বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সোনালি অঁাশ নিয়ে গ্রামীণ জনপদে কর্মযজ্ঞ চলছে। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে পাট ঘরে তোলার কাজে নেমেছেন কৃষক। বসে নেই ঘরের কৃষাণীরাও। তারাও এই কাজে কোমর বেঁধে নেমেছে। যশোরের ফসলের মাঠসহ প্রাকৃতিক জলাধার খাল, বিল, বাওর ও নদীতে এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
যশোরের বিভিন্ন ফসলের মাঠ, বিল ও বাওড়ের পাড় ঘুরে দেখা যায়, পাট কেটে জাগ দেয়ার জন্য পানিতে ডুবিয়ে রাখছেন কৃষক। আর যাদের জাগ দেয়াও শেষ তাদের পাটের আঁশ ছাড়িয়ে পানিতে ধুঁয়ে আটি বাঁধা হচ্ছে। তারপর সেগুলো গরুর গাড়ি, নৌকা ও পাওয়ার ট্রিলারের টলিতে চাপিয়ে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন কৃষক। আর পাটের এই অঁাশ ছাড়ানোর কাজে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও হাত লাগাচ্ছেন। অনেকে আবার নৌকায় বসে আঁশ ছাড়িয়ে, নৌকা যোগে ছাড়ানো অঁাশ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। যশোর সদরের খিতিরদিয়া গ্রামের কৃষক দিনার গাজী জানান, ১৬ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছেন। ফলন অনেক ভালো হয়েছে। যারা ইতোমধ্যে পাট বিক্রি করেছেন তাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন, ছোট থাকতে কাটা পাটের মণ প্রতি দাম মিলেছে ১ হাজার ৭শ’ টাকা থেকে ১ হাজার ৯শ’ টাকা। আর এখন যেসব পাট উঠছে সেগুলোর দাম প্রায় ২ হাজার ৪শ’ টাকা থেকে ২ হাজার ৮শ’ টাকা। তিনি আরো জানান, দাম পতন না হলে মোটামুটি লাভবান হবেন।
যশোর বিজয়নগরের কৃষক রফিউদ্দিন বলছেন, এবার পাটের অনেক ভাল ফলন হয়েছে। এখন বাজার দাম ঠিকঠাক মিললেই হলো। আর দাম যা আছে এমন থাকলে লাভবান হবেন। তিনি আরো বলেন, দাম ভালো বলে পাটের আবাদ করছে কৃষকরা।
তেতুল তলার দিনমুজুর পরশ বলেন, এবার পাটের ভালো ফলন হয়েছে। তাই কাজ হচ্ছে প্রতি দিন। পাটের ফলন বেশি হবার কারণে কাজের লোক পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিন আমরা দল ধরে কাজ করি, প্রত্যেকে দিন শেষে ৮শ’ থেকে এক হাজর ইনকাম করছি।
জেলার কৃষিবিভাগ সূত্র বলছে, যশোরে এবার লক্ষমাত্রারও বেশি পাটের আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে আট উপজেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়, ২৫ হাজার ৩০০ হেক্টর। কিন্তু আবাদ হয়েছে তার চেয়েও বেশি। এবার মোট ২৬ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে পাটের চাষাবাদ হয়েছে। গত মৌসুমে পাটের আবাদ হয়েছিল ২৩ হাজার ৫৬৫ হেক্টর। ফলে তথ্য পরিসংখ্যান বলছে, লাভজনক হয়ে ওঠায় যশোরে পাটের চাষাবাদ ও উৎপাদন ধারাবাহিক বৃদ্ধি পাচ্ছে।
যশোর সদরের চাঁচড়ার কৃষক আদিত্য বিশ^াস জানান, এবার আড়াই বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। বিঘা প্রতি ৮ থেকে ১০ মণ মত পাটের ফলন পাবেন বলে মনে করছেন তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যশোরের উপ—পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ^াস জানান, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে লাভবান হয়েছেন যশোরের কৃষক। বর্তমানে পাটের বাজার দর ভালো যাচ্ছে। এখন আরো ভালো পাট উঠছে। তাই দামও বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।