Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কুড়িগ্রামে ভাঙ্গনে দিশেহারা নদী পাড়ের মানুষ

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০২১, ১০:০১ এএম

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে নদ-নদীর পানি বাড়া-কমার সাথে সাথে তীব্র হয়েছে ভাঙন। ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী পাড়ের মানুষ। উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার, গঙ্গাধর ও ব্রহ্মপুত্র নদের তীর সারা বছর ধরে ভাঙলেও এখন বন্যার পানি বাড়া কমার সাথে তা তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত এক সপ্তাহে দুধকুমার নদের ভাঙনে রায়গঞ্জ ইউনিয়নের বড় মিনাবাজার এলাকায় ১০টি বাড়ি, হাজীর মোড় এলাকায় ৫টি বাড়ি, বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের বড়মানি এলাকায় ৯টি বাড়ি, বেরুবাড়ি ইউনিয়নের ফান্দের চর এলাকায় ১৫টি বাড়ি নদীতে বিলিন হয়েছে। ইতিপূর্বে এক মাসে নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে রায়গঞ্জ ইউনিয়নের বড়বাড়ী, বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের তেলিয়ানিরকুটি,ওয়াপদাঘাট,বেরুবাড়ী ইউনিয়নের চরবেরুবাড়ীসহ কয়েক গ্রামের প্রায় শতাধিক ঘর বাড়ি, মসজিদ শত শত বিঘা আবাদী জমি, গাছপালাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। অপরদিকে গংগাধর নদীর ভাঙনে বল্লভের খাষ ইউনিয়নের রঘুর ভিটা, কৃষ্ণপুর, রাম দত্ত এলাকার প্রায় ২০টি বাড়ি বিলিন হয়েছে। বিলিন হয়েছে আবাদী জমি। ভাঙনের হুমকিতে আছে রঘুর ভিটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ মসজিদ, মাদ্রাসা ও মন্দির। এছাড়া ভাঙন অব্যাহত রয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদের নারায়ণপুর ও নুনখাওয়া ইউনিয়নে।

ভাঙনের শিকার হয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারানো এসব পরিবার স্থান নিয়েছে ওয়াপদার বাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও খোলা আকাশের নীচে। রায়গঞ্জ ইউনিয়নের হাজীর মোড় এলাকার মামুনুর রশিদ জানান, গেল এক সপ্তাহ জুড়ে দুধকুমার নদের ভাঙন বেড়ে গেছে। এতে করে নদের তীরবর্তী এলাকার বসত ভিটা, আবাদী জমি নদের গর্ভে চলে যাচ্ছে। বেরুবাড়ি ইউনিয়নের ফান্দেরচর এলাকার মজিদুল ইসলাম জানান, একমাস থেকে ফান্দের চর এলাকায় তীব্র ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরের এক তৃতীয়াংশ দুধকুমার নদে বিলিন হয়েছে।

বল্লভের খাষ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আকমল হোসেন জানান, গংগাধরের ভাঙনে তার ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের প্রায় অর্ধশত পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারিয়েছে। বসত ভিটা হারানো কিছু পরিবার স্থানীয় স্কুল ঘরে কিছু পরিবার খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে।
রায়গঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম আব্দুলাহ আল ওয়ালিদ মাছুম জানান, প্রায় দুইমাস থেকে দুধকুমার নদের ভাঙ্গন তীব্র হয়েছে। তার ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশত পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। এসব মানুষ অসহায়ভাবে দিনিপাত করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত তাদের জন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর আহমেদ মাছুম জানান, ভাঙনে নিঃস্ব হওয়া পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত করে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে জরুরী ভিত্তিতে ত্রাণ সহযোগীতা প্রদান করা হবে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী ওমর ফারুক মো.মোক্তার হোসেন জানান, ইতিমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকায় আপদকালীন ব্যবস্থা নেয়া যায় কিনা তা আমরা দেখছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নদী ভাঙ্গন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ