Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফেসবুকে পজিটিভ রিভিউ দেখিয়ে প্রতারণা করত এসপিসি

গ্রেফতারকৃত দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০০ এএম

কথিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেসের সিইও আল আমিন ও পরিচালক শারমিন আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিআইডি। গত রোববার তাদের গ্রেফতার করা হয়। সিআইডি জানায়, প্রতিষ্ঠানটি অনেকের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে সেগুলো ডেলিভারি দিতে ব্যর্থ হয়। তবে প্রতারণার অংশ হিসেবে কয়েকজন ক্রেতাকে অর্ডার দেওয়া পণ্য ডেলিভারি দিয়ে তাদের ছবিসহ ফেসবুকে ইতিবাচক রিভিউ দিত কোম্পানিটি। এসব রিভিউ দেখে ফাঁদে পা দিতেন সাধারণ গ্রাহকরা। গতকাল সোমবার সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) হুমায়ূন কবির।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আল আমিন জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় এক কোটি। এক মাসের মধ্যে তারা ৫-৬ কোটি টাকার অর্ডার পান। যারা পণ্য অর্ডার করেন, তাদের বেশির ভাগই ছাত্র ও অল্প বেতনের চাকরিজীবী। প্রাথমিক অবস্থায় এসপিসি ওয়ার্ল্ড কিছু পণ্য ডেলিভারি করে সেই গ্রাহকদের দিয়ে তাদের ফেসবুক পেজে ইতিবাচক রিভিউ পোস্ট করিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করে। পরবর্তীতে অধিক সংখ্যায় অর্ডার ও অগ্রিম অর্থ পেলে তারা পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করে। অনেক দিন পেরিয়ে গেলে গ্রাহকরা প্রতারণার বিষয়টি যখন বুঝতে পারেন তখন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমে প্রতিকার দাবি করে বক্তব্য দিতে থাকেন। যারা খুব বেশি চাপ প্রয়োগ করেন, তাদের টাকা ফেরতের মিথ্যা আশ্বাস হিসেবে চেক প্রদান করে এসপিসি।
দীর্ঘ দিন ধরে এসপিসির কার্যক্রমের ওপর নজরদারি চলছিল উল্লেখ করে হুমায়ূন কবির বলেন, এসপিসিসহ স¤প্রতি কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণাকান্ডে অত্যন্ত উৎকণ্ঠায় রয়েছেন গ্রাহক, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা। ই-কমার্স সাইটগুলো ঈদ ধামাকা, সাইক্লোন অফার, ডাবল অফারসহ বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে। এক্ষেত্রে ক্রীড়া ও শোবিজ জগতের সেলিব্রেটিদের মাধ্যমে বিভিন্ন মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন প্রচার করে তাদের ভক্ত ও তরুণদের আকৃষ্ট করে নিয়মিত গ্রাহকে পরিণত করেছে। ৫০শতাংশ মূল্যছাড়ে নতুন মোটরসাইকেল, সেলফোন কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, ওভেনসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স পণ্য অল্প দিনের মধ্যে ডেলিভারি এবং শর্ত সাপেক্ষে ৮০ শতাংশ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও প্রতারণা করে এসপিসি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, মানি লন্ডারিং ও প্রতারণার অভিযোগ মামলা হয়। এই মামলাগুলোর ছায়া তদন্ত করছিল সিআইডি।
তিনি আরো বলেন, গ্রাহকের ২৬৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে ২০২০ সালে গ্রেফতার হয়েছিলেন আল আমিন। পরে অবশ্য জামিনে বের হন। তিনি ডেসটিনি ২০০০ এর উচ্চ পর্যায়ের টিম লিডার ও প্রশিক্ষক ছিলেন। ডেসটিনি ও যুবকের আদলেই গড়ে তুলেছেন এসপিসি ওয়ার্ল্ড। তাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ তদন্তের পর কলাবাগান থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে একটিসহ চারটি মামলা করা হয়েছে। এছাড়া গ্রাহকের ১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।



 

Show all comments
  • Tanvir ৫ অক্টোবর, ২০২১, ৭:১৬ এএম says : 0
    Oi alamin k samn pala jobi kora dawa oucit,, student dar taka mara o koto din bacha thakba,
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ