Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাইডেন-ম্যাখোঁ ফোনালাপ, বরফ গলার ইঙ্গিত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৩:৫৭ পিএম | আপডেট : ৩:৫৮ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ত্রিদেশীয় নিরাপত্তা চুক্তি ‘অকাস’ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে ফ্রান্সের। এ বিষয়ে আলোচনা করতে আগামী মাসে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ।

স্থানীয় সময় বুধবার দুই দেশের প্রধানের মধ্যে এক ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই তারা এমন সিদ্ধান্ত নেন বলে এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়, আগামী অক্টোবরের শেষের দিকে দুই দেশের প্রেসিডেন্ট দেখা করতে রাজি হয়েছেন। ফোনালাপে বাইডেন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ফ্রান্স ও ইউরোপীয় দেশগুলোর তৎপরতার কৌশলগত গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যকার অভিন্ন লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নে শক্ত পদক্ষেপ নেয়া এবং দুই দেশের আস্থা নিশ্চিত করতে বাইডেন ও ম্যাখোঁ আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

বুধবার বাইডেনের সঙ্গে ম্যাখোঁর ফোনে আধঘণ্টা ধরে কথা হয়। অস্ট্রেলিয়াকে পরমাণু-চালিত সাবমেরিন দিচ্ছে অ্যামেরিকা ও যুক্তরাজ্য। এই সাবমেরিন চুক্তি হওয়ার কথা ছিল ফ্রান্সের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার। ফলে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার উপর ব্যাপক চটে যায় ফ্রান্স। তারপরই বাইডেন কথা বলতে চান ম্যাখোঁর সঙ্গে। ম্যাখোঁকে বাইডেন বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি করার আগে তাদের ফ্রান্সের সঙ্গে কথা বলে নেয়া উচিত ছিল। পরামর্শ করা উচিত ছিল। ভবিষ্যতে তা অবশ্যই করা হবে। অস্ট্রেলিয়াকে পরমাণু-চালিত সাবমেরিন দেয়া নিয়েই নিরাপত্তা চুক্তি হয়েছে। বাইডেনের এই` স্বীকারোক্তির ফলে বরফ কিছুটা গলে। আমেরিকায় আবার রাষ্ট্রদূতকে ফেরত পাঠাবে বলে জানিয়েছে ফ্রান্স।

গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন কিনতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে চুক্তি করে। এতে আগে ফ্রান্সের সঙ্গে করা ৪ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের একটি চুক্তি বাতিল করে ক্যানবেরা। এতে ক্ষুব্ধ হয় ফ্রান্স। এই চুক্তিকে বিশ্বাসভঙ্গের শামিল বলে মন্তব্য করে তারা। চুক্তির জের ধরে অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করে নেয় দেশটি। বাইডেন অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে চুক্তি নিয়ে কিছু বলেননি, তিনি প্রক্রিয়াগত ভুলের কথা স্বীকার করেছেন। আগে পরামর্শ করে নেয়া উচিত ছিল তা বলেছেন এবং ভবিষ্যতে পরামর্শ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আধঘণ্টা ধরে ম্যাখোঁর সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্রে এটাই ছিল বাইডেনের কৌশল। এর ফলে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি অটুট থাকছে।

গত সপ্তাহের নিরাপত্তা চুক্তির জেরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ফ্রান্সের সম্পর্ক বেশ তপ্ত হয়ে ওঠে। প্যারিস অভিযোগ করে, গোপনে ওয়াশিংটন ও লন্ডনের সঙ্গে চুক্তি করেছে ক্যানবেরা। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-ইভেস লে ড্রিয়ান এই চুক্তিকে বিশ্বাসঘাতকতা এবং পেছন থেকে ছুরিকাঘাত বলে মন্তব্য করেন। চুক্তির মাধ্যমে দেশ দুটি ফ্রান্সের সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ ও অপমানজনক আচরণ করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সবকিছুর মধ্যে কয়েক দিন আগে দুই দেশের মধ্যে পরিস্থিতি সামাল দিতে মাখোঁর সঙ্গে ফোনালাপের প্রস্তাব দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়েই বুধবারের ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয় দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নেয়ায় যে তিক্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তারও অবসান ঘটতে যাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে যৌথ বিবৃতিতে। আগামী সপ্তাহেই দেশটিতে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতেরা ফিরে যাবেন বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি ত্রিদেশীয় নিরাপত্তা চুক্তির ফলে মিত্র দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্কের যে টানাপোড়েন চলছে তা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে উন্নতি করা সম্ভব বলে মনে করছেন বাইডেন ও ম্যাখোঁ। সূত্র: আল-জাজিরা, ডয়চে ভেলে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র-ফ্রান্স
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ