Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাব চায় সরকার

আমলারা দিচ্ছেন না নিজেদের অর্থ-সম্পদের তথ্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ওপেন সিক্রেট। সে কারণেই এমপি ও মন্ত্রীদের সম্পদের হিসাব দেয়ার জন্য বলা হয়। সম্প্রতি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, মন্ত্রীদের সম্পদের হিসাব দেয়া উচিত। আর সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দেওয়া চাকরির আচরণ বিধিতেই রয়েছে। আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী সরকারি চাকরিজীবীদের প্রতি পাঁচ বছর পর পর ডিসেম্বরে বাধ্যতামূলকভাবে সম্পদের হিসাব দেওয়ার বিধান রয়েছে।
তবে এ বিধান অতীতে তেমন মানা হয়নি। সেজন্য এবার কঠোর হয়েছে সরকার। সম্পদের হিসাবের বিধান মানাতে দেওয়া হয়েছে চিঠি। হিসাব দেওয়ার পর তা করা হবে বিশ্লেষণ। অসঙ্গতি থাকলে দিতে হবে ব্যাখ্যা। কিন্তু কয়েক মাস আগে চিঠি দেয়া হলেও কেউ এখনো নিজের সম্পদের হিসাব দেননি। সরকারি কর্মকর্তাদের কারো মধ্যেই নিজেদের সম্পদের হিসাব দেয়ার আগ্রহ নেই।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তার নির্দেশনার আলোকে সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অন্য সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব ও সচিবদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯’-এর বিধি ১১, ১২ ও ১৩- তে সরকারি কর্মচারীদের স্থাবর সম্পত্তি অর্জন, বিক্রয় ও সম্পদ বিবরণী দাখিলের বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সুশাসন নিশ্চিতে উল্লেখিত বিধিসমূহ কার্যকরভাবে কর্মকর্তাদের অনুসরণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন।

এতে বলা হয়, এমতাবস্থায় ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’-এর আওতাভুক্তদের তাদের নিয়ন্ত্রণকারী প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়/দফতর/অধীনস্থ সংস্থায় কর্মরত সব সরকারি কর্মকর্তার সম্পদবিবরণী দাখিল, এ সম্পদবিবরণীর ডাটাবেজ তৈরি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে স্থাবর সম্পত্তি অর্জন ও বিক্রয়ের অনুমতি গ্রহণের বিষয়ে ‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯’-এর ১১, ১২ এবং ১৩ বিধি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে প্রতিপালনের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জানানোর নির্দেশনা দেওয়া হলো।
এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (শৃঙ্খলা ও তদন্ত) এএফএম হায়াতুল্লাহ বলেন, বিধিমালা অনুযায়ী পাঁচ বছর পর পর সম্পদের হ্রাসবৃদ্ধির বিবরণী নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হয়। অনেকেই এ চর্চা ঠিকমতো করেন না বলে চিঠির মাধ্যমে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯’-এর ‘সম্পত্তির ঘোষণা’ উপ-শিরোনামের ১৩ বিধিতে বলা হয়েছে, ‘প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীকে চাকরিতে প্রবেশের সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তার বা তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন বা দখলে থাকা শেয়ার, সার্টিফিকেট, সিকিউরিটি, বিমা পলিসি এবং মোট পঞ্চাশ হাজার টাকা বা ততোধিক মূল্যের অলঙ্কারাদিসহ সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কে সরকারের নিকট ঘোষণা দিতে হবে। উক্ত ঘোষণায় নিম্নোক্ত বিষয়াদির উল্লেখ থাকবে- ১. যে জেলায় সম্পত্তি অবস্থিত উক্ত জেলার নাম, ২. পঞ্চাশ হাজার টাকার বেশি দামের প্রত্যেক প্রকারের অলঙ্কার পৃথকভাবে প্রদর্শন করতে হবে এবং ৩. সরকারের সাধারণ বা বিশেষ আদেশের মাধ্যমে আরও যেসব তথ্য চাওয়া হয়।’
এতে আরও বলা হয়, ‘প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীকে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর ডিসেম্বর মাসে উপবিধি-(১) এর অধীনে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, প্রদত্ত ঘোষণায় অথবা বিগত পাঁচ বৎসরের হিসাব বিবরণীতে প্রদর্শিত সম্পত্তির হ্রাস-বৃদ্ধি হিসাব বিবরণী যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের নিকট দাখিল করতে হবে।’

এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চিঠির পর গত ২৮ জুলাই নিজেদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার নির্দেশ দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এছাড়া আরও কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, কারো সম্পদের হিসাবে অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে তাকে প্রশ্ন করা হবে, ব্যাখ্যাও দিতে হবে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য সম্পদের এ হিসাব চাওয়া হয়েছে। হিসাবে অসঙ্গতি থাকলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিভাগ সেটি দেখবে।



 

Show all comments
  • MD Hafizul Islam ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩১ এএম says : 0
    একেবার ৬২ সাল থেকে শুরু করতে হবে এবং সামগ্রিক তথ্য প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে মোড়ে টাঙিয়ে দিতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Abdur Rahman ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩১ এএম says : 0
    আমলারা জানে না তাদের কত টাকা আছে। তার মধ্যে কত টাকা বৈধ আর কত টাকা অবৈধ । বাংলার মানুষ জানে আমলাদের টাকার হিসাব ?????
    Total Reply(0) Reply
  • একটু ওন্য রকম ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩১ এএম says : 0
    কথা যদি সত্যি হয় তাহলে আমি ছাপোট করি।
    Total Reply(0) Reply
  • Roman Roman ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩১ এএম says : 0
    আমলারা অরজিনাল দুর্নীতিবাজ।
    Total Reply(0) Reply
  • মুহাম্মদ শিহাব উদ্দীন ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩১ এএম says : 0
    যদি হয় ভালো আর না হলে আল্লাহর গজব
    Total Reply(0) Reply
  • Shahin Reza ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩২ এএম says : 0
    ঠিক,একবছর পরে দেখতে হবে কতগুন হলো,তাহলে ঘুষের একটা রেন্জ পাওয়া যাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Moniroz Zaman ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩৩ এএম says : 0
    সঠিকভাবে হলে ভালো। না হয় বিষয়টা হাস্যকর হাস্যকর
    Total Reply(0) Reply
  • Atikur Rahman ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩৩ এএম says : 0
    শুধু চাকুরীজীবির হিসাব চাইলে হবেনা, পাশাপাশি স্ত্রী-সন্তান মা, বাবা, শ্বশুর শাশুড়ি সকলের হিসাব চাওয়া উচিৎ
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Belal Hossain ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩৩ এএম says : 0
    এটা যদি সত্যি সত্যি হয় তাহলে অসংখ্য ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে
    Total Reply(0) Reply
  • A K AZAD ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৪:৪৭ এএম says : 0
    It’s good decision. Everybody knows 99 percent government employees receiving bribes it means that almost all of them are criminals. The problem is if all of them protest against government then government will be in trouble. Those criminals belong huge money and wealth. My suggestions, please stop them not to receive bribe money and execute exemplary punishment and then see how is going.......please execute punishment against them.
    Total Reply(0) Reply
  • Emrul hasan Misor ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৪:৪৮ এএম says : 0
    It’s good decision. Everybody knows 99 percent government employees receiving bribes it means that almost all of them are criminals. The problem is if all of them protest against government then government will be in trouble. Those criminals belong huge money and wealth. My suggestions, please stop them not to receive bribe money and execute exemplary punishment and then see how is going.......please execute punishment against them.
    Total Reply(0) Reply
  • Md Rubel Miah. ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৩:১৪ পিএম says : 0
    যদি বাংলাদেশ সরকার এই পদক্ষেপটি সটিকভাবে আমলে নেয়,এবং তা করতে পারে,তাহলে দেশে ঘুষ এবং দুরনীতি কমে যাবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাকরিজীবী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ