Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের বিপক্ষে জয়ের সমান এক ড্র বাংলাদেশের

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০২১, ৬:৫৮ পিএম | আপডেট : ৯:০৯ পিএম, ৪ অক্টোবর, ২০২১

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শুরুতে পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে জয়ের সমান এক ড্র পেয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার মালদ্বীপের মালে জাতীয় স্টেডিয়ামে লিগ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে লাল-সবুজরা ১-১ ব্যবধানে রুখে দিয়েছে ভারতীয়দের। ভারতের পক্ষে অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী ও বাংলাদেশের তরুণ ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাত একটি করে গোল করেন।

দুই পরিবর্তন নিয়ে কাল ভারতের বিপক্ষে মাঠে নেমে প্রত্যাশিত ফুটবলই খেলেছে বাংলাদেশ দল। ফরোয়ার্ড জুয়েল রানার পরিবর্তে সাদ উদ্দিন ও সুমন রেজার জায়গায় ফরোয়ার্ড মতিন মিয়াকে সেরা একাদশে জায়গা দেন বাংলাদেশ কোচ অস্কার ব্রুজোন। কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন এ দুই ফুটবলার।

ম্যাচের শুরু থেকে ভারত তথা ছেত্রীকে আটকে রেখেই খেলতে থাকেন জামাল ভূঁইয়ারা। তারা প্রতিপক্ষের ফরোয়ার্ডদের কড়া মার্কিংয়ে রেখেই নিজেদের রক্ষণদূর্গ সামলে ভারতীয় সীমানায় একের পর আক্রমণ চালান। ২৫ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি কিকের বলে সাদ উদ্দিন হেড নিলে তা ভারতের বক্সের মধ্যে পড়ে। তপু বর্মণ ও তারিক কাজী লাফিয়ে উঠেও বল লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেননি। ভারতও পাল্টা আক্রমণ করে। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ যখন উপভোগ্য হয়ে ওঠে ঠিক তখনি হঠাৎ পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ মানেই যেন সুনীল ছেত্রীর গোলউৎসবের উপলক্ষ্য। এ ম্যাচেও ঘটেছে তাই। ২৬ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে গিয়ে উদান্তা সিং বল বাড়িয়ে দেন ভারতীয় অধিনায়ককে। বাংলাদেশ ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাত ঠিকমতো মার্কিং করতে পারেননি সুনীল ছেত্রীকে। সুযোগটি পুরোপুরি কাজে লাগান ছেত্রী। উদান্তা সিংয়ের বাড়ানো বলে দারুণ শটে গোল করে ভারতকে এগিয়ে নেন তিনি (১-০)। গোল হজম করার পর যেন আরো আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। তৈরী করে একের পর এক সুযোগ। কিন্তু ভারতীয় রক্ষণভাগ সজাগ থাকায় গোল পাননি মতিন মিয়ারা।

ম্যাচের ২৮ মিনিটে মতিনের বাড়ানো বলে বিপলু শট নিলে তা বাইরে চলে যায়। দুই মিনিট পর সমতায় ফেরার আরেকটি সুযোগ নষ্ট করেন তপু বর্মণ। এ সময় জামালের নেয়া ফ্রি কিকের বলে তপু হেড নিতে পারেননি। ইয়াসিন হালকাভাবে মাথা ছোঁয়ালেও বল ছিলনা লক্ষ্যে। ৩৮ মিনিটে ম্যাচের অন্যতম সেরা আক্রমণ ছিল লাল-সবুজদের। মতিন মিয়া ও সাদ উদ্দিনের সমন্বয়ে বাড়ানো বলে বিপলুর অনটার্গেট শট ভারতের গোলরক্ষক গুরপ্রিত সিং দুর্দান্তভাবে রক্ষা করেন। তবু হাল ছাড়েনি অস্কার ব্রুজোনের শিষ্যরা। পুরো ম্যাচেই ভারতের বিপক্ষে সমান তালে লড়ে গেছেন জামাল ভূঁইয়ারা। পিছিয়ে থেকে বিরতিতে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণের ধারা অব্যাহত রাখে বাংলাদেশ। কিন্তু এরই মাঝে ঘটে যায় অনাকাঙ্ক্ষিত এক ঘটনা। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে ভারতের ফরোয়ার্ড লিস্তন কোলাকোকে আটকে রাখতে গিয়ে অবৈধভাবে ফেলে দেন লাল-সবুজের ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ। সউদী আরবের রেফারি আলশামরানি লাল কার্ড দেখিয়ে বিশ্বনাথকে মাঠ থকে বের করে দিলে দশজনের দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ। তাকে কি? দশজনেই যেন পুরো বাংলাদেশ। একজন কম নিয়ে খেলেও দমে যাননি জামালরা। ঠিকই গোল করে ম্যাচে সমতা আনেন তারা। বিশ্বনাথ লাল কার্ড পাওয়ার পর জীবন-মরণ লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয় পুরো বাংলাদেশ দল। তার সুফলও পাওয়া যায় ম্যাচের ৭৪ মিনিটে। এসময় পাল্টা আক্রমণ থেকে কর্ণার আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। অধিনায়ক জামালের করা কর্ণারে তারিক কাজী হেড নিলে শূন্যে ভাসে বল। দৌঁড়ে এসে সেই বল মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন ইয়াসিন আরাফাত (১-১)। তার হেডে বোকা বনে যান ভারতের গোলরক্ষক গুরপ্রিত সিং। দু’হাত দু’দিকে বাড়িয়ে উল্লাসে মেতে উঠেন ইয়াসিন। উৎসবের ঢেউ উঠে গ্যালারিতে। বাকি সময় একাধিক সুযোগ পেলেও আর গোলের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। ফলে ১-১ ব্যবধানে জয়ের সমান ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা।

বাংলাদেশ দল : আনিসুর রহমান জিকো, ইয়াসিন আরাফাত, তারিক রহমান কাজী, তপু বর্মণ, বিশ্বনাথ ঘোষ, জামাল ভূইয়া, মোহাম্মদ ইব্রাহিম (সুফিল), বিপলু আহমেদ (সোহেল রানা), রাকিব হোসেন (রহমত), মতিন মিয়া (সুমন রেজা) ও সাদ উদ্দিন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ