পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থীসহ উচ্চপদস্থ মার্কিন সিনেটরদের একটি দল আফগান তালিবানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য মার্কিন সিনেটে একটি বিল পেশ করেছে যা পাকিস্তান পর্যন্তও বর্ধিত হতে পারে। ‘আফগানিস্তান কাউন্টার টেরোরিজম, ওভারসাইট, অ্যান্ড একাউন্টেবলিটি অ্যাক্ট’ শীর্ষক এই বিল নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের মন্ত্রীপরিষদের একজন সিনিয়র সদস্য।
যে ২২ জন সিনেটর এই বিল উত্থাপন করেছেন তারা সবাই বিরোধী রিপোবলিকান দলের। এতে তালেবান, আফগানিস্তানে তালেবানদের সহায়তাকারী এবং অন্যান্য অংশের বিরুদ্ধে অবরোধ বা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে তালেবানদের সমর্থন দিয়েছে অথবা দিচ্ছে এমন যেকোনো বিদেশি সরকারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে রিভিউ করতে হবে এবং তাদেরকে দেয়া সহায়তা স্থগিত করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর নিষেধাজ্ঞাও দেয়া যেতে পারে। বিলের এক অংশে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তালেবানদেরকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এই দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের ইডাহো রাজ্যের প্রতিনিধি এবং ইউএস সিনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটির পদস্থ সদস্য সিনেটর জিম রিস বিলটি উত্থাপন করেন। তুরস্কের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ক্ষেত্রে সহযোগী হিসেবে তিনি কাজ করেছিলেন। পাশাপাশি ইসরাইলি পণ্য বর্জন বা বর্জনে অংশগ্রহণকে উৎসাহী করাকে একটি ফেডারেল ক্রাইম হিসেবে গণ্য করা এবং পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতি স্থাপনের পক্ষে কাজ করেছেন।
নতুন এই বিলটিতে সায় দিয়েছেন অন্য ২১ জন সিনেটর। এর মধ্যে আছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বদ্বিতাকারী সিনেটর মিট রমনি। আছেন, ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাইমারিতে মনোনয়নে লড়াই করে হেরে যাওয়া মার্কো রুবিও। যদিও এই বিলের সমর্থনকারীরা প্রাথমিকভাবে বলেছেন, বাইডেন প্রশাসন তড়িঘড়ি করে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছেন। এটা ছিল বিপর্যয়কর। তবে এর একটি অংশে তালেবানদের এবং তাদেরকে যারা সমর্থন দিয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে।
বিলটি যেসব সিনেটর সমর্থন করেছেন তাদের কারো কারো ওয়েবসাইটে অফিসিয়াল বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এই বিলটি দাবি করছে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নাগরিক, আইনগত স্থায়ী রেসিডেন্টস এবং আফগান স্পেশাল ইমিগ্রান্ট ভিসাধারীদের (এসআইভি) উদ্ধারের বিষয়টিতে দৃষ্টি দিতে, যারা আফগানিস্তানে আটকা পড়ে আছেন। এসআইভিধারী এবং শরণার্থীদের বিষয়ে মেকানিজমে দৃষ্টি দিতে হবে। সন্ত্রাসবিরোধী কৌশল অবলম্বন করতে হবে। তালেবানদের হাতে থাকা মার্কিন সরঞ্জাম উদ্ধার করতে হবে। তালেবান ও আফগানিস্তানে অন্যদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, মাদক পাচার, মানবাধিকার লঙ্ঘন করার কারণে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। এতে আরো বলা হয়েছে, বিদেশি সরকারগুলো যারা তালেবানদের সমর্থন দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। তালেবানদের যারা সমর্থন করে তাদের বিরুদ্ধে বৈদেশিক সহায়তার বিষয়টি রিভিউ করতে হবে। আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা নয়, এমন বিদেশি সহায়তার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দিতে হবে। আলাদা আরেকটি সেকশনে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের ডিরেক্টরের সঙ্গে পরামর্শক্রমে পররাষ্ট্রমনত্রী কংগ্রেসনাল কমিটিতে একটি যথার্থ রিপোর্ট জমা দেবেন। তাতে উল্লেখ থাকতে হবে তালেবানদেরকে কারা সমর্থন দিচ্ছে।
বিলে পাকিস্তানের প্রসঙ্গও তুলে ধরে বলা হয়েছে, প্রথম রিপোর্টে থাকতে হবে (১) ২০০১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সরকার সহ কোনো রাষ্ট্র বা বিরাষ্ট্রীয় সমর্থনের বিষয়। এতে উল্লেখ থাকতে হবে তালেবানদের সুবিধা দিয়েছে কারা, আর্থিক সহায়তা দিয়েছে কারা, গোয়েন্দা সমর্থন দিয়েছে কারা, লজিস্টিক এবং মেডিকেল সমর্থন দিয়েছে কারা, প্রশিক্ষণ- সরঞ্জাম দিয়েছে কারা। কৌশলগত, অপারেশনাল অথবা কৌশলগত নির্দেশনা দিয়েছে কারা। (২) ২০২১ সালে তালেবানরা আফগানিস্তানের সরকারকে উৎখাত করে। এই অপরাধের জন্য পাকিস্তান সরকার সহ কোনো রাষ্ট্র বা বিরাষ্ট্রীয় শক্তির সমর্থনের বিষয়ে মূল্যায়ন করতে হবে। (৩) পাঞ্জশির উপত্যকায় এবং আফগানিস্তানের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এ বছর সেপ্টেম্বরে যে আক্রমণ চালানো হয়েছে তাতে পাকিস্তান সরকারসহ কোনো রাষ্ট্র, বিরাষ্ট্রীয় শক্তির সমর্থনের বিষয়টি মূল্যায়ন করতে হবে।
এদিকে, বিলটি নিয়ে পাকিস্তানের মানবাধিকার মন্ত্রী শিরীন মাজারি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে’ যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হওয়ার জন্য ‘চরম মূল্য দিতে হবে’ কারণ মার্কিন সিনেটে বিশৃঙ্খলার পর তালেবানদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে একটি বিল পেশ করা হয়েছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতার জন্য পাকিস্তানকেও দায়ী করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার তার অফিসিয়াল হ্যান্ডেলে ধারাবাহিক টুইটে মাজারি বলেন, ‘তাই আবার পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’-এ যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে ভারী মূল্য দিতে হবে। আফগানিস্তান থেকে বিশৃঙ্খলভাবে সেনা প্রত্যাহারের পরে মার্কিন সিনেটে একটি বিল আনা হয়েছে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতায় এএনএ’র (আফগান ন্যাশনাল আর্মি) পতন হয়েছে এবং আশরাফ গনির সংযুক্ত আরব আমিরাতে পালিয়ে গিয়েছেন।’ মাজারি বলেন, ‘আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের ব্যর্থতার জন্য পাকিস্তানকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। ২০ বছরের উপস্থিতিতেও তারা কোনো স্থিতিশীল শাসন কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এটা কখনই আমাদের যুদ্ধ ছিল না; আমরা আমাদের মার্কিন মিত্র কর্তৃক ৪৫০টিরও বেশি ড্রোন হামলা, ৮০ হাজার হতাহত ও একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতি সহ্য করেছি।’
তিনি প্রশ্ন রাখেন, আপনাদের ২ ট্রিলিয়ন ডলার কোথায় হারিয়ে গেল? পাকিস্তানকে কে বলেছিল তেহরিকে তালেবান আফগানিস্তানের নেতৃত্বতে মুক্ত করে দিতে? তেহরিকে তালেবান আফগানিস্তানের সঙ্গে কাতারের রাজধানী দোহা’য় কে স্বাক্ষর করেছিল? কে তাদের ওয়াশিংটন ডিসিতে ডেকে নিয়েছিল? মন্ত্রী আরও বলেন, যথেষ্ট হয়েছে। আফগানিস্তানে উপস্থিত থাকা শক্তিগুলোর জন্য পাকিস্তানকে টার্গেট করার পরিবর্তে নিজেদের ব্যর্থতার দিকে তাকানোর সময় এসেছে, যারা ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর যুদ্ধকে সমর্থন করার জন্য একটি বিশাল মূল্য দিয়েছে। সূত্র : ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।