Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রংপুরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের টিয়ার শেল ও ফাঁকা গুলি বর্ষণ,আহত প্রায় ৫০

পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির মৃত্যুকে ঘিরে উত্তেজিত জনতার থানা ঘেরাও-ভাংচুর

রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০২১, ১১:২৭ পিএম

রংপুরের হারাগাছ মেট্রোপলিটন এলাকায় আজ সন্ধ্যায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে তাজুল ইসলাম (৫২) নামে এক মাদক সেবীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হারাগাছ থানা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। উত্তেজিত জনতা থানা ঘেরাও করে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। এ সময় পুলিশের সাথে জনতার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ৪ জন সাংবাদিক, বেশ কয়েকজন পুলিশসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়।

এ অবস্থায় মেট্রোপলিটন এলাকা থেকে রিজার্ভ ফোর্স চাওয়া হলে সেখানে পুলিশের গাড়ি পৌঁছামাত্র বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে এবং পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করতে থাকে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। এ অবস্থা চলতে থাকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত। এতে পুলিশ, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। এদের মধ্যে ১৫ জনকে স্থানীয় ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে হারাগাছ পৌরসভার নতুন বাজার তেপতি নামক স্থানে মাদক দ্রব্যসহ তাজুল ইসলাম নামে ঐ ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করে। এসময় পুলিশ তাকে ব্যাপক মারপিট করলে সে ঘটনাস্থলেই পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এর কিছুক্ষণ পরে সে মারা যায়। দ্রুত এ খবর ছড়িয়ে পড়লে হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানার বিভিন্ন পাড়া মহল্লা থেকে উত্তেজিত লোকজন লাঠি সোডা ও ইট পাথর নিয়ে থানা ঘেরাও করে এবং হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ করলে উত্তেজিত জনতা পুলিশের ৪টি গাড়ি ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায়।

এ সময় উত্তেজিত জনতা থানার প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে থানা পুলিশ টিয়ারশেল ও গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এরই মধ্যে রংপুর থেকে অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ আসলে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুঁড়ে এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পুলিশও হামলাকারীদের ওপর পাল্টা গুলি ছুড়ে ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। এতে ৪ সাংবাদিক, পুলিশসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে স্থানীয় ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যায়। সংঘর্ষ থানা এলাকা ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থা চলতে থাকে রাত ১০টা পর্যন্ত। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

রাত পৌনে ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা রংপুর-হারাগাছ সড়কের হক বাজার এলাকায় অবস্থান করছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে। বিপুল সংখ্যক দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

তবে তাজুলকে মারপিটের অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় সে দৌড়ে পালিয়ে চেষ্টা করলে পুলিশ তাকে আটক করতে গেলে ওই মাদক ব্যবসায়ী আহত হয়।

এব্যাপারে হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানার ওসি শওকত আলী জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। থানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রংপুর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ