পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সহজ শর্তে গৃহ নির্মাণ ঋণ নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দেশে ফেরার পর তার অনুমোদনসহ ‘সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা, ২০১৮’চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।
গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অর্থ সচিবের সভাপতিত্বে ‘সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা, ২০১৮’এর খসড়া পর্যালোচনার জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে অর্থ সচিব এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, অনেক দিন ধরে সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহ নির্মাণ ঋণ নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। এরই মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। তারা একটি নীতিমালা দাঁড় করিয়েছে। সেটাই বৈঠকে পর্যালোচনা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকরিজীবীরা নীতিমালা অনুযায়ী রাষ্ট্রায়ত্ব চার ব্যাংক এবং বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন (বিএইচবিএফসি) থেকে গৃহ নির্মাণের জন্য ঋণ নিতে পারবেন। এটা অর্থমন্ত্রীর মতামত নেওয়ার জন্য পাঠানো হবে। তার কোনো সুপারিশ থাকলে তা অন্তর্ভূক্ত করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাঠানো হবে। এরপর বাস্তবায়ন পর্যায়ে কাজ শুরু হবে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ১০ শতাংশ সুদে গৃহ নির্মাণ ঋণ নেওয়ার বিধান রেখে একটি নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। ১০ শতাংশ সুদের মধ্যে সরকার পাঁচ শতাংশ এবং ঋণগ্রহীতাকে বাকি পাঁচ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে। এই নীতিমালার আওতায় সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ এবং সর্বনিম্ন ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে। ২০ বছর মেয়াদে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, সামরিক বাহিনী, রাষ্ট্রায়ত্ব ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি, পৃথক বা বিশেষ আইন দ্বারা সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত কর্মচারীরা এ নীতিমালার আওতাভুক্ত হবেন না। তবে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যাংক থেকে এ ধরনের গৃহ নির্মাণ ঋণ সুবিধা পেয়ে থাকেন।
নীতিমালা অনুযায়ী জাতীয় বেতন স্কেলের পঞ্চম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তা, যাদের বেতন স্কেল ৪৩ হাজার বা এর বেশি তারা ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরে গৃহ নির্মাণ ঋণ পাবেন ৭৫ লাখ টাকা। জেলা সদরে এর পরিমাণ হবে ৬০ লাখ টাকা এবং অন্যান্য এলাকায় ৫০ লাখ টাকা। বেতন স্কেলের নবম গ্রেড থেকে ষষ্ঠ গ্রেড পর্যন্ত বা যাদের মূল বেতন ২২ হাজার থেকে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা, তারা ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদর এলাকার জন্য ৬৫ লাখ টাকা, জেলা সদরের জন্য ৫৫ লাখ ও অন্যান্য এলাকার জন্য ৪৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। ১১ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকা মূল বেতন বা দশম থেকে ১৩তম গ্রেডের চাকরিজীবীরা ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য ৫৫ লাখ টাকা, জেলা সদরের জন্য ৪০ লাখ টাকা এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ৩০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। ১৪তম থেকে ১৭তম গ্রেড বা ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার ২০০ টাকা বেতন স্কেলে ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য ৪০ লাখ টাকা, জেলা সদরের জন্য ৩০ লাখ টাকা ও অন্যান্য এলাকার জন্য ২৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। আর ১৮তম থেকে ২০তম গ্রেড বা ৮ হাজার ২৫০ টাকা থেকে ৮ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত মূল বেতন পান, এমন কর্মচারীরা ঢাকাসহ সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য গৃহ নির্মাণ ঋণ পাবেন ৩০ লাখ টাকা। চাকরির মেয়াদ ৫ বছর হলে এই ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর সর্বোচ্চ ৫৮ বছর বয়স পর্যন্ত এই ঋণ নেওয়া যাবে।
জানা গেছে, ১৯৮২ সালে প্রথম সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য গৃহ নির্মাণ ঋণ সুবিধা চালু করা হয়। চাকরিজীবীদের তখনকার মূল বেতনের ৪৮ মাসের সমপরিমাণ হিসাব করে এক লাখ ২০ হাজার টাকা গৃহ নির্মাণ ঋণ দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছিল, যা ৪৮টি সমান কিস্তিতে পরিশোধ করতে হয়। এরপর চাকরিজীবীদের বেতন বাড়লেও এই ঋণসীমা বাড়েনি। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এটি বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
সূত্র জানায়, ১০ শতাংশ সরল সুদে রাষ্ট্রায়ত্ব যেকোনো ব্যাংক ও বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফিন্যান্স করপোরেশন (বিএইচবিএফসি) থেকে এই ঋণ নেওয়া যাবে। এই ১০ শতাংশ সুদের মধ্যে ৫ শতাংশ সুদ পরিশোধ করবে সরকার। বাকি ৫ শতাংশ সুদ পরিশোধ করবেন ঋণগ্রহীতা চাকরিজীবী। অর্থাৎ সরকারি চাকরিজীবীদেও জন্য ৫ শতাংশ সুদে গৃহ নির্মাণ ঋণ চালু হতে যাচ্ছে। নতুন এই ঋণ সুবিধা ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
নতুন নীতিমালার আওতায় সরকারের প্রায় ১২ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী গৃহ নির্মাণ ঋণের সুবিধা নিতে পারবেন। এককভাবে এই ঋণ সুবিধা নেওয়ার পাশাপাশি নীতিমালায় আবাসিক বাড়ি করার জন্য গ্রুপভিত্তিক ঋণও নেওয়া যাবে। ফ্ল্যাট কেনার জন্যও এই ঋণ সুবিধা পাওয়া যাবে। তবে সেটা হতে হবে সম্পূর্ণ তৈরি ফ্ল্যাট।
ঋণের সর্বোচ্চ সিলিং নির্ধারণ সম্পর্কে নীতিমালায় বলা হয়েছে, বেতন স্কেল অনুযায়ী সর্বোচ্চ যে সিলিং সরকার নির্ধারণ করে দেবে, সেটিও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের যথাযথ পদ্ধতিতে যে পরিমাণ ঋণ সুবিধা নির্ধারণ করবে, তার মধ্যে যেটি কম, সে পরিমাণ ঋণ পাবেন। ফ্ল্যাট কেনা বা নিজস্ব জমিতে বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়ার জন্য ডেট ইক্যুইটি রেশিও হবে ৯০ : ১০। অর্থাৎ ফ্ল্যাট কেনা বা নিজস্ব জমিতে বাড়ি নির্মাণের জন্য কেউ নিজস্ব উদ্যোগে ১০ টাকা খরচ করলে তিনি ৯০ টাকা ঋণ পাবেন। ঋণের সুদ সম্পর্কে খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘সরকারি কর্মচারীদের গৃহ নির্মাণ ঋণের সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ। এটি হবে সরল সুদ এবং সুদের ওপর কোনো সুদ আদায় করা হবে না। ঋণগ্রহীতা কর্মচারী ব্যাংক রেটের সমহারে সুদ পরিশোধ করবেন। সুদের অবশিষ্ট অর্থ সরকার ভর্তুকি দেবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।