলতাফের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবার আলতাফকে বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। কিছুক্ষণ পর পুলিশ জানায়, আলতাফ বাথরুমে গিয়েছিল। সেখানেই নিজের জ্যাকেটের দড়ি খুলে পানির পাইপের সঙ্গে বেঁধে আত্মহত্যা করেছে। এরপর পাঁচজন পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়েছিল, স্থানীয় একটি পরিবারের ১৬ বছর বয়সি মেয়ে নিখোঁজ। সেই তদন্তের সূত্রেই পুলিশ আলতাফকে ধরে নিয়ে যায়। মেয়েটি ক্লাস টেনের ছাত্রী ছিল। পুলিশের একাধিক দল তার খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েও তাকে খুঁজে পায়নি।
আলতাফের বাবা চাঁদ মিঞা জানিয়েছেন, তিনিই ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পুলিশ ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি থানায় যান। কিন্তু পুলিশ তাকে সেখানে থাকতে দেয়নি। পরে তিনি শোনেন ছেলে মারা গিয়েছে। প্রথমে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, পুলিশ তার ছেলেকে মেরেছে। পরে একটি ভিডিওতে তিনি বলেছেন, ‘আমি পুলিশ ও চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছি। জানতে পেরেছি, আলতাফ আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ তাকে হাসপাতালেও নিয়ে গিয়েছিল। পুলিশের কাজে আমি সন্তুষ্ট।’
আলতাফের পরিবার এই আত্মহত্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তাদের বক্তব্য, যে বাথরুমে আলতাফ আত্মহত্যা করেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে, সেখানে কল ও পাইপ ছিল মাত্র ফুট তিনেক উঁচুতে। সেখানে কারো পক্ষে আত্মহত্যা করা সম্ভব নয়। আলতাফের কাকা শাকির আলি বলেছেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। কোনোমতে বেঁচে আছি। আমরা দাবি জানাবার মতো অবস্থায় নেই। তাকে যখন শেষ দেখেছি, সে বেঁচে ছিল। তারপর কী হয়েছে, আমরা জানি না।’
ভারতের অনেক সংবাদপত্রেই ওই বাথরুমের ছবি প্রকাশিত হয়েছে। তারপর বিতর্ক আরো বেড়েছে। কাশগঞ্জের এসপি রোহন প্রমোদ জানিয়েছেন, ‘আলতাফকে একটি কিডন্যাপের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছিল। জেরা চলার সময় সে একবার বাথরুমে যেতে চায়। অনেকক্ষণ আসছে না দেখে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়েছে। তখনো তার শ্বাস চলছিল। আমরা কাছের মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যাই। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি।’ পুলিশের দাবি, অটপ্সির রিপোর্টেও বলা হয়েছে, গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ায় মৃত্যু হয়েছে।
প্রমোদ বলেছেন, ‘আলতাফের সঙ্গে মেয়েটির প্রেম ছিল। পরে তারা আলাদা হয়ে যায়। আলতাফ আমাদের সম্পর্কের কথা জানিয়েছিল। তাদের কাছে এই বিষয়ে তথ্য আছে।’ পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ নিয়ে প্রমোদের বক্তব্য, ‘ওই থানা একেবারে শহরের কেন্দ্রস্থলে। প্রচুর মানুষ থানায় যাতায়াত করেন। কাউকে পুলিশ মারলে তার প্রচুর প্রত্যক্ষদর্শী থাকার কথা।’ ইতিমধ্যেই ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আলতাফ পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিল। তার বাবাও একই কাজ করেন। পাঁচ মাস আগে মেয়েটির বাড়িতে কিছু কাজ হয়েছিল। সেখানে আলতাফ কাজ করেছিল। আলতাফের পরিবার জানিয়েছে, সে মেয়েটিকে চিনত না। মেয়েটির পরিবারও বলেছে, আলতাফকে সে জানত না। পুলিশ জানিয়েছে, আলতাফের পরিবার তাদের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছে, আলতাফ অবসাদে ভুগত।
সমাজবাদী পার্টি বলেছে, ‘আবার যোগী-রাজ্যে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। দেখা যাচ্ছে, যোগী-রাজ্যে পুলিশ ও অপরাধীরা শুধু এনকাউন্টার করছে। এটা উত্তরপ্রদেশের ঠোকো পুলিশের(ট্রিগার হ্যাপি) কাজের আরেকটি নমুনা।’ তাদের দাবি, ‘দোষী পুলিশ কর্মীদের খুনের দায়ে মামলা করতে হবে।’ কিছুদিন আগেই আগ্রায় পুলিশের হেফাজতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশে মানবাধিকার বলে কিছু আর বেঁচে নেই। মায়াবতীও ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। সূত্র: পিটিআই, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।