Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অপছন্দ হলেও হিলারিকে আটকাতে ট্রাম্পকে সমর্থন

কংগ্রেসে রিপাবলিকান সংখ্যাধিক্য ধরে রাখতে চান পল রায়ান

প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে উচ্চপদস্থ নির্বাচিত রিপাবলিকান কর্মকর্তা কংগ্রেস স্পিকার পল রায়ান বলেছেন যে, তিনি হিলারিকে আটকাতেই ট্রাম্পের ওপর থেকে সমর্থন উঠিয়ে নিচ্ছেন না। তিনি বলেন, নারী বিদ্বেষী বক্তব্যের কারণে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দূরত্ব বাড়লেও তিনি ট্রাম্পকেই সমর্থন করেন। স্পষ্ট করেই পল রায়ান জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ট্রাম্পের পক্ষে সাফাই গাইবেন না, তবে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে তার ওপর থেকে সমর্থনও প্রত্যাহার করবেন না। পল আরো জানিয়েছেন, কংগ্রেসে রিপাবলিকান আসনসংখ্যা ধরে রাখতে চান তিনি। উল্লেখ্য, ১১ বছর আগে দেয়া একটি নারীবিদ্বেষী বক্তব্য গত শুক্রবার ফাঁস হওয়ার পর তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন ট্রাম্প। ২০০৫ সালে ধারণ করা অডিও সাক্ষাৎকারটি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট ফাঁস করে। মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল এনবিসি-র উপস্থাপক বিলি বুশকে টেলিফোনে ওই বিতর্কিত সাক্ষাৎকারটি দিয়েছিলেন এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। ফাঁস হওয়া অডিও সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, তারকারা নারীদের নিয়ে যা খুশি করতে পারে আর এতে ওই নারীরাও বাধা দেবে না। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এক বিবাহিত অভিনেত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে তার আগ্রহের কথাও জানান। মিস ইউনিভার্সসহ কয়েকটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার অন্যতম আয়োজক ট্রাম্প সুন্দরী নারীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের আকাক্সক্ষাও জানিয়েছিলেন। ওই অডিও সাক্ষাৎকার ফাঁসের পর জন ম্যাককেইন, কন্ডোলিৎজা রাইস, গ্যারি হারভার্টসহ বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পের ওপর থেকে সমর্থন উঠিয়ে নিয়েছিলেন। আগেই মিট রমনি, জন কেসিক, জেব বুশ, লিন্ডসে গ্রাহামসহ অনেক সিনিয়র রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পকে ভোট দেবেন না বলে জানিয়েছেন। অডিও ফাঁসের পর পল রায়ান জানিয়েছিলেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে উইসকনসিনের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেবেন না। তিনি বলেন, ট্রাম্পের মন্তব্য শুনে তিনি অসুস্থবোধ করছেন। ট্রাম্প এক টুইটার বার্তায় পলকে উদ্দেশ করে বলেছেন, তার উচিত ঝগড়া করে সময় নষ্ট না করে কাজ শুরু করা। গত সোমবার রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণে থাকা মার্কিন কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ যে কোনো মূল্যে ধরে রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন পল রায়ান। তিনি তার দলের কংগ্রেস সদস্যদের বলেছেন, তারা যেন নিজ নিজ এলাকায় হিলারিকে আটকানোর জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থাগ্রহণ করেন। অডিও ফাঁসের পরদিন, শনিবার তার বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য এক ভিডিও বিবৃতিতে ক্ষমা চেয়েছেন ট্রাম্প। বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, আমি যা বলেছি এবং করেছি, তার জন্য আমি অনুশোচনায় ভুগছি। যারা আমাকে কাছ থেকে চেনেন, তারা জানেন, এসব কথা আমার সঙ্গে যায় না। আমি তা বলেছি, আমি ভুল ছিলাম, এজন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। তিনি আরো বলেন, আমি কখনোই বলছি না, আমি একজন নিখুঁত মানুষ। যা আমি নই, তা হওয়ার চেষ্টাও আমি করিনি। আমি কেবল আগামী দিনে আরো ভালো একজন হতে চাই। ট্রাম্পের ফাঁস হওয়া নারীবিদ্বেষী বক্তব্যকে অগ্রহণযোগ্য ও আক্রমণাত্মক বলে উল্লেখ করে তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পও ট্রাম্পকে ক্ষমা করে দেয়ার জন্যও জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এক ভিডিও বার্তায় তিনি ওই আহ্বান জানান। তবে অডিও ফাঁসের পর তার পক্ষ নেয়া সম্ভব নয় জানালেও ট্রাম্পের রানিংমেট মাইক পেন্স তার সমর্থন তুলে নিচ্ছেন না। তিনি ট্রাম্পের পাশে থেকে গর্বিত বলেও মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে জানিয়েছেন। পেন্স বলেন, আমি মনে করি, টাম্প দেখিয়েছেন তার অন্তরে রয়েছেন মার্কিন জনগণ। তিনি জানিয়েছেন, নিজের কর্মকা-ের জন্য তিনি বিব্রত। তাই তিনি পরিবার এবং মার্কিন জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
এদিকে, গত রোববার দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে মুখোমুখি হন হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিন পররাষ্ট্রনীতি উপস্থাপনের চেয়ে একে অপরকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেই কথা বেশি বলেছেন তারা। বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ই-মেইল কেলেঙ্কারির জন্য হিলারির কারাগারে থাকা উচিত। নির্বাচনে বিজয়ী হলে তিনি হিলারির বিষয়ে তদন্ত চালাতে একজন স্পেশাল প্রসিকিউটর নিয়োগ দেবেন। ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের জবাবে হিলারি বলেন, ট্রাম্প যা বলেছেন সেটা একেবারেই মিথ্যা। এতে আমি বিস্মিত হইনি। এটা বরং খুবই ভালো যে, ট্রাম্পের মতো একজন বদমেজাজি লোক আমাদের দেশের সর্বময় কর্তা হতে পারেন না। হিলারির এমন বক্তব্যের মাঝপথেই ফের হিলারিকে জেলে পাঠানো উচিত বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। বিতর্ক চলার সময় ট্রাম্পকে ২০০৫ সালে এক অডিও সাক্ষাৎকারে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়। আত্মপক্ষ সমর্থন করে ট্রাম্প উল্টো তীব্র আক্রমণ করেন হিলারি দম্পতিকে। নারীদের সঙ্গে নিজের যে কোনো ধরনের যৌন অসদাচরণের কথা অস্বীকার করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রিপাবলিকান দলীয় এ প্রার্থী বলেন, ২০০৫ সালের অশালীন মন্তব্য নিয়ে তিনি গর্বিত নন। বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অপছন্দ হলেও হিলারিকে আটকাতে ট্রাম্পকে সমর্থন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ