পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় শক্তির আরেকটি মাত্রা হল সফ্ট পাওয়ার। এখানে যুক্তরাষ্ট্র মারাত্মকভাবে ব্যর্থ হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশটির সুনামে আঘাত করার আগেই। এমনকি, প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের শাসনামলে রবার্ট জার্ভিস এবং স্যামুয়েল হান্টিংটনের মতো নেতৃস্থানীয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা মন্তব্য করেছিলেন যে, বিশ্বের অধিকাংশ দেশই যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের ‘প্রধান সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ এবং ‘তাদের সমাজের জন্য একক বৃহত্তম বহিরাগত হুমকি’ বলে মনে করে। বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন আন্তর্জাতিক জরিপে দেখা গেছে যে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব-শান্তির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি বলে বিবেচিত হয়েছে।
মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের শক্তির এই দিকগুলি পৃথকভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। ইউরোপ ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মেনে নেয় শুধুমাত্র নিউ ইয়র্ক থেকে পরিচালিত ‘বৈশ্বজনীন অর্থ ব্যবস্থা’ থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার ভয়ে। বিশ্ব অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নিতে অস্বীকার করে কিউবার ওপর আমেরিকার অত্যাচারকে মেনে নেয়। তবে, তারা ভার্চুয়াল ভোটের মাধ্যমে এর নিন্দা জানায় (জুনে জাতিসংঘে ১ শ’ ৮৪ বনাম ২ ভোট)। অন্যদের মানতে করা নিষেধাজ্ঞা জারি করার ক্ষমতা হল, শক্তির আরেকটি দিক, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। মার্কিন শক্তির গতিপথের দিকে তাকালে এর মূল বৈশিষ্ট্যগুলি পরিচিত মনে হবে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র অন্Íত এ বছরও সহিংসতা অবলম্বন না করে খুব কমই থেকেছে। ১৯৪০ সালে মুদ্রিত ‘দ্য ডিপ্লোম্যাটিক হিস্ট্রি অফ দ্য আমেরিকান পিপলস’-এ থমাস বেইলি জানান, ‘ব্রিটিশ নোঙর সরানোর সাথে সাথেই, মুক্ত ঔপনিবেশিকরা গাছ ও ইন্ডিয়ানদের কর্তন এবং তাদের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষার সীমানা কর্তনের কাজে মনোনিবেশ করেছিল।’
পক্ষান্তরে, জেনারেল এবং প্রেসিডেন্ট ইউলিসিস এস গ্রান্টের ভাষায়, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইতিহাসের সবচেয়ে নীতিহীন যুদ্ধে মেক্সিকোর অর্ধেক দখল করে নিয়েছে।’ যুক্তরাষ্ট্র পেশীর জোরে এবং ছলচাতুরি করে হাওয়াই এর অধিবাসীদের কাছ থেকে তাদের প্রাকৃতিক সীমানা ছিনতাই করেছে। একটি বড় গণহত্যার মধ্য দিয়ে ফিলিপাইনে প্রথম বিজয়ের সাথে মার্কিন শক্তি এশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল। পরবর্তী বছরগুলো ধারাবাহিক মার্কিন হস্তক্ষেপের সাক্ষী, যা প্রায়শই চরম বর্বরতার সাথে (যেমনটি প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসনের অধীনে হাইতিতে ঘটেছিল) নিয়মিতভাবে সেই জায়গাগুলিতে একটি তিক্ত উদাহরণ রেখে গেছে।
১৯৪৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ‘মনরো মতবাদ’ (যা ইউরোপীয় শক্তিকে লাতিন আমেরিকায় হস্তক্ষেপ না করার জন্য সতর্ক করেছিল) গ্রহন করে মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপে আরও এক ধাপ এগিয়ে যায়। ৬০ বছর আগে যখন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ভিয়েতনামের উপর আক্রমণ তীব্রভাবে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, যা প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান শুরু করেছিলেন এবং তারপর প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার সেটিকে দীর্ঘায়িত করেছিলেন (যখন তিনি ইরান ও গুয়াতেমালার সংসদীয় শাসনব্যবস্থাকে নিষ্ঠুর স্বৈরশাসনে পরিবর্তিত করার জন্য সময় নিচ্ছিলেন) ।
কেনেডি গোপনে কিউবার বিরুদ্ধে তার সন্ত্রাসী যুদ্ধের আদেশ দিয়েছিলেন একটি বিদ্রোহের দ্বারা, যা ১৯৬২ সালের অক্টোবরে মার্কিন আক্রমণ পরিকল্পনার অংশ ছিল। সেটি ছিল ক্ষেপণাস্ত্র সঙ্কটের মাস, যা বিশ্বকে চূড়ান্ত বিপর্যয়ের কাছাকাছি নিয়ে এসেছিল, যখন রাশিয়ান দ্বীপটিকে রক্ষা করার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছিল। ১৯৬২ সালে কেনেডির সবচেয়ে ফলপ্রসূ সিদ্ধান্তগুলির মধ্যে একটি ছিল, ল্যাটিন আমেরিকায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রতিরক্ষা মিশনকে বাহ্যিকভাবে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় স্থানান্তরিত করা।
এটি গোটা আমেরিকা মহাদেশ জুড়ে দমন-পীড়নের এক ভয়াবহ প্রকোপে পরিণত হয়েছিল, যার সমাপ্তি ঘটেছিল মধ্য আমেরিকা জুড়ে রোনাল্ড রিগ্যানের সহিংস যুদ্ধে। নির্যাতিত দেশগুলিতে এবং ধ্বংসস্তূপ থেকে শরণার্থীদের অব্যাহত ফøাইটের মধ্য দিয়ে এখনও সেই ভয়বহতা অনুরণিত হয়। মার্কিন শক্তির তৃতীয় বৈশিষ্ট্য হল, এর নিচের কার্যকলাপকে ন্যায্যতা দেয়া। উল্লেখিত ভয়াবহ ঘটনাগুলি এর সবচেয়ে নিখুঁত নমুনামাত্র। বাম-উদার নীতি পরিকল্পনার চরম পর্যায়ে, প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের ল্যাটিন আমেরিকা বিশেষজ্ঞ রবার্ট পাস্তর ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, নিকারাগুয়ার হত্যাকারী সোমোজা গোষ্ঠীকে কেন মার্কিন প্রশাসন সমর্থন করেছিল। তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নিকারাগুয়া বা এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়নি, কিন্তু এও চায়নি যে, এর উন্নয়নগুলি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাক। এটি চেয়েছিল, নিকারাগুয়ানরা স্বাধীনভাবে কাজ করুক শুধুমাত্র সেসময় বাদে, যখন তা মার্কিন স্বার্থের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।’ (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।