Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যুত্থানের পর উত্তাল সুদান

মুক্তি পেলেন সুদানের প্রধানমন্ত্রী হামদাক, গুলিতে নিহত ১০

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

সুদানের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদাক এবং তার স্ত্রী বাড়ি ফিরে গেছেন বলে জানিয়েছে তার কার্যালয়। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে তাকে আটক করে। এর এক দিনের মাথায় মুক্তি পেয়ে মঙ্গলবার বাড়ি ফেরেন তিনি। জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ক্ষমতা দখলের পর বিশ্ব জুড়ে নিন্দা শুরু হলে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদাক এবং তার স্ত্রীকে মুক্তি দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে জানিয়েছে সুদানে সহায়তা দেওয়া বন্ধ করবে তারা। ইউরোপীয় ইউনিয়নও একই পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। আবদাল্লাহ হামদাককে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসও। বিশ্বজুড়ে সেনা অভ্যুত্থানের মহামারি চলছে উল্লেখ করে বিশ্ব শক্তিগুলোকে তা ঠেকানোর আহ্বান জানান তিনি। সুদানে সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দেশটির রাজধানী খার্তুমসহ বিভিন্ন শহরে রাজপথে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীরা সেøাগান দিয়ে, পতাকা উড়িয়ে রাস্তায় রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। বিক্ষোভ থামাতে একাধিক স্থানে গুলি ছুঁড়েছে সেনারা। এতে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি। খবরে জানানো হয়েছে, সোমবার অভ্যুত্থানের নেতা জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ বুরহান বেসামরিক সরকার ভেঙে দেন। গ্রেফতার করা হয় প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লা হামদাকসহ দেশটির রাজনৈতিক নেতাদের। দেশে জারি করা হয় জরুরি অবস্থা। এর প্রতিবাদেই রাস্তায় নেমে আসেন দেশটির সাধারণ মানুষ। একইসাথে নিন্দার ঝড় উঠেছে সমগ্র বিশ্ব থেকে। জাতিসংঘ নিরপত্তা পরিষদের বৈঠকে এই সঙ্কট নিয়ে মঙ্গলবার আলোচনার কথা রয়েছে। এদিকে জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ বুরহানের দাবি, রাজনৈতিক অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে এই অভ্যুত্থান ঘটানো হয়েছে। যদিও খবর পাওয়া যাচ্ছে, সেনা সদস্যরা খার্তুমে বাড়ি বাড়ি হানা দিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে বিক্ষোভ আয়োজনকারীদের গ্রেফতার করছে। এরইমধ্যে শহরের বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বন্ধ আছে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলও। ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোন সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। এক সংবাদ সম্মেলনে আল-বুরহান জানান, আগামি কয়েক ঘন্টার মধ্যে ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু হবে। তিনি আরও বলেন, জনগণের সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর সেনাবাহিনী ব্যারাকে ফিরে যাবে। তার দাবি, সুদানের রাজনীতিবিদরা দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছিলেন। তবে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে এরইমধ্যে বড় ধরণের প্রতিবাদ গড়ে উঠেছে সুদানে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মীরা ধর্মঘট করছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় সামরিক হাসপাতালগুলোতে একমাত্র জরুরি চিকিৎসা সেবা ছাড়া অন্য কোন চিকিৎসা সেবা দিতে ডাক্তাররা অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন। রাতভর বিক্ষোভ প্রদর্শনের পরও বিক্ষোভকারীরা মঙ্গলবার সকালে রাজপথ থেকে সরেনি। তারা বেসামরিক শাসন ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে অনড় আছে। তারা সেøাগান দিয়ে জানাচ্ছে, মানুষের দাবি বেসামরিক শাসন। টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে তারা রাস্তায় রাস্তায় প্রতিবন্ধক তৈরি করছে। বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন বহু নারীও। তারাও সামরিক শাসন চাই না বলে ধ্বনি দিচ্ছে। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, সেনাবাহিনীর এই পদক্ষেপ সুদানের শান্তিপূর্ণ বিপ্লবের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। যুক্তরাষ্ট্র সুদানের জন্য বরাদ্দ ৭০ কোটি ডলার সহায়তা ¯গিত করেছে। সুদানে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের খবরে বিশ্ব নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বৃটেন, ইইউ, জাতিসংঘ এবং আফ্রিকান ইউনিয়নের সাথে সুর মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রও দেশটিতে রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে। এই নেতাদের অজ্ঞাত স্থানে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। রয়টার্স, বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ