নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
চলতি লিগে টেবিলের তলানিতে থেকে আগেই অবনমিত হয়ে গেছে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের পরের আসরে খেলে শীর্ষ লিগে ফেরার সুযোগ ছিল তাদের। কিন্তু ২০১৯ সালের আলোচিত সেই ‘ক্যাসিনো কান্ডে’ জেরবার আরামবাগ পড়ল আরো বড় বিপদে। চ্যাম্পিয়নশিপ লিগেও খেলার সুযোগ হারাল মতিঝিলের ক্লাবটি। ম্যাচ ফিক্সিং আর বেটিংয়ের সাথে যুক্ত প্রমাণিত হওয়ায় সরাসরি তাদেরকে প্রথম বিভাগ ফুটবলে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রথম বিভাগ থেকে প্রমোশন পেলেও তা আগামী দুই মৌসুম কার্যকর হবে না বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি। তবে তারা অবনমিত হলে তা কার্যকর হবে। সঙ্গে ৫ লাখ টাকা আর্ধিক জরিমানাও করা হয়েছে ক্লাবটিকে। এছাড়া, খেলোয়াড়-কর্মকর্তা মিলিয়ে দলটির মোট ২০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অধিকতর তদন্তের পর আরামবাগকে কঠোর শাস্তি দিয়ে গতকাল এক বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
গত ফেব্রুয়ারিতে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) পাঠানো চিঠির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সবশেষ ২০২০-২১ মৌসুমে লাইভ বেটিং/স্পট ফিক্সিং/ম্যাচ ম্যানিপুলেশন/অনলাইন বেটিংয়ের অভিযোগে আরামবাগের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে বাফুফের পাতানো খেলা শনাক্তকরণ কমিটি। তদন্ত শেষে তারা যে প্রতিবেদন তৈরি করে, সেটার ভিত্তিতে শাস্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাফুফের ডিসিপ্লিনারি কমিটি।
প্রিমিয়ার লিগের সবশেষ মৌসুমে ১৩ দলের মধ্যে ১২তম হয়েছিল আরামবাগ। ফলে তারা অবনমিত হয়েছিল চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে। কিন্তু ফিক্সিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শাস্তিস্বরূপ তাদেরকে নেমে যেতে হচ্ছে আরও এক ধাপ নিচে অর্থাৎ প্রথম বিভাগে। আরামবাগের ৬ জন কর্মকর্তা ও ১৪ জন খেলোয়াড়কে দেওয়া হয়েছে নানা মেয়াদের সাজা। ক্লাবটির সাবেক সভাপতি ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক মিনহাজুল ইসলাম মিনহাজ, সাবেক টিম ম্যানেজার গওহর জাহাঙ্গীর রুশো, সাবেক ফিটনেস ট্রেইনার ভারতীয় নাগরিক মাইদুল ইসলাম শেখ ও সাবেক অ্যাসিস্ট্যান্ট টিম ম্যানেজার আরিফ হোসেনকে ফুটবল সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
দলটির সাবেক ফিজিও ভারতীয় নাগরিক সঞ্জয় বোস ও সাবেক গেম অ্যানালিস্ট ভারতীয় নাগরিক আজিজুল শেখ ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন। তাদের সাবেক ফুটবলার আপেল মাহমুদ নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন ৫ বছরের জন্য। ৩ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে ৮ খেলোয়াড়কে। তারা হলেন আবুল কাশেম মিলন, আল আমিন, মো. রকি, জাহিদ হোসেন, কাজী রাহাদ মিয়া, মোস্তাফিজুর রহমান সৈকত, শামীম রেজা ও অস্ট্রেলিয়ার ব্র্যাডি ক্রিস্টিয়ান। আরও ৫ ফুটবলার নিষিদ্ধ হয়েছেন ২ বছরের জন্য। তারা হলেন- নাইজেরিয়ান ক্রিস্টোফার চিজোবা, ওমর ফারুক, রাকিবুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ফাহাদ ও মিরাজ মোল্লা।
পেশাদার ফুটবলের বিভিন্ন স্তরে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ নতুন নয়। দেশের গণমাধ্যম এ নিয়ে সরব থাকলেও বাফুফেকে সেভাবে নড়েচড়ে বসতে কখনও দেখা যায়নি। নানা ধরনের প্রতিশ্রæতি দিয়েই তারা শেষ করত তাদের দায়িত্ব। এবার যদিও শীর্ষ পর্যায়ের একটি ক্লাবের বিরুদ্ধে তারা কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে, সেখানে গুরুত্বপ‚র্ণ ভ‚মিকা ছিল এএফসির। আরামবাগের তিনটি ম্যাচ নিয়ে তারা প্রশ্ন তোলার পর তদন্তে নামে বাফুফে। ম্যাচগুলো ছিল আবাহনী লিমিটেড, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের বিপক্ষে। সবকটিতেই বড় ব্যবধানে হেরেছিল আরামবাগ।
আজীবন নিষিদ্ধ সভাপতি, নিষিদ্ধ তিন ভারতীয়ও
বাফুফের শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত
আরামবাগ ক্রীড়া সংঘকে ৫ লাখ টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাফুফের ব্যাংক হিসাবে জমা দিতে হবে এই টাকা।
আরামবাগের সাবেক সভাপতি ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক এম স্পোর্টসের প্রধান স্বত্বাধিকারী মিনহাজুল ইসলাম ও, সাবেক দলীয় ম্যানেজার গওহর জাহাঙ্গীর রুশো, সাবেক ভারতীয় ফিটনেস ট্রেনার মাইদুল ইসলাম, সাবেক সহকারী দলীয় ম্যানেজার আরিফ হোসেনকে ফুটবল থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ক্লাবের সাবেক ভারতীয় ফিজিও সঞ্জয় বোস, ভারতীয় গেম অ্যানালিস্ট আজিজুল শেখকে ফুটবলীয় কার্যকলাপ হতে ১০ বছর নিষিদ্ধ।
ক্লাবের সাবেক গোলকিপার আপেল মাহমুদকে ৫ বছর নিষিদ্ধ।
সাবেক খেলোয়াড় আবুল কাশেম মিলন, আল আমিন, মোহাম্মদ রকি, জাহিদ হোসেন, কাজী রাহাদ মিয়া, মোস্তাফিজুর রহমান সৈকত, শামীম রেজা, ব্রাডি স্মিথকে (অস্ট্রেলিয়া) ৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
সাবেক নাইজেরিয়ান খেলোয়াড় ক্রিস্টোফার চিজোবা, ওমর ফারুক রাকিবুল ইসলাম মেহেদী হাসান ফাহাদ, মিরাজ মোল্লা দুই বছর নিষিদ্ধ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।