গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
নগরীর মুরাদপুরে চশমা খাল সংলগ্ন বড় নালায় পড়ে নিখোঁজ ছালেহ আহমদের (৫০) সন্ধানে তল্লাশি অব্যাহত আছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে খাল-নালায় তল্লাশি অভিযান চালায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করা হয়। আজ শুক্রবার তার খোঁজে তৃতীয় দিনের মত অভিযান চলবে কিনা সে ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু বলতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। এদিকে দুইদিনেও ছালেহ আহমদের সন্ধান না পেয়ে তার পরিবারে চলছে আহাজারি। পিতার লাশটি হলেও খুঁজে বের করতে আকুতি জানান ছেলে মাহিন আহমদ। ছালেহ আহমদের স্বজনরাও বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি অব্যাহত রেখেছেন।
বুধবার সকালে পা পিছলে নালায় পড়ে নিখোঁজ হন ছালেহ আহমদ। তখন বৃষ্টিতে সড়ক, নালা একাকার হওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। পানিতে স্রোত থাকায় তিনি দ্রুত তলিয়ে যান। তিনি নগরীর চকবাজার এলাকায় সবজির ব্যবসা করতেন, তার বাসাও চকবাজারে। চকবাজার থেকে ফটিকছড়ি মাইজভান্ডারে যেতে মুরাদপুর গিয়েছিলেন তিনি। বাস থেকে নেমে রাস্তা পার হতেই নালার পানিতে পড়ে যান ছালেহ আহমদ।
ঘটনার পর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নিখোঁজ ছালেহ আহমদের সন্ধানে মুরাদপুর থেকে নদীর উজানের দিকে নালায় তল্লাশি শুরু করে। বিরতি দিয়ে গতকাল সকাল থেকে ফের শুরু হয় অভিযান। সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরীর মুরাদপুর থেকে কালুরঘাট হয়ে কর্ণফুলী নদীর মুখ পর্যন্ত তল্লাশি চালানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীদের পাশাপাশি অভিযানে নামে ডুবুরি দলও। স্থানীয়দের সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের ১২ জন কর্মী দিনভর অভিযান চালায়।
ফায়ার সার্ভিসের আগ্রাবাদ স্টেশনের অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, মুরাদপুর থেকে একেবারে কালুরঘাট কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নালা-খালে আমরা তল্লাশি চালিয়েছি। স্বাভাবিকভাবে আমরা তো এটা ধরে নিতে পারি যে, উনি আর বেঁচে নেই। আমাদের ডুবুরি দল যেসব স্থানে ময়লা-আবর্জনার মধ্যে লাশ আটকে থাকার সম্ভাবনা আছে সেখানেও তল্লাশি চালিয়েছে। এরপর রেসকিউ টিম নামানো হয়েছে। কোনোভাবে কোথাও লাশ ভেসে ওঠে কি না তারা সেটা দেখছে। তবে কয়েকটি স্থানে নালার ওপর বিল্ডিং আছে। সেখানে আমরা সেভাবে তল্লাশি চালাতে পারিনি। সন্ধ্যা ৭টায় অভিযান শেষ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ফের অভিযান হবে কিনা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত দেবেন। নিখোঁজ ছালেহ আহমদের বাড়ি পটিয়া উপজেলার মনসা গ্রামে। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে গ্রামে থাকেন। ছেলে পশ্চিম পটিয়া এ জে চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মেয়ে মনসা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। সকাল থেকে পিতার খোঁজে মুরাদপুরে অবস্থান করে সালেহ আহমদের ছেলে মাহিন আহমদ। পিতাকে না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে সে। মাহিন জানায়, তার পিতা সংসারে একমাত্র উপার্জন করার লোক ছিলেন। এখন কিভাবে তাদের সংসার চলবে তা নিয়ে অস্থির সে। উদ্ধারকর্মীদের কাছে পিতার লাশটি খুঁজে দেয়ার আকুতি জানায় মাহিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।