নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশেষ সংবাদদাতা : এই কি সেই ইমরুল কায়েস? ইনিংসের প্রথম বলে ক্রিস ওকসকে কভার দিয়ে বাউন্ডারি,৯১ বলে ১২১ রানের ইনিংসে ১১টি চারের পাশে ৬টি ছক্কায় প্রশ্নটা উঠেছিল ফতুল্লার অনুশীলন ম্যাচে! যে ছেলেটির ওয়ানডে ক্যারিয়ারে স্ট্রাইক রেট ৬৫.৭১Ñ সেই ছেলেটিই অনুশীলন ম্যাচে দ্বিগুন করেছে স্ট্রাইক রেট (১৩২.৯৬)! পেস বোলার উইলিকে তিন তিনটি বিশাল ছক্কা এতো সহজে মারল কিভাবে ইমরুল? সেটাও ছিল বিস্ময়ের। সৌম্য’র ওপেনিং পজিশনে নিজেকে ফিরিয়ে আনার মঞ্চটা তৈরি হয়েছে ওই ম্যাচেই। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ওপেনার তামীমকে সঙ্গ দেয়াটাকে বড় দায়িত্বের পর্যায়ে মনে করতো এক সময়ে ইমরুলÑ২০১০ সালে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে টূর্নামেন্টে ভারতের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটির দিনে ইনিংসের শুরুতে পার্টনার তামীমের ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ দর্শক ইমরুল। তামীম সেই ম্যাচে যখন ফিরেছেন ৬০ রানে,তখন ২৭ বলে ইমরুলের রান ১৬,তামীমের পাশে বড্ড বেমানানই মনে হয়েছে। অথচ, ওপেনিংয়ে তামীমের পার্টনার হিসেবে নিজেকে ফিরে পাবার ম্যাচে তামীমই সেখানে ইমরুলের ব্যাটিংয়ের দর্শক!
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩৭ রানে পারেননি টীম ম্যানেজমেন্টকে সন্তুস্ট করতে ইমরুল। গড়পড়তা ব্যাটিং করে কোচকে আশ্বস্ত করা যাবে না, সেই উপলদ্ধি থেকে ফতুল্লার অনুশীলন ম্যাচে নিজেকে নুতন রূপে ফিরিয়ে আনার চেস্টা করেছেন। ৯১ বলে ১২১ রানের সেই ইনিংসে কোচের পক্ষ থেকে ইয়েস কার্ড পেয়ে প্রত্যাবর্তন ওয়ানডে ম্যাচে অনুশীলন ম্যাচের ইমরুলই যেনো হাজির!
ইনিংসের তৃতীয় বলে ইংলিশ পেস বোলার ওকসকে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কায় প্রথম স্কোরিং শট,৬ষ্ঠ বলে থার্ডম্যান দিয়ে বাউন্ডারি! ৮ম ওভারে ইংলিশ পেস বোলার উইলিকে মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছক্কার শটে অচেনা ইমরুলকেই দেখেছে বিস্ময়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১০ সালে ব্রিস্টলে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে জয়ে রেখেছেন অবদান (৭৬), ২০১১ বিশ্বকাপে চট্টগ্রামে তার ৬০ রানের ইনিংসে অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইতোপূর্বের ৮ ম্যাচে ৩ ফিফটিতে প্রত্যাবর্তন ওপেনিংয়ে এমন প্রতিপক্ষকেই যেনো খুঁজছিলেন মেহেরপুরের এই ছেলেটি। ইংলিশ ডেব্যুটেন্ট পেস বোলার জ্যাক বলের নো বলে ফ্রি হিট পেয়েই লাগিয়েছেন কাজেÑ ঝুঁকিপূর্ন শট নিয়ে ঝুঁকিতে পড়তে হবে না,তা ধরে নিয়েই জ্যাক বলের শর্ট বলকে উইকেট কিপারের মাথার উপর দিয়ে মেরেছেন বাউন্ডারি! তাতেই ৫৫তম বলের মোকাবেলায় উদযাপন করেছেন ফিফটি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪র্থ ফিফটির ইনিংসকে সেঞ্চুরিতে পরিনত করেছেন। উইলির ওভার থ্রোতে বোনাস বাউন্ডারিতে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি উযাপন করেছেন তিনি ১০৫ বলে। যে প্রতীক্ষিত সেঞ্চুরিতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৬ বছর ৮ মাস, ম্যাচের হিসেবে কাঁটায় কাঁটায় ৫০টি ! তামীমের সঙ্গে ৪৬ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনিই। ৩য় উইকেট জুটিতে মাহামুদুল্লাহকে নিয়ে কাঁটায় কাঁটায় ফিফটি পার্টনাারশিপ! সাকিবের সঙ্গে ৫ম উইকেটে সেখানে পার্টনারশিপ ১১৮ রানের। ইনিংসের মাঝপথে বিগ শটে সাকিব খেলতে পারেন বলে পার্টনারকে সাপোর্ট দেয়াই ছিল ইমরুলের দায়িত্ব। নিজে সিঙ্গল, ডাবলসে মনোযোগী হয়ে সাকিবকে বিগ হিটে উদ্বুদ্ধ করেছেন ইমরুল কায়েস। এই পার্টনারশিপটাই ম্যাচে ফিরিয়েছে বাংলাদেশকে। ৯২ বলে ১১৮ রানের এই পার্টনারশিপই বাংলাদেশ দলকে রেখেছে ম্যাচে। যে পার্টনারশিপে সাকিবের ৭৯’র পাশে ইমরুলের অবদান ৩৫।
২০১০ সালে ক্রাইশ্চার্চে ইমরুলের সেঞ্চুরির ইনিংসে (১০১) বাংলাদেশ পেয়েছে সম্মানজনক স্কোর। তবে ব্রিস্টল এবং চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ উইনার ইমরুলের প্রত্যাবর্তন ওপেনিংয়ের রাতে এই বাঁ হাতির ব্যাটিং কৌতুহলী করে তুলেছে বিশ্বকে। জ্যাক বলের এক ওভারে পর পর দুই ডেলিভারীতে সাকিব (৫৫ বলে ৭৯) এবং মোসাদ্দেক (০), আদিল রশিদের পরের ওভারে মাশরাফি (১) ফিরে গেলে টেল এন্ডারদের উপর ভরসা রাখতে পারেননি। দায়িত্বটা নিযেছিলেন নিজেই। সেখানেই ভুলটা করেছেন এই বাঁ হাতি ওপেনার। ইংলিশ লেগ স্পিনার আদিল রশিদের বল ডেলিভারীর আগেই হাফপীচে কমিটেড শট নিতে বেরিয়ে এসেছিলেন, তাতেই স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে কাঁটা পড়ে মৃত্যু হয়েছে ইমরুল কায়েসের (১১৯ বলে ১১ চার ২ ছক্কায় ১১২ রান)। প্রথম ৫৯ ইনিংসে যে ছেলেটির স্ট্রাইক রেট ৬৫.৭১Ñ৬০তম ইনিংসে তার স্ট্র্াইক রেট সেখানে ৯৪.১১! এমন ইমরুলকেই তো চায় সবাই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।