মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মাদককাণ্ডে গ্রেফতার বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানপুত্র আরিয়ান খানের জামিন আবেদনের শুনানি গতকাল সন্ধ্যায় মুলতবি ঘোষণা করেন বিশেষ আদালত। আজও এ শুনানি চলবে বলে জানিয়েছেন মুম্বাই সেশন কোর্ট। এর ফলে গতরাতও জেলহাজতে কাটাতে হয়েছে আরিয়ানকে।
গতকালও ভারতের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো (এনসিবি) আরিয়ান খানসহ অন্য আসামিদের জামিনের বিরোধিতা করে। এনসিবির প্রতিনিধি এএসজি অনিল সি সিংয়ের বক্তব্য আজও শুনবেন বিশেষ আদালত।
ভারতের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর (এনসিবি) প্রতিনিধি এএসজি অনিল সি সিং জামিনের বিরোধিতা করে আদালতকে জানান, এনসিবি এই পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে। এঁদের মধ্যে চার জন মাদকবিক্রেতা; এক জনের কাছে থেকে বিক্রি করা যায় এমন পরিমাণ মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। এনডিপিএস আইনের ২৯ ধারা অনুসারে আটক প্রত্যেকেরই শাস্তি হওয়া উচিত।
এর আগে আদালতে আরিয়ানের আইনজীবী অমিত দেশাই বলেন, ‘আরিয়ান খান অনেক ভুগেছেন এবং অনেক শিক্ষা পেয়েছেন। তিনি মাদকবিক্রেতা কিংবা মাদকচক্রের সঙ্গে জড়িত নন।’
আরিয়ান খান গতকাল ষষ্ঠবারের মতো জামিন আবেদন করেন। দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা জেরার পর ৩ অক্টোবর বিকেলে আরিয়ান খানকে গ্রেফতার দেখায় এনসিবি। আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি এনডিপিএসের ৮সি, ২০বি, ২৭, ২৯ ও ৩৫ ধারায় মামলা করা হয়েছে। ২৩ বছর বয়সী আরিয়ান খানের পক্ষে আইনি লড়াই চালাচ্ছেন মুম্বাইয়ের অন্যতম শীর্ষ আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অমিত দেশাই।
মুম্বাইয়ের উপকূলে একটি প্রমোদতরীতে চলমান মাদক পার্টি থেকে ২ অক্টোবর রাতে আরিয়ান খানসহ মোট আট জনকে আটক করে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। যাত্রীর ছদ্মবেশে কর্ডেলিয়া নামে বিলাসবহুল ওই প্রমোদতরীতে চেপে বসেছিলেন এনসিবির গোয়েন্দারা।
এদিকে শাহরুখপুত্র আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন তার আইনজীবী। আদালতে গিয়ে উল্টো দাবি করলেন, অভিযানের সময় মাদকপার্টি চলা সেই প্রমোদতরিতেই ছিলেন না আরিয়ান! তাই তার ওপর আরোপ করা অভিযোগ সত্য নয়।
আরিয়ানের নতুন আইনজীবী অমিত দেশাই গতকাল আদালতের কাছে এ দাবি করেছেন। প্রখ্যাত আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে ছেলের জামিন করাতে ব্যর্থ হওয়ায় শাহরুখ খান নতুন আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছেন। দেশাই হলেন সেই আইনজীবী যিনি সালমান খানকে ২০০২ সালের হিট অ্যান্ড রান কেস থেকে ছাড়িয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে জামিন শুনানির জন্য অমিত দেশাই সালমান খানের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। এই মামলায় সালমানকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়ার পর এ আইনজীবী নিম্ন আদালতের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। অমিত দেশাইয়ের শুনানির পর ২০১৫ সালের মে মাসে সালমানকে এই মামলায় ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে জামিন দিয়েছিল আদালত।
গতকাল দুপুর থেকেই মুম্বাইয়ের কোর্টে চলেছে আরিয়ানের জামিন শুনানি। অমিত দেশাই বলেন, ‘যখন অ্যান্টি ড্রাগস অফিসাররা অভিযান চালাচ্ছিল, তখন সেখানে ছিলেনই না আরিয়ান। তাই তার ওপর আনা মাদক পাচারের অভিযোগ একবারেই উদ্ভট!’
অভিযান চালানো নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) সেসময় আদালতে জানায়, আরিয়ান তাদের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। জানিয়েছেন, তিনি চরস খান। যা আরবাজ মার্চেন্টের কাছে পাওয়া গেছে।
এসময় অমিত দেশাই বলেন, ‘আদালত জানেন, মানুষের কাছ থেকে জোর করে এমন স্টেটমেন্ট নেওয়া হয়। আরিয়ানের ক্ষেত্রেও সেটা করা হতে পারে।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে এই আইনজীবী মুম্বাই আদালতকে বলেন, ‘তদন্তে ড্রাগ কেনাবেচার কথা বলা হলেও আরিয়ান খান যখন প্রমোদতরিতে গিয়েছিলেন তার কাছে কোনও নগদ টাকাই (ক্রেডিট কার্ড ছাড়া) ছিল না। তাই কেনা বা বেচার কোনও সুযোগ তার নেই।’
গতকাল দুপুর থেকেই চলেছে শুনানি। এতে শাহরুখ বা গৌরি খান না আসলেও উপস্থিত ছিলেন নায়কের ম্যানেজার। বিকাল সাড়ে পাঁচটায় কোর্ট জানায়, বৃহস্পতিবারও চলবে জামিন শুনানি।
জানা যায়, শাহরুখের ছেলেকে নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস (এনডিপিএস)-আইনের আওতায় গ্রেফতার করা হয়েছে। পরোয়ানায় লেখা রয়েছে, ৩০ গ্রাম কোকেন, ২১ গ্রাম চরস, ২২টি এমডিএমএ বড়ি ও নগদ ১,৩৩,০০০ টাকা উদ্ধার হয়েছে মুম্বাই থেকে গোয়াগামী প্রমোদতরির টার্মিনালে।
এনসিবি সূত্রে খবর, শাহরুখপুত্রের সরঞ্জাম থেকেও মাদক উদ্ধার হয়েছে। তার লেন্স রাখার বাক্সে নেশাদ্রব্য পাওয়া গেছে। সেই পার্টিতে জামাকাপড়ের সেলাই, মেয়েদের ব্যাগের হাতলের মধ্যেও লুকিয়ে রাখা হয়েছিল মাদক। আটকের আগে আরিয়ান চরস খেয়েছিলেন।
শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খান দায়রা আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন। যার কোনও নির্দেশ এখনও আদালতের তরফ থেকে আসেনি। ২ অক্টোবরের মামলায় এনসিবি তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল। গত কয়েকদিন আরিয়ানকে রাখা হয়েছে মুম্বাইয়ের আর্থার রোড জেলে। কোর্টের তরফ থেকে শাহরুখ পুত্রের জামিনের আর্জি নাকচ হয়ে যায়। আর তারপর আরিয়ান হাজির হন দায়রা আদালতে।
দায়রা আদালতে নিজের বাবার নাম না বলে আরিয়ান উল্লেখ করেছেন, তিনি একজন বলিউড তারকার ছেলে। তার ব্যাচেলার ডিগ্রি রয়েছে। এর পাশাপাশি ফাইন আর্টস, সিনেম্যাটিক আর্টসেও ডিগ্রি রয়েছে। তিনি আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন প্রোডাকশনের কোর্সও করেছেন। আরিয়ান আরও বলেছেন, ‘আমি দেশের দায়িত্বশীল এক নাগরিক। আর আমি নিরপরাধ। এখনও পর্যন্ত আমার রেকর্ড ভাল। কোনও বেআইনি কাজ করিনি। এমন কোনও কাজে আমার নামও আসেনি। এই মামলায় আমার নাম ভুল করে চলে এসেছে।’ সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।