নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : বছর জুড়েই দেশি-বিদেশি পর্যটক আর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে থাকে কুমিল্লার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম কোটবাড়ির ময়নামতি শালবন বৌদ্ধবিহার ও জাদুঘরে। গত অর্থ-বছরের চেয়ে এবারে প্রায় ৩০ লাখ টাকার বেশি টিকিট বিক্রি করে প্রতœতত্ত¡ প্রতিষ্ঠানটির চলতি অর্থ-বছরে আয় দাঁড়িয়েছে ৯৫ লাখ টাকা। আগামী অর্থ-বছরে এ আয় কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা।
কমিল্লা শহর থেকে আট কিলোমিটার পশ্চিমে কোটবাড়ি। এখানে রয়েছে শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর। প্রায় ৩৭ একর জায়গা জুড়ে শালবন বিহার বাংলাদেশের প্রাচীন বৌদ্ধবিহার। সমতল থেকে যার উচ্চতা প্রায় ৫০ ফুট। বুদ্ধ রাজাদের সময় সপ্তম থেকে অষ্টম শতাব্দীতে এ শালবন বৌদ্ধবিহার স্থাপিত হয়। আর ময়নামতি জাদুঘরে রয়েছে অসংখ্য পুরাকীর্তি। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তরের আওতায় রয়েছে ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান দু’টি। প্রতিদিন শত শত দেশি পর্যটক-দর্শনার্থী ছাড়াও বিদেশি পর্যটকের সমাগম ঘটে ঐতিহাসিক শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘরে। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে শালবন বিহার ও জাদুঘরের টিকেট বিক্রি থেকে আয় হয়েছে ৬৭ লাখ টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯৫ লাখ টাকায়।
প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক দর্শনার্থী ছাড়াও দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটকরা পা রাখছেন স্থানটিতে। বিশেষ করে ছুটির দিনে ও শীতকালে পর্যটক আর বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পিকনিক পার্টি, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সফর এবং পারিবারিক ভ্রমণে মুখরিত হয়ে ওঠে ঐতিহাসিক শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর। হাজারো দর্শনার্থী সামলাতে হিমশিম পোহাতে হয় প্রত্মতত্ত¡ অধিদপ্তরের নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। কারণ একটাই, জনবল সঙ্কট। শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর দেখভালের কাজে বর্তমানে মাস্টাররোলে চাকরি করছেন ৩৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। কাস্টোডিয়ান ও সহকারী কাস্টোডিয়ান পদে রয়েছেন দুই কর্মকর্তা। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মধ্যে ৪ জন রয়েছেন প্রেষণে।
গত বছরের জুন থেকে শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ২০জন আর্মড ব্যাটালিয়ন আনসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে অনেকটা নিরাপত্তার ঘাটতি রয়েছে জাদুঘরের বিপরীতে গাছ-গাছালি আর ছোট-বড় টিলায় বেষ্টিত ‘শালবন’ নামের জায়গাটি। এখানে প্রায়ই চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে থাকে। তবে শালবন নামের এ স্থানটি জাদুঘর কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণ করেন না। এটি বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু বন বিভাগ থেকে কোনো রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই শালবনে।
কুমিল্লা ময়নামতির শালবন বিহার ও জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান আহমেদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘শালবন বৌদ্ধবিহার ও জাদুঘরের মতো দু’টি ঐতিহাসিক বড় প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য আরও জনবলের প্রয়োজন রয়েছে। প্রতিবছরই প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন আবিস্কারের জন্য খনন কাজ হয়ে থাকে। এখানকায় প্রাপ্ত প্রতœসম্পদগুলো বৌদ্ধবিহার সংলগ্ন ময়নামতি জাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য রাখা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে খননে আবিষ্কৃত আরো অনেক প্রতœসামগ্রী, নিদর্শন জাদুঘরে জায়গার অভাবে প্রদর্শন করা যাচ্ছে না। তাই জাদুঘরটি সম্প্রসারণ করা হলে দেশি-বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা যেমন বাড়বে তেমনি সরকারের রাজস্বও বাড়বে। চলতি অর্থবছরে আয়ের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। আগামীতে আরও বাড়বে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।