বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মাগুরা সদর উপজেলার জগদল গ্রামে আলোচিত ৪ খুনের ঘটনায় অবশেষে মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার দুপুরে নিহত সবুর মোল্লার, কবির মোল্লা ও তাদের চাচাত ভাই রহমান মোল্লা হত্যার ঘটনায় সবুর মোল্লার ছোটভাই আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে নজরুল মেম্বরসহ ৬৮ জনকে আসামী করে সোমবার দুপুরে মামলা দায়ের করে। অপর পক্ষের নিহত নজরুল ইসলমের সমর্থক ইমরান এর হত্যার ঘটনায় শেষ সংবাদ পাওয়া পর্যন্ত মামলা দায়ের হয়নি। তবে নিহত ইমরানের মা ফরিদা বেগম বাদী হয়ে আজ রবিবারই মামলা দায়ের করবে বলে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সপার কামরূল হাসান জানান।
মাগুরা সদর উপজেলার জগদল ইউনিয়নে নির্বাচনে প্রার্থিতা এবং সামাজিক দলাদলি নিয়ে গত শুক্রবার জগদল দক্ষিন পাড়ায় একই দিনে ৪ খুনের ঘটনা ঘটে। শনিবার বিকাল ৫টার পর ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিহতদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর এবং তাদের দাফন কাজ শেষ হয়। এ ঘটনায় ৪ জনকে পুলিশ তাৎক্ষনিক গ্রেফতার করে।
এলাকাবাসী জানান, জগদল গ্রামে জগদল ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি মেম্বার নজরুল ইসলাম বেশ প্রভাবশালী। ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনের আগে তিনি ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। উক্ত নির্বাচনে সৈয়দ রফিকুল ইসলাম নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হওয়ার পর নজরুল মেম্বার বিএনপির রাজনীতিতে নিস্ক্রিয় হয়ে রফিক চেয়ারম্যানের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকা শুরু করেন। অন্যদিকে দক্ষিণ জগদল গ্রামের প্রভাবশালী মাতবর সবুর মোল্লা ও তার সমর্থকরাও অতীতে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে মিশে যান।
স্থানীয়রা জানান, আসন্ন ইউপি নির্বাচনে দক্ষিণ জগদল গ্রামের প্রভাবশালী মাতবর সবুর মোল্লা ও তার সমর্থকরা বর্তমান চেয়ারম্যান রফিক এবং নজরুল মেম্বারকে ছেড়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহিদ হাসান এবং অপর মেম্বার প্রার্থী সৈয়দ আলীকে সমর্থন দেয়। এ ঘটনা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই এলাকায় বেশ উত্তেজনা চলছিল, যার ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সবুর মাতবরদের ওপর হামলা , সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় নজরুল মেম্বারের সমর্থকরা জগদল গ্রামের রাস্তার পাশে আব্দুল হাকিমের চায়ের দোকানের সামনে সবুর মাতবর, ছোট ভাই কবির মোল্লা, চাচাতো ভাই রহমান মোল্লাকে কুপিয়ে জখম করে। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তাদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর বিকাল ৫টার দিকে গ্রামের একটি মাছের ঘেরের মধ্যে নজরুল মেম্বারের সমর্থক ইমরান নামে এক যুবককে সড়কির আঘাতে প্রতিপক্ষরা খুন করে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনার সৃুষ্ট হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যেয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
সবুর মাতবরের ভাতিজা মাহফুজ মোল্লা এ হত্যাকান্ডের জন্য বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ রফিকুল ইসলাম এবং নজরুল মেম্বারকে দায়ী করে বলেন, গত কয়েক দিন ধরে এলাকায় চলা বিরোধ মীমাংসার কথা বলে তাদের ডেকে নিয়ে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে ।অন্যদিকে তাদের এ বক্তব্য অস্বীকার করেছেন জগদল ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। তিনি এ ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানান।
মাগুরার পুলিশ সুপার মো: জহিরুল ইসলাম জানান, পুলিশ মোতায়েনের পর নতুন করে কোন হামলা বা লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার সাথে জড়িতদের আটক ও এলাকায় শান্তি প্রতিষ্টার জন্য পুলিশ তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, নতুন করে কোন ঘটনা না হয় তার জন্য এলাকায় কঠোর নজরদারী অব্যাহত রয়েছে।।
এ বিষয়ে মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম মামলার কথা স্বীকার করে বলেন, পুলিশ আসামীদের আটকের জন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এলাকায় বর্তমানে শান্তেপিূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। নতুন করে কোন অঘটন না ঘটে তার জন্য পুলিশকে শতর্ক রাখা হয়েছে। এ দিতে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বেশকিছু পরিবারকে মালামাল নিরাপদ স্থানে শরিয়ে নিতে দেখা যাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।