Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলের স্বপ্নের পায়রা সেতুর উদ্বোধন রোববার

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০২১, ৭:৫৯ পিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী রোববার পায়রা সমুদ্র বন্দর ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটাকে সারা দেশের সাথে সরাসরি সড়ক পথে সংযূক্ত করতে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পায়রা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরে সেতুটি যানবাহন চললাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। কুয়েত উন্নয়ন তহবিল এবং ওপেক তহবিলের সাথে বাংলাদেশের যৌথ অর্থায়নে ১ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম ৪ লেনের এ সেতুটি নির্মানের ফলে দ্বীপজেলা ভোলা বাদে দক্ষিণাঞ্চলের ৫টি জেলাই সারা দেশের সাথে সড়ক পথে সরাসরি যুক্ত হতে যাচ্ছে। এরফলে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় বরিশাল থেকে পৌনে দু ঘন্টায় এবং পদ্মা সেতু পার হয়ে ঢাকা থেকে ৭ ঘন্টায় পৌছান সম্ভব হবে। এমনকি কুয়াকাটর দুরত্ব ঢাকা থেকে কক্সবাজারের অর্ধেকে হ্রাস পাবে।

‘এক্সট্রা ডোজ প্রী-স্ট্রেসড বক্স গার্ডার’ ধরনের এ সেতুটির নকসা অনেকটা চট্্রগ্রামের দ্বিতীয় কর্ণূফ’লী সেতুর আদলে করা হয়েছে। মূল সেতুটি বক্স গার্ডার ছাড়াও স্টে-ক্যাবলের ওপর স্থিতিশীল থাকছে।

বরিশাল-পটুয়খলী-কুয়াকাটা/ বরগুনা মহাসড়কের ২৬তম কিলোমিটারে লেবুখালীতে পায়রা নদীর ওপর ১ হাজার ৪৭০ মিটার দীর্ঘ পায়রা সেতুটি নির্মানে বাংলাদেশের নিজস্ব তহবিল থেকেও ৩৬৮.২৯ কোটি টাকা ব্যায় হয়েছে। ফুটপাথ সহ ১৯.৭৬ মিটার প্রস্থ চার লেনের মূল সেতুটির পায়রা নদীর সর্বোচ্চ জোয়ার থেকে ৬০ ফুট উচ্চতআয় নির্মিত হয়েছে। সেতুটির সাথে ১ হাজার ২৬৮ মিটার সংযোগ সড়ক এবং টোল প্লাজা ও প্রশাসনিক ভবনও নির্মিত হয়েছে।

২০০৫-০৬ অর্থ বছরে লেবুখালীতে প্রস্তাবিত এসেতু নির্মানে কুয়েত উন্নয়ন তহবিলের সাথে প্রথম সমঝোতায় সাড়ে ৪শ কোটি টাকা ব্যায় নির্ধারিত হলেও পরবর্তিতে প্রকল্প ব্যায় বেড়ে প্রায় দেড় হাজার কোটিতে উন্নীত হয়েছে। এমনকি ২০১২ সালের ৮ মে একনেক-এর সভায়ও ২০০৫-০৬ সালের প্রকল্প ব্যায় সম্বলিত ডিপিপি অনুমোদিত হয়। কিন্তু ২০১৪ সালে দরপ্রস্তাবে সর্বনিম্ন দর দাতার প্রস্তাবটি ছিল ১ হাজার ২শ কোটি টাকার ওপরে। প্রায় দশ বছর আগের মূল্যহারে চীনা নির্মান প্রতিষ্ঠান সহ অন্য দর প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দরপত্র দাখিল করেনি। ফলে সড়ক অধিদপ্তর ও যোগাযোগ মন্ত্রনালয় কুয়েতের অনুমোদন নিয়ে মূল্যহার সংশোধন করে চীনা সর্বনিম্ন দর প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠানটির প্রস্তাবনা গ্রহন করে। কিন্তু ২০১৭ সালের জুনে ও ’১৯ সালের ফেব্রুয়ারীতে আরো দুফায় লেবুখালী সেতুর সংশোধীত ডিপিপি একনেক-এ অনুমোদনের পরে সেতুটির জন্য প্রকল্প ব্যায় দাড়িয়েছে ১ হাজার ৪৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। একাধীক ঘূর্ণিঝড় সহ করেনা মহামারীর কারণে পায়রা সেতুটির নির্মান কয়েক দফা পিছিয়ে গিয়ে গত মাসেই এর কাজ শেষ হয়েছে।
ইতোমধ্যে সড়ক ও সেতু সচিব এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সরেজমিনে সেতুটির নির্মান কাজ সম্পন্নের বিষয়টি প্রত্যক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী দপ্তরে তা অবহিত করে উদ্বোধনের অনুমোদন চান। এরই প্রেক্ষিতে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আগামী রোববার সেতুটির উদ্বোধনের দিন নির্ধারন করা হয়েছে বলে সড়ক অধিদপ্তর এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রনালয়ের একাধীক সূত্রে জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রী গনবভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটি উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে পায়রা সেতুর পশ্চিম পান্তে পটুয়াখালী প্রান্তে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উদ্বেআধনী অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করবেন বলে জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ