Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভেঙে যাচ্ছে তামীম-সৌম্য জুটি

প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শামীম চৌধুরী : গত বছরে এক দিবসীয় ক্রিকেটে ৯ ম্যাচে ১ সেঞ্চুরি, ৩ ফিফটিতে ৪৯৭ রান, গড় ৭১.০০! পাকিস্তানের বিপক্ষে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে নট আউট ১২৭ রানের ইনিংস কিংবা ০-১এ পিছিয়ে দ.আফ্রিকার বিপক্ষে ২-১ এ সিরিজ জয়ে অবদান রাখা ৮৮ এবং ৯০ রানের সেই ইনিংস দু’টিও যে এখনো আবছা হয়ে যায়নি। সেই সৌম্যকে এবার বড্ড অচেনা মনে হচ্ছে। টি-২০তে এ বছরে ১৬টি ইনিংসে সর্বসাকূল্যে রান তার ২৫৫ (গড় ১৫.৯৩), ৩ ওয়ানডে ইনিংসের সমষ্টি সেখানে মাত্র ৩১ (গড় ১০.৩৩)! কি হলো সাতক্ষীরার এই ছেলেটির? ব্যাটিং পরিচয়টা বাদ দিয়ে ফিল্ডিং পরিচয়টাই যে বড় হয়ে সুরক্ষা করেছে তাকে এ বছর! টি-২০ বিশ্বকাপে ইডেন গার্ডেনসে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেরা দু’টি ক্যাচে আর কতোদিন নিজেকে সুরক্ষা করবেন সৌম্য। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে ম্যাচে ০, ২০ এবং ১১ রানের তিনটি বাজে ইনিংসেই পেয়েছিলেন সতর্ক বার্তা। অবশিষ্ট ছিল ফতুল্লায় অনুশীলন ম্যাচে পরীক্ষা। মাত্র ৭ রানে আউট হয়ে সেই পরীক্ষায়ও করেছেন ফেল।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ৩৭ রানের ইনিংস খেলেও আশ্বস্ত করতে পারেননি ইমরুল কায়েস। গড়পড়তা ইনিংসে দলে ফেরা কঠিন, হাতুরুসিংহেকে সন্তুষ্ট করতে চ্যালেঞ্জটা তাই ওই অনুশীলন ম্যাচে নিয়েছিলেন ইমরুল কায়েস। ৯১ বলে ১১ চার ৬ ছক্কায় ১২১ রানের ওই ইনিংসে পেয়েছেন কোচের হাততালি। তাতেই নড়বড়ে হয়েছে সৌম্য’র অবস্থান। বিশ্বকাপ পরবর্তী পাকিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজ থেকে অপরিহার্য ওপেনার হিসেবে তামীমের পার্টনার টানা ১২টি ইনিংসে এই পজিশনে ছিলেন স্থির। তামীমের সঙ্গে চট্টগ্রামে দ.আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয়ী ম্যাচে ১৫৪ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপে নেতৃত্ব দিয়েছেন সৌম্য। ইনজুরিতে না পড়লে যে ছেলেটির বিকল্প ভাবেনি গত ২১ মাস টীম ম্যানেজমেন্টÑ১৯ ম্যাচ পর সেই সৌম্যকে হারাতে হচ্ছে জায়গা।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৫৯ ম্যাচের মধ্যে ৪৮টিতে ইমরুল করেছেন ওপেনিংÑসেই ওপেনিং পার্টনারকেই ১১ মাস পর ফিরে পেলেন তামীম। সৌম্য’র ইনজুরিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গত বছরের নভেম্বরে ওপেনিংয়ে সুযোগ পেয়ে প্রাপ্ত সুযোগের সদ্বব্যহার করেছিলেন ৭৬ এবং ৭৩ রানের দু’টি সময়োচিত ইনিংসে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্রিস্টল জয়ে ৭৬ এবং ২০১১ বিশ্বকাপে চট্টগ্রামে ৬০ রানের সেই ইনিংস দু’টির সুখস্মৃতিও ওপেনিংয়ে আনছে তাকে ফিরিয়ে। সীমাবদ্ধ শটে ইমরুল কায়েস এতোদিন খেলতেন এতোদিন ওয়ানডে। ওপেনিংয়ে থিতু থেকে ব্যাটিংয়ের দর্শনটাই ছিল তার। কোচের কথায় একাদশে ফিরতে সীমাদ্ধতা ছাড়িয়ে গেছেন।
ফতুল্লার অনুশীলন ম্যাচে প্রথম বলে ক্রিস ওকসকে কভার ড্রাইভে বাউন্ডারিতে ছন্দ পেয়ে খেলেছেন ছন্দময় ইনিংস। ইমরুলের স্বভাববিরোধী ওই ইনিংসটি দেখেননি অধিনায়ক মাশরাফি। তবে এমন ইনিংসে ওপেনিংয়ে প্রত্যাবর্তনের জোরালো দাবি যে তুলেছেন ইমরুল কায়েস। তাতে দ্বিমত নেই অধিনায়ক মাশরাফিরও। ওই ইনিংসের কথা শুনে আশ্বস্ত হয়েছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়কÑ‘ইমরুলের ইনিংস আমরা দেখিনি। তবে শুনেছি অসাধারণ ইনিংস খেলেছে সে। দলের জন্য এটা স্বস্তিদায়ক। প্রথম ম্যাচে ৩৭ করে বাদ পড়ার পরও ইমরুল মানসিক ও শারীরিক ভাবে প্রস্তুত ছিল এবং প্র্যাকটিস ম্যাচে পেশাদার ক্রিকেটারের মতোই সেঞ্চুরি করেছে। ওর জন্য শুধু নয়, দলের জন্যও ভালো।’
কামব্যাক হিরোর খ্যাতি আছে ইমরুলের। তিন বছর পর টেস্টে কামব্যাক করে ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে ১৩০ রানের ইনিংসের পর থেকেই কামব্যাক হিরো এই বাঁ হাতি। গত বছর খুলনায় তামীমের সঙ্গে ৩১২ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপের রেকর্ডে অবদান রাখা ইমরুলের ওপেনিংয়ে দারুণ প্রত্যাবর্তন তাই কামনা করছেন সবাই। তামীমের সঙ্গে দারুন বোঝাপড়ার অতীতটাই ইমরুলকে দিচ্ছে প্রেরণা।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ ইনিংসে তিনটি ফিফটি, যার মধ্যে ২০১০ সালে ব্রিস্টলে ৭৬ এবং ২০১১ সালে চট্টগ্রামে ৬০ রানের ইনিংস দু’টি ম্যাচ উইনিং ইনিংসের অতীত আছে ইমরুল কায়েসের। আছে লর্ডস টেস্টে ৪৩ও ৭৬ রানের ইনিংস। এই অতীতই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভাল খেলার প্রেরণা যোগাচ্ছে,ভাল কিছু করার টনিক পাচ্ছেন ইমরুল। ফতুল্লায় অনুশীলন ম্যাচে সেঞ্চুরির পর জানিয়েছিলেন তাÑ ‘ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ বিশ্বকাপ ম্যাচ বাদ দিলে অন্য ম্যাচগুলোতে ভালো খেলেছি। প্রত্যেক খেলোয়াড়ের এমন দুয়েকটা দল থাকে যাদের বিপক্ষে খুব ভালো খেলে। আমিও হয়ত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সব সময় ভালো খেলতে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।’
ইমরুলের প্রত্যাবর্তন ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্রিস্টল, চট্টগ্রাম এবং অ্যাডিলেড জয়ের নায়ক পেস বোলার রুবেল হোসেন নেই দলে! তবে আজ একাদশে থাকার ইয়েস কার্ড পেয়েছেন ব্রিস্টল এবং চট্টগ্রাম জয়ে অবদান রাখা পেস বোলার শফিউল আছেন একাদশে। সর্বশেষ ওয়ানডে ম্যাচের দলে পরিবর্তন শুধু একটাইÑ সৌম্য’র জায়গায় ইমরুল কায়েস।

চট্টগ্রামে ৬ স্তরের নিরাপত্তা
চট্টগ্রাম ব্যুরো : সফরকারী ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে, একটি টেস্ট ও দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে আগামী ১০ অক্টোবর চট্টগ্রাম আসছে। এ দলটি জহুর আহমদ চৌধুরী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় দলের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টেস্ট ম্যাচ এবং এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। ম্যাচ চলাকালীন সময়ে ক্রিকেটাররা ভিআইপি নিরাপত্তা পাবে ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, নিরাপত্তা পরিকল্পনায় ৬টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে খেলোয়াড়দের যাওয়া-আসার সময় সামনে-পিছনে পুলিশ ও র‌্যাবের টহল গাড়ি দিয়ে এসকর্ট দেয়া, বিমানবন্দর ডিউটি, রুট ডিউটি, হোটেলে ডিউটি, জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামকেন্দ্রিক ডিউটি এবং এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকেন্দ্রিক ডিউটি।
সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি কমিশনার বলেন, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে সোয়াট টিম, বোম্ব ডিসপোজাল টিম, কুইক রেসপন্স টিম, স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, ডিবি, র‌্যাব, ফায়ার সার্ভিস, সাদা পোশাকে পুলিশ ফোর্স এবং সিআইডি ফরেনসিক টিম। তবে সোয়াট টিমকে মাঠে মোতায়েন করা হবে না জানিয়ে সিএমপি কমিশনার বলেন, সোয়াট টিম দামপাড়া পুলিশ লাইনে স্ট্যান্ডবাই থাকবে। তাদের যখন প্রয়োজন হবে তখন মাঠে নেয়া হবে।
সিএমপি কমিশনার আরও বলেন, বাংলাদেশ এবং ইংল্যান্ড দলের খেলোয়াড়দের ভিআইপি মর্যাদায় নিরাপত্তা দেয়া হবে। নিরাপত্তার ব্যাপারে আমরা ইংল্যান্ডকে আশ্বস্ত করতে পেরেছি বলেই তারা এইদেশে আসতে সম্মত হয়েছে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা খেলার সময় সামগ্রিক নিরাপত্তার দায়িত্ব ৬টি সেক্টরে অথবা আপনারা যেভাবে বলেন ছয়টি স্তরে ভাগ করেছি। জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ১৬টি প্রবেশপথের মধ্যে ৮টি দর্শকদের প্রবেশের জন্য খুলে দেয়া হবে বলে জানান সিএমপি কমিশনার। এতে চাপ সামলানো সম্ভব না হলে প্রথম ধাপে চারটি এবং পরবর্তী ধাপে আরও চারটিসহ ১৬টি প্রবেশ পথই খুলে দেয়া হবে। দেশের ভাবমূর্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দর্শক ও নগরবাসীর সহযোগিতা চেয়েছেন সিএমপি কমিশনার। সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মাসুদ-উল-হাসান উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • Imam Hossain ৭ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০৯ পিএম says : 0
    সৌম্য ভালো করছে না, তাকে ঘরোয়া ক্রিকেটে রাখা উচিৎ। ভালো করলে আবার ফিরে আসবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Riduan Shamrat ৭ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:১০ পিএম says : 0
    সৌম্যকে বাদ দেওয়া উচিত।।।।।। সৌম্যর বিশ্রাম প্রয়োজন । ।।।। ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভেঙে যাচ্ছে তামীম-সৌম্য জুটি
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ