Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে: স্পিকার

রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০২১, ৬:২৮ পিএম

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, পীরগঞ্জে সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক তাদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। তিনি আজ মঙ্গলবার দুপুরে পীরগঞ্জ উপজেলার করিমপুর গ্রামের মাঝিপাড়া জেলে পল্লী এলাকা পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার সময়ে বহিরাগতরাও অংশ নিয়েছিলেন। আমরা স্থানীয়, এলাকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সাথে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে হামলার সময়ে বাইরে থেকে অনেক বহিরাগত ছিল। যাদের চেহারা দেখে এলাকার লোকজন তাদের চিনতে পারেনি। বহিরাগতদের অনেকের কাছে পেট্রল ছিল। অবশ্যই এটা পরিকল্পিত ঘটনা। তা না হলে এধরণের একটা ঘটনা ঘটার কথা নয়। পীরগঞ্জে এ ধরণের অভিজ্ঞতা কখনো হয়নি।

স্পীকার শিরিন শারমিন বলেন, এবার পূজাতেও পীরগঞ্জের ৯৮টি মণ্ডপে শান্তিপূর্ণ ভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপন হয়েছে। সেখানে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি আমরা ব্যক্তিগত, উপজেলা প্রশাসন ও দলের সহায়তা ছিল। ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় পূজার সময়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু পূজা শেষে হঠাৎ এ ধরণের নাশকতামূলক ঘটনার কিভাবে ঘটলো, এটার গোড়ায় আমাদের যেতে হবে। সুষ্ঠু তদন্ত হলে প্রকৃত অপরাধীদের গোড়া বের করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, রামনাথপুরের মাঝিপাড়ায় উত্তেজনা ছড়ানোর খবর আমরা পাওয়ার আগে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন পেয়েছিলেন। পীরগঞ্জ থানার ওসি তার ফোর্স নিয়ে সেখানে গিয়েছিল। মাঝিপাড়াকে তারা সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করেছে। তাদের যত ফোর্স ছিল, সবকিছু দিয়ে তারা মাঝিপাড়াকে ঘিরে রেখেছিল। যাতে সেখানে কোনো ধরণের আক্রমণ না হতে পারে। এরমধ্যে রংপুর জেলা পুলিশ সুপারও সেখানে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে মাঝিপাড়ায় আক্রমণ না করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িতরা বড় করিমপুরে তারা কিছু কিছু বাড়িতে বিচ্ছিন্ন ভাবে আগুন ধরিয়ে দেয়। তখন সেখানে পুলিশের ফোর্স টিয়ার শেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেছে।

শিরিন শারমিন বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছেন। আমরা ওই সময়ে পুলিশের পাশাপাশি সেখানে বিজিবি, র‌্যাব ও ফায়ার সার্ভিস পাঠিয়েছি। তাদের চেষ্টা আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে। কিন্তু তারপরও ২৮টি বাড়ি পুড়ে গেছে। কিছু গবাদিপশু পুড়ে গেছে এবং অনেকের বাড়িঘরের সমস্ত আসবাবপত্র অগ্নিসংযোগে নষ্ট হয়ে গেছে। যারা এধরণের কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য আমি আশা করছি, প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্তের মধ্যদিয়ে প্রকৃত যারা অপরাধীদেরকে চিন্হিত করে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করবেন।
এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন রোববার রাতের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় স্পিকার ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আশ্বাস দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান, পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার, পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিরোদা রাণী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাজিমুল ইসলাম প্রমুখ।

এদিকে, ক্ষতিগ্রস্তদের মানবিক সহায়তা দিতে ১০০ বান্ডিল ঢেউটিন, গৃহনির্মাণ বাবদ ৩ লাখ টাকা এবং শুকনো ও অন্যান্য খাবারের ২০০ প্যাকেট বরাদ্দ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রতি প্যাকেটে ১০ কেজি মিনিকেট চাল, ১ কেজি দেশি মসুরের ডাল, ১ কেজি লবণ, ১ লিটার সয়াবিন তেল, ১ কেজি চিনি, ১০০ গ্রাম মরিচের গুড়া, ২০০ গ্রাম হলুদের গুড়া ও ১০০ গ্রাম ধনিয়া গুঁড়াসহ মোট ৮টি আইটেম আছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রংপুর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ