বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ফেনীর ফুলগাজীতে মুহুরী নদীর ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ। প্রতিবছর একের পর এক ভাঙনে নদীর তীরবর্তী অসহায় মানুষের স্বপ্ন চুরমার হচ্ছে। দেখার যেন কেউ নেই। সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়,ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের জয়পুর এলাকায় মিঝিবাড়ি সংলগ্ন মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধের প্রায় ১০০ মিটার অংশজুড়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কিছুদিন আগে ভারতীয় পাহাড়ী ঢলের পানি নদীতে ডুকে পড়লে হঠাৎ ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এতে ঝুঁকিতে রয়েছে মহুরী নদীর তীরবর্তী বসবাসরত ওই গ্রামের মিঝিবাড়ি,বদিবাড়ি, মন্দার বাড়ি ও ফকির বাড়ির প্রায় ৫শ পরিবার। প্রতিবছর বর্ষা এলে নদীর ভাঙন আতঙ্কে তারা পৈত্রিক বসতভিটে হারানোর ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় তাদের। ওই এলাকার বাসিন্দা মৃত মৌলভী নুরুল ইসলামের ছেলে বৃদ্ধ আবদুল মান্নান বলেন, ৮-৯ বছর আগে মুহুরী নদীর জয়পুর অংশে কিছু অসাধু বালু ব্যবসায়ী নদী থেকে বালু উত্তোলন করলে সেখানে বিশাল গভীরতা সৃষ্টি হয়। নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে ওই গভীরতর অংশে পানি ঘুরতে থাকে। এর ফলে নদীর বাঁধে পানির তীব্র চাপ সৃষ্টি হলে ভাঙন দেখা দেয়। তিনি বলেন,আমরা অসহায় কতগুলো পরিবার নদীর তীরবর্তী এলাকায় ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছি। আমাদের শেষ ঠিকানা এই বসতভিটে ছাড়া আর কিছুই নেই। আমরা কোন রকমে বেঁচে থাকতে চাই। এখানে একটি আল্লাহর ঘর মসজিদ রয়েছে। এই মুহুর্তে নদীর ভাঙনস্থান মেরামত না করলে নদীগর্ভে বিলীন হবে ঘরবাড়ি,মসজিদ,মক্তব ও ফসলি জমি। অসহায় রেজিয়া ও তার স্বামী মোস্তফা কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, স্যার আমাদের ঘর বাঁচাবার একটু ব্যবস্থা করুন। আমরা ঘর হারানোর ভয়ে রাতে ঘুমাই না। আমাদেরকে কষ্ট করে জীবনযাপন করতে হয়। পরশুরাম উপজেলার রতনপুর গ্রামের বাসিন্দা মনির আহাম্মেদ নয়ন বলেন, জয়পুরে মুহুরী নদীর ভিতরে বেড়িবাঁধের সাথে তাদের ২শ ডিসিম পৈত্রিক সম্পদ ছিল কিন্তু ইতিমধ্যে ১২০ শতাংশ জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাকি আরও ৮০ শতাংশ জমি আস্তে আস্তে নদীতে বিলীন হচ্ছে। এছাড়াও সেখানে বসবাসরত অনেক অসহায় মানুষের একটাই দাবী নদীর দুই তীরে স্থায়ী ও টেঁকসই বাঁধ নির্মাণ করা হোক।
এ বিষয়ে ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন,তিনি নদীর ভাঙনস্থান পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন জয়পুর এলাকায় নদীর তীরে অনেক মানুষ বসবাস করেন। সেখানে নদীর বাঁধ ভাঙলে বিশাল ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু তাদের ক্ষতি হবেনা আমাদেরও অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। তিনি বলেন নদীর ভাঙনস্থানে টেঁকসই ভাবে বাঁধ সংস্কার করা জরুরী। তিনি এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সার্ভে) আরিফুল ইসলাম বলেন, জয়পুরে ভাঙনস্থান পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে নদীর বাঁধের ভাঙনস্থানে জিওব্যাগ ফেলানোর কাজ শুরু হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।