Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রাশিয়া ও সিরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত দাবি

ওয়াশিংটনে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কেরি

প্রকাশের সময় : ৯ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : রাশিয়া এবং সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। এক সংবাদ সম্মেলনে জন কেরি অভিযোগ করেন, রাশিয়া এবং সিরিয়ার সরকার সারা বিশ্বের তোয়াক্কা না করে হাসপাতাল ও শিশুদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এসব কাজের জন্য যুদ্ধাপরাধের যথার্থ তদন্ত হওয়া দরকার। তিনি আরো দাবি করেন, হাসপাতালে হামলা চালানোটা ভুলবশত হয়নি। এটা তাদের বেসামরিক মানুষদের আতঙ্কিত করার একটা কৌশল। এটা বোঝানো যে, তাদের সামরিক লক্ষ্যবস্তুর পথে যারা আসবে, তাদেরই হত্যা করা হবে। গত শুক্রবার ওয়াশিংটনে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জ্যঁ-মার্ক আইরোতের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কেরি এই দাবি জানান। সিরিয়ার আলেপ্পো নগরীতে মানবিক সাহায্য পাঠানোর জন্য অস্ত্রবিরতির বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে যোগ দেয়ার আগে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে তিনি অস্ত্রবিরতির একটি প্রস্তাব পেশ করেন। তবে মস্কো বরাবরই বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাতের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে। রুশ কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা সিরিয়ায় কেবল জঙ্গি ঘাঁটিতেই হামলা চালিয়ে আসছে।
রুশ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী গেন্নাদি গাতিলভ বলেন, বেশ কয়েকটি বিষয়ে ফ্রান্সের ওই অস্ত্রবিরতি প্রস্তাব গ্রহণ করা সম্ভব নয়। তিনি একে রাজনৈতিক মানবিক সাহায্য বলেও উল্লেখ করেন। রাশিয়া এবং সিরিয়ার দাবি, তারা পূর্ব আলেপ্পোতে জাবাথ ফাতেহ আল-শাম (আল-কায়েদা ঘনিষ্ঠ সাবেক নুসরা ফ্রন্ট)-এর ওপর হামলা চালাচ্ছে। জাতিসংঘের সিরিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত স্তেফাল ডি মিস্তুরা আলেপ্পোর মানবিক সংকট কাটাতে জাবাথ ফাতেহ আল-শাম সদস্যদের তাদের অস্ত্রসহ আলেপ্পো থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। মিস্তুরা বলেন, আলেপ্পোতে মাত্র ৯০০ জাবাথ ফাতেহ আল-শাম সদস্য রয়েছে। যেখানে বিদ্রোহীদের সংখ্যা সাত হাজারেরও বেশি। কোণঠাসা হয়ে পড়লেও জাবাথ ফাতেহ আল-শাম আত্মসমর্পণ করবে না বলে জানিয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রয়োজনে তাদের নিরাপদে আলেপ্পোর বাইরে পর্যন্ত আমি পৌঁছে দেব। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ আলেপ্পোকে বাঁচানোর স্বার্থে এই আহ্বানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
আলেপ্পোর একাংশ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ অনুগত বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আসলেও পূর্ব আলেপ্পোতে প্রায় দুই লাখ ৭৫ হাজার মানুষ আটকা পড়ে আছে। ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে আলেপ্পো সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান হামলার শিকার হয়েছে। অস্ত্রবিরতি চুক্তি ভেঙে যাওয়ার পর সেখানে সহস্রাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আলেপ্পো। উল্লেখ্য, সিরিয়ান অবজারভেটরি তাদের নিজস্ব পর্যবেক্ষণ সূত্রে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে ৪ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। কিছুদিন আগে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স-এর খবরে আগে বলা হয়, ২০১১ সালের ১৮ মার্চ গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত তারা ৩ লাখ ১ হাজার ৭৮১ জনের প্রাণহানি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন। তবে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশি হবে বলে দাবি করেছেন তারা। সিরিয়ান অবজারভেটরি বলছে, ওই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা ৪ লাখ ৩০ হাজারের কাছাকাছি হবে। সিরিয়ার চলমান সংকট নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বিপরীতমুখী। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য তারা আসাদ সরকারের বিদ্রোহ ঘোষণাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সামরিক সহযোগিতা করছে। অভিযোগ রয়েছে, তারা মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে বিমান হামলার নামে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে। আর রাশিয়া বাশার আল-আসাদকেই ক্ষমতায় দেখতে চায়। তারা আসাদ সরকারের সমর্থনে আইএস ও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধকে মার্কিন-রুশ ছায়াযুদ্ধ বলেও মনে করছেন অনেকে। বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাশিয়া ও সিরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত দাবি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ