Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্ষুব্ধ সাবেকরা

প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

জাহেদ খোকন : ভুটানের বিপক্ষে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে-অফের অ্যাওয়ে ম্যাচে জয়ের স্বপ্ন নয়, অন্তত ১-১ গোলে ড্র’র লক্ষ্যই ছিল বাংলাদেশের। কারণ জয়ের স্বপ্ন দেখার দুঃসাহস বেলজিয়ান কোচ টম সেইন্টফিটের দলের নেই। এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে হোম ম্যাচে এই ভুটানের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল লাল-সবুজরা। তখনই সবার ধারণা জন্মেছে এই ভুটান ভোগাবে বাংলাদেশকে। আশঙ্কা ছিল ভুটানীরা বাংলাদেশের ফুটবলকে অন্ধকার গহŸরে নিমজ্জিত করবে। আশঙ্কাই সত্যি প্রমাণিত হলো, ভবিষ্যদ্বাণী ফলে গেলো অক্ষরে অক্ষরে। যে ভুটানকে এক সময় গুনে গুনে গোল দিত লাল-সবুজরা। কোনো ঘরানার ম্যাচেই বাংলাদেশের বিপক্ষে এর আগে জয় পায়নি যারা। সেই ভুটানই সোমবার প্লে-অফের অ্যাওয়ে ম্যাচে ৩-১ গোলে হারিয়ে দিল মামুনুল বাহিনীকে। লজ্জায় ডুবিয়ে অন্ধকারের অতল গহŸরে নিমজ্জিত করল বাংলাদেশের ফুটবলকে।
ফুটবলে এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল দেশ ভুটানের কাছে হেরে আগামী তিন বছরের জন্য আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ হারালো লাল-সবুজরা। ফিফা-এএফসি আয়োজিত কোনো ম্যাচই তিন বছর খেলতে পারবে না বাংলাদেশ। যা এদেশের ফুটবলের জন্য শুধু লজ্জাই নয়, অপমানজনকও। একের পর এক বিদেশি কোচ এনেও জাতীয় দলের ভাগ্য ফেরানো যায়নি। ভুটানের কাছে হেরে চরম বিপর্যয়ের মধ্যেই পড়েছে বাংলাদেশের ফুটবল। আর এই লজ্জাজনক হারে ক্ষুব্ধ দেশের সাবেক তারকা ফুটবলাররা। জাতীয় দলের চরম ব্যর্থতায় তারা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কর্মকর্তাদের দোষী সাব্যস্ত করে অচিরেই তাদের পদত্যাগ দাবি করেছেন। জাতীয় দলের সাবেক কোচ গোলাম ও সাবেক তারকা ফুটবলার গোলাম সারোয়ার টিপু বলেন, ‘ভুটানের কাছে হারের ঘটনায় একদিকে যেমন লজ্জার, অন্যদিকে দুঃখ ও কষ্টের। ব্যর্থতার গহŸর থেকে ফুটবলকে কীভাবে টেনে তুলতে হবে তা আমার চেয়ে ভালোই বলতে পারবেন বাফুফের কর্মকর্তারা। যারা গত আট বছর ধরে দেশের ফুটবলকে অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছেন। ভুটানের কাছে এমন হার কোনওভাবেই মেনে নেয়া যায় না।’
জাতীয় দলের আরেক সাবেক কোচ ও ফুটবলার হাসানুজ্জামান খান বাবলু বলেন, ‘বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন মুখে অনেক বড় বড় কথা বলেন। মিডিয়ার সামনে কথার ফুলঝুড়ি ছুটান। কিন্তু তার দায়িত্বকালেই দেশের ফুটবল কফিনে ঢুকে গেল। এর জন্য শুধু পদত্যাগই নয়, প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে তাকে।’ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বাফুফের বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য শেখ মো. আসলাম বলেন, ‘ভুটানের কাছে হার লজ্জাজনক বলাটাও কম হবে। খেলোয়াড় হিসেবে আমি মুখ দেখাতেও লজ্জা পাচ্ছি। বাংলাদেশের ফুটবলের এমন দৈন্যদশার দায় বাফুফে কর্মকর্তাদেরই নিতে হবে।’
জাতীয় দলের আরেক সাবেক অধিনায়ক ও গোলরক্ষক আমিনুল হক ক্ষুব্ধ কন্ঠে বলেন, ‘অনেক দিন আগেই বাংলাদেশের ফুটবল আঁতুর ঘরে ঠাঁই নিয়েছে। ভুটানের বিপক্ষে চরম ব্যর্থ হয়ে বাফুফে তা দেশবাসীকে জানিয়ে দিল। জাতীয় কিংবা ক্লাব পর্যায়ের, কোনও ঘরানার ফুটবলেই অতীতে ভুটান আমাদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি। অথচ সেই দলটির কাছে এমন লজ্জাজনক হার! এ হারের পুরো দায় বাফুফের বর্তমান কমিটির উপরেই বর্তায়। কাজী সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন এই কমিটি গত ৮ বছর চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সবাইকে স্বপ্ন দেখিয়ে এবং নতুন আশার প্রলোভন দেখিয়ে আবারও তিনি বাফুফে সভাপতির চেয়ারে বসে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করেছেন। আমি মনে করি, ভুটানের কাছে হারের সমস্ত ব্যর্থতার দায় মেনে নিয়ে সালাউদ্দিন নেতৃত্বাধীন বাফুফের বর্তমান কমিটির পদত্যাগ করা উচিত। এই দায়ভার দলের ফুটবলারদেরও নিতে হবে। মামুনুল নাটকের কোনো প্রয়োজন ছিল না। দল থেকে অবসর নিয়ে আবার দলে ফিরে এসে তিনি কি করলেন। মাঠে দলকে কতটুকুই নেতৃত্ব দিতে পেরেছেন মামুনুল? আর বেলজিয়ান কোচ টম সেইন্টফিটের কথা আর কি বলব? তিনি কতটা মানসম্পন্ন কোচ তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্ষুব্ধ সাবেকরা

১২ অক্টোবর, ২০১৬
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ