Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ক্যাচ ড্রপে ম্লান ইমরুলের সেঞ্চুরি

প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:২৯ এএম, ৮ অক্টোবর, ২০১৬

ইংল্যান্ড : ৩০৯/৮ (৫০.০ ওভারে)

বাংলাদেশ : ২৮৮/১০ (৪৭.৫ ওভারে)
ফল : বাংলাদেশ ২১ রানে পরাজিত।
শামীম চৌধুরী : লক্ষ্যটা সহজ নয়, ৩১০ তাড়া করে জিততে হলে দেশের মাটিতে করতে হবে রেকর্ড। তবে এমন দূরূহ টার্গেটের সামনে দাঁড়িয়েও সব কিছু ঠিক ঠাক মতোই যাচ্ছিল এগিয়ে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে উপর্যুপরি ২ জয়কে হ্যাটট্রিক জয়ে রূপ দিতে ইনিংসের শুরু থেকে দায়িত্বটা নিয়েছিলেন ইমরুল কায়েস। ৫ম উইকেট জুটিতে ইমরুল কায়েস-সাকিবের ৯২ বলে ১১৮ রানের পার্টনারশিপে জয়ের আবহই ছিল শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে। এমন এক সম্ভাবনার ম্যাচে সøগের টার্গেটও বল প্রতি রানের চেয়ে ছিল কম। শেষ ৬০ বলে ৫৪ যখন টার্গেট, তখন হাতে ছয় ছয়টি উইকেট! এক সময়ে তা নেমে এসে দাঁড়িয়েছিল ৫১ বলে ৩৯ ! পুরো স্টেডিয়ামটি তখন যেনো ফিরে পেয়েছে সাড়ে ৫ বছর আগের চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামকে। রাতটা বুঝি সেরকমই আনন্দঘন হওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। কিন্তু এমন একটি সম্ভাবনার অপমৃত্যু ডেকে আনলেন ম্যাচে বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখানো সাকিব। ৪২ তম ওভারে জ্যাক বলের তৃতীয় বলে মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দিয়ে ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ফেরালেন সাকিব (৫৫ বলে ৭৯)। ওই আউটেই তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়ল বাংলাদেশ! মাত্র ১৭ রান যোগ করতে হারাতে হলো শেষ ৬ উইকেট, ম্লান হলো ওপেনিং ইমরুলের প্রত্যাবর্তন সেঞ্চুরির (১১২)। স্বপ্ন দেখানো ম্যাচে হেরে গেল বাংলাদেশ ২১ রানে।
ইংল্যান্ডের ইনিংসে অভিষিক্ত বেন ডাকেটের ফিফটি (৬০), বেন স্টোকসের সেঞ্চুরি (১০১) এবং ৪র্থ জুটিতে স্টোকস-বাটলারের ১৫৩ রানের পার্টনারশিপই কিন্তু দু’দলের ব্যবধান নির্নিত করেনি। প্রথমে ব্যাট করে ৩০৯/৮ স্কোরটাও বাংলাদেশ বোলারদের বোলিং দৈন্যতা করেনি প্রকাশ। বরং ইংল্যান্ডের বর্তমান দলটির চেয়ে ওয়ানডে অভিজ্ঞতায় এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ দল এদিন হতাশ করেছে ফিল্ডিংয়ে। স্টোকস, ডাকেটের তিন তিনটি সহজ ক্যাচ ড্রপ, ২টি ক্যাচ নিতে অপরাগতা প্রকাশের মাশুলই দিতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। মাহামুদুল্লাহ, মোশারফ রুবেলের ক্যাচ ড্রপে ফুলে ফেঁপে উঠে ৩শ’ ছাড়িয়ে গেছে ইংল্যান্ডের ইনিংস। ওখানেই ব্যাকফুটে নেমে এসেছে বাংলাদেশ দল।
ইনিংসের তৃতীয় বলে ইমরুল কায়েসের ছক্কায় ছন্দময় ব্যাটিংয়ে ৩০ ওভার পর্যন্ত রান তোলার চিত্রতে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ দল। কভারে তামীমের ক্যাচ দিয়ে ফিরে আসার (১৭) পর সেই জ্যাক বলকে রুম্মানের ছক্কার শটটি বাউন্ডারি রোপের উপর থেকে উইলির দ্বিতীয় প্রচেষ্ঠায় ছোঁ মেরে ক্যাচ নেয়ার অবিশ্বাস্য দৃশ্যে হতভম্ব মিরপুরের দর্শক। ইমরুলের সঙ্গে ফিফটির পার্টনারশিপে দারুন সঙ্গ দিতে দিতে সুইপ শটে অ্যাডিলেড জয়ের নায়ক মাহামুদুল্লাহ’র (২৫) মৃত্যুশোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডকে হারানোর আর এক নায়ক মুশফিকুর। সুইপ শটে বার বার ভুল করছেন, মৃত্যু হচ্ছে তার এই শটে। ফতুল্লার অনুশীলন ম্যাচে সেই প্রবনতা থেকে নিজেকে বের করে আনলেও মূল ম্যাচে চেনা ভুলের ফাঁদেই দিয়েছেন পা মুশফিকুর রহিম (১২)। ১৫৩/৪ স্কোর থেকে স্কোরটা শেষ পর্যন্ত কোথায় নিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ দল, সেটাই দেখতে চেয়েছিলেন মিরপুরের দর্শক। কিন্তু এমন এক পরিস্থিতি থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস পেয়েছে ইমরুল-সাকিব। তাদের ১১৮ রানের পার্টনারশিপে আস্কিং রান রেট কমেছে বাংলাদেশ দলের। স্বপ্ন দেখানো ওই পার্টনারশিপই ভেঙ্গেছে বাংলাদেশের স্বপ্ন!
সৌম্য থাকায় দলে ব্রাত্য যে ছেলেটি, সেই বাঁ হাতি টপ অর্ডার ইমরুল কায়েস সৌম্য’কে হটিয়ে ওপেনিংয়ে প্রত্যাবর্তনে ছন্দময় ইনিংস দিয়েছেন উপহার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১০ সালে ব্রিস্টল (৭৬ রান) এবং ২০১১ বিশ্বকাপে চট্টগ্রাম (৬০ রান) জয়ের নায়ক ইমরুল কায়েস ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির উদযাপনে বেছে নিয়েছেন প্রিয় প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ডকেই। ১০৫ বলে সেঞ্চুরিÑ১১৯ বলে ১০ চার ২ ছক্কায় সৌরভ ছড়ানো ১১২ রানের ইনিংসটি মøান করেছে টীমমেটরা স্লগে অপরিনামদর্শি ব্যাটিংয়ে। আফগানিস্তান লেগ স্পিনার রশিদ খানকে খেলে ইংল্যান্ড লেগ স্পিনার আদিল রশিদকে সহজে মোকাবেলার কৌশল শিখেছে বলে সিরিজপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছিলেন মাশরাফি। অথচ, সেই আদিল রশিদের লেগ স্পিনেই (৪/৪৯) কাবু বাংলাদেশ! প্রথম স্পেলে মার খাওয়া (৫-০-৩৪-২) দ্বিতীয় স্পেলে ছড়িয়েছেন ভয়ংকর রূপ (৪-০-১৫-২)। ২৫ বছর বয়সী পেস বোলার জ্যাক বল তামীমকে শিকারে অভিষেক উইকেটের আনন্দকে মহানন্দে রূপ দিয়েছেন অভিষেক ওয়ানডে ম্যাচে (৪/৫১)। সাকিব, মোসাদ্দেককে পর পর ২ বলে শিকার করা এই পেসারের দ্বিতীয় স্পেলটাই (৪.৫-০-২০-৩) বাংলাদেশের হাতের মুঠো থেকে ম্যাচ বের করে এনেছে। ৫ বছর আগে বিশ্বকাপে চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের ২২৫/১০ স্কোরের জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ দল ৯ম জুটির অবিশ্বাস্য ৫৮ রানে। অথচ, সেই শফিউল টেল এন্ডার শফিউল তো দূরের কথাÑঅন্য কোন টেল এন্ডারও দায়িত্ব নিতে পারেনি। সম্ভাবনার ম্যাচে ১৩ বল আগেই শেষ হয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস।



 

Show all comments
  • জহির ৮ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:৪৩ পিএম says : 0
    বাংলাদেশ দলের খেলোয়ারদেরকে আরো বেশি বেশি ক্যাচ অনুশীলন করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • নাজির আহমেদ ৮ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:৪৪ পিএম says : 0
    এত ক্যাচ মিস এটা খুবই দু:খজনক
    Total Reply(0) Reply
  • সাব্বির ৮ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:৪৫ পিএম says : 0
    আগামী ম্যাচ বাংলাদেশ জিতবে। ইনশা আল্লাহ
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্যাচ ড্রপে ম্লান ইমরুলের সেঞ্চুরি
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ