মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সময়সীমা বাড়াতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে আহ্বান জানিয়েছিলেন জি৭ এবং ইউরোপীয় নেতারা। তবে বাইডেন সেই প্রস্তাব সঙ্গে সঙ্গেই খারিজ করে দেন। সোমবার কাবুলে সিআইএ পরিচালক উইলিয়াম বার্নস এবং একজন প্রধান তালেবান নেতা মোল্লা আবদুল গনি বড়দারের মধ্যে বৈঠকের পরেই তিনি সময়সীমা মেনে চলার সিদ্ধান্ত নেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার গোয়েন্দা প্রধানকে কাবুলে পাঠিয়েছিলেন এবং ৩১ আগস্টের সময়সীমার মধ্যে প্রত্যাহার অভিযান শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উভয় সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে তিনি তার জাতীয় নিরাপত্তা দলের সঙ্গে পরামর্শ করেছিলেন। যদি এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আফগানিস্তানে বেশি দিন থাকতে হবে, তাহলে তিনি বিকল্প উপায় রাখার চিন্তা-ভাবনা করছেন। এজন্য, এই বৈঠকের একটিতে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার নিরাপত্তা দলকে জরুরী পরিকল্পনা তৈরি করতে বলেন।
কাবুলে ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রত্যাহার অভিযান শেষ করতে হবে বলে তালেবানদের জোর দাবি সত্তে¡ও তারা মার্কিন বাহিনীকে কাবুল বিমানবন্দরে বেশিদিন সেনা রাখার জন্য আবেদন করেছিল। তবে বাইডেন রাজি না হওয়ায় মার্কিন সমর্থন ছাড়াই, ওয়াশিংটনের মিত্ররা জনগণকে বের করে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া এবং পিছিয়ে থাকা আফগানদের সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু তারা ইতিমধ্যে স্বীকার করেছে যে প্রক্রিয়াটি সময়মতো সম্পন্ন করা অসম্ভব হবে। গত ১০ দিনে হাজার হাজার বিদেশী নাগরিক এবং পশ্চিমা সংগঠনগুলোর সাথে যুক্ত আফগানদের বিমানে করে আফগানিস্তান থেকে বের করে নেয়া হয়েছে। কিন্তু তালেবানদের থেকে পালানোর জন্য মরিয়া আরও হাজার হাজার লোকের জন্য এই সময়ের মধ্যে প্রস্থান করা সম্ভব হবে না। মঙ্গলবার জি৭ নেতাদের ভার্চুয়াল বৈঠক ওয়াশিংটনকে রাজি করাতে ব্যর্থ হওয়ার পরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘আমরা শেষ মুহ‚র্ত পর্যন্ত যা করতে পারি ততক্ষণ এগিয়ে যাব। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট যা বলতে চেয়েছেন তা আপনারা শুনেছেন, তালেবানরা যা বলেছে তাও আপনারা শুনেছেন।’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মাসের শেষে বিমানবন্দরে উপস্থিতি বজায় রাখার জন্য প্রকাশ্যে তদবির করেছিলেন। কাবুল বিমানবন্দরে যুক্তরাজ্যের প্রায় ১ হাজার সৈন্য রয়েছে, যারা সেখানে থাকা প্রায় ৬ হাজার মার্কিন বাহিনীকে সাহায্য করছে। ফ্রান্স, জার্মানি এবং তুরস্ক সহ অন্যান্য দেশগুলোর সেনারও অল্প সংখ্যায় উপস্থিতি রয়েছে।
ফ্রান্সের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য জোর দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি আমেরিকার সার্বভৌম সিদ্ধান্তের সঙ্গে ‘মানিয়ে নেবেন’। জার্মান চ্যান্সেলর মার্কিন প্রত্যাহারের মুখে ইউরোপের শক্তিহীনতার বিষয়ে স্পষ্ট ছিলেন। বার্লিনে সাংবাদিকদের অ্যাঞ্জেলা মার্কেল বলেন, ‘আমি আবারও চাপ দিতে চাই যে, এখানে অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া, উদাহরণস্বরূপ, আমরা বা অন্যরা প্রত্যাহার অভিযান চালিয়ে যেতে পারি না।’ ইউরোপের নেতারা আফগান জনগণকে সাহায্য করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে কোন সামরিক উপস্থিতি না রেখে এবং পশ্চিমে শরণার্থীদের জন্য জায়গা না দিয়ে তারা ঠিক কিভাবে সেটি করবেন, তা বোধগম্য নয়। ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন টুইটারে বলেন, ‘আফগান জনগণকে সাহায্য করা এবং শর্তাবলী অনুযায়ী সহায়তা প্রদান করা আমাদের নৈতিক কর্তব্য।’
জাতীয় নেতাদের প্রতিনিধিত্বকারী ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি চার্লস মিশেল টুইট করে বলেছেন, বিদেশী এবং স্থানীয় কর্মীদের সরিয়ে নেয়া ‘অবিলম্বে অগ্রাধিকার’ রয়ে গেছে। তিনি ‘আফগান জনগণের সমর্থনে বৃহত্তর জি৭ অংশগ্রহণ এবং আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের’ আহ্বান জানান। তিনি ‘সন্ত্রাসবাদের পুনরুত্থান’ রোধ করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে নিরাপত্তার দিকেও মনোনিবেশ করতে বলেন। তিনি টুইট করেছেন, ‘দেশ থেকে পালিয়ে আসা আফগানদের নিরাপত্তা ও যথাযথ জীবনযাপনের ক্ষেত্রে এই অঞ্চলের দেশগুলোর সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ হবে। আমরা অভিবাসী প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে এবং ইইউ এর সীমানা সুরক্ষিত রাখতে বদ্ধপরিকর।’
মঙ্গলবারের জি৭ বৈঠকের পর বাইডেন জোর দিয়ে বলেন যে, আফগানিস্তান এবং তালেবানদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার নিকটতম মিত্ররা ‘কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে’ থাকবে। ঐক্যের আংশিক প্রদর্শনীতে, জি৭ নেতারা ভবিষ্যতের তালেবান নেতৃত্বাধীন আফগান সরকারকে স্বীকৃতি ও মোকাবেলার শর্তে একমত হয়েছেন। কিন্তু ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতাদের বৈঠকের ফলাফল ছিল ইউরোপীয় শক্তির অসহায়ত্বের স্বীকৃতি যাকে ওয়াশিংটন ‘শট’ বলে অভিহিত করেছে। কিছু বিশ্লেষকের মতে, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা সেনা প্রত্যাহারের পরাজয় আমেরিকা ও ইউরোপের মধ্যে সম্পর্ককে কয়েক দশকের মধ্যে সর্বনিম্নে নামিয়ে দিয়েছে।
গত জুন মাসে দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের কর্নওয়ালে যখন ধনী দেশগুলোর ক্লাব জি৭ মিলিত হয়েছিল, তখন আফগানিস্তান নিয়ে তাদের বক্তব্য একটি ২৫-পৃষ্ঠার নথিতে সীমাবদ্ধ ছিল। সেখানে মূলত তিনটি কথা বলা হয়েছিলো। নেতারা একটি ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সমঝোতা’ দাবি এবং আফগান সরকারের প্রতি সমর্থন বজায় রাখার জন্য তাদের দৃঢ় সংকল্প ঘোষণা করেছিলেন। দুই মাস পরে সেই সরকার ক্ষমতাচ‚্যত হয়েছে এবং আমেরিকার ৩১ আগস্টের স্ব-আরোপিত সময়সীমার আগে পশ্চিমা দেশগুলো তাদের নাগরিক এবং মিত্রদের কাবুল থেকে সরিয়ে নেয়ার জন্য হিমশিম খাচ্ছে। যদিও বাইডেন বৈঠকের পর বলেছিলেন, তিনি প্রয়োজনে সময়সীমা সামঞ্জস্য করার জন্য ‘বিকল্প পরিকল্পনাও’ রেখেছেন। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, ‘প্রতিদিনের অপারেশন আমাদের সৈন্যদের জন্য অতিরিক্ত ঝুঁকি নিয়ে আসে।’ তিনি একটি জনবহুল বিমানবন্দর এবং তার আশেপাশে সন্ত্রাসী হামলা বা তালেবানের সাথে মুখোমুখি হওয়ার বিপদের কথা উল্লেখ করেছেন, যেখানে ইতিমধ্যেই ২০ জন আফগান গুলি ও পদদলিত হয়ে মারা গেছেন।
বাইডেনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ঘড়ির কাঁটা ধরে চলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ৩১ আগস্টের মধ্যে চলে যাওয়ার জন্য, আমেরিকান বাহিনী ২৭ আগস্ট থেকে সব গোছাতে শুরু করবে। যাতে সাহায্যকারী ৫০০ এরও বেশি আফগান কমান্ডোসহ সৈন্য ও সরঞ্জাম বের করে আনার পর্যাপ্ত সময় নিশ্চিত করা যায়। প্রত্যাহার অভিযানে গতিও আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বাইডেন জানিয়েছেন, ১৪ আগস্টের পর থেকে ৭০ হাজার ৭০০ জনকে আফগান রাজধানী থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে, যার মধ্যে শেষ ১২ ঘন্টায় ১২ হাজার সেনা এবং আফগান সহযোগীকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
কাবুল বিমানবন্দরে এখন পর্যন্ত সর্বাধিক দেশের থেকে আসা একত্রিত বিশেষ বাহিনীর সেনা রয়েছে। ১৯৭৫ সালে ভিয়েতনাম থেকে আমেরিকা চলে যাওয়ার পর বিমানে করে সরিয়ে আনার এই অভিযানই যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় প্রচেষ্টা বলে মনে করা হয়। যেটা প্রায় প্রত্যেক বিদেশিকেই দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য যথেষ্ট হতে পারে (যদিও আমেরিকা স্বীকার করেছে যে তার নাগরিকদের মধ্যে কতজন আফগানিস্তানে আছে, সে সম্পর্কে তারা নিশ্চিত নয়)। তবে দুই দশকের যুদ্ধে তাদের সাথে দোভাষী, চালক এবং প্রহরী হিসেবে কাজ করা আফগানদের উদ্ধার করার সময় তাদের অবশ্যই হবে না। ওয়ালেস এবং জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস দুজনেই স্বীকার করেছেন যে, অনেক আফগান মিত্র দেশ থেকে বের হতে বাণিজ্যিক ফ্লাইট খুঁজতে বাধ্য হবে।
তাদের চলে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে কিনা তা অন্য বিষয়। আমেরিকা এবং ইউরোপ ইতোমধ্যেই তালেবানদের সাথে আলোচনা করতে বাধ্য হয়েছে যাতে নিশ্চিত করা যায় যে, প্রত্যাহার নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা যেতে পারে। কিন্তু একবার বিদেশী সেনা চলে গেলে, তালেবানরা এই সুবিধাটি দখল করে নেবে এবং সমস্ত প্রস্থান পথের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করবে। তারা এরই মধ্যে তাদের দৃঢ়তা দেখাতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার তালেবানের একজন মুখপাত্র অভিযোগ করেছিলেন যে, আমেরিকা ডাক্তার, প্রকৌশলী এবং অন্যান্য শিক্ষিত পেশাজীবীদের চলে যেতে উৎসাহিত করছে। তিনি বলেন, এখন থেকে কেবল বিদেশী নাগরিকদেরই বিমানবন্দরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। ‘আমরা আফগানদের দেশ ছাড়ার পক্ষে নই। আমাদের তাদের দক্ষতা দরকার।’
এটি একটি অচলাবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। শীর্ষ সম্মেলনের পর জনসন বলেছিলেন, জি৭ তালেবানদের সাথে সম্পৃক্ততার জন্য একটি ‘যৌথ পদ্ধতি’ এবং ‘রোডম্যাপ’ নিয়ে সম্মত হয়েছে। এর বিশাল সুবিধা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি নিউইয়র্কে আটকে দেয়া আফগানিস্তানের প্রায় ৭০০ কোটি ডলারের বৈদেশিক রিজার্ভের দিকে ইঙ্গিত করেন। যদিও জি৭ এর যৌথ বিবৃতিতে বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়েছে- মানবাধিকার, নারীর অধিকার এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার। তবে জনসনের মতে তাদের জন্য ‘প্রথম শর্ত’ হচ্ছে ৩১ আগষ্টের পরেও দেশ ত্যাগে ইচ্ছুক আফগানদের জন্য ‘নিরাপদ পথ’ খোলা রাখা। ভন ডার লেয়েন মহিলা শিক্ষক, বিচারক এবং আইনজীবী সহ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ আফগানদের জন্য ‘নিরাপদ পথ’ এর প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।
অপরদিকে, আফগানিস্তানের উপরে জি৭ এর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। গত বছর, তাদের দেয়া সাহায্যের পরিমাণ ছিল আফগানিস্তানের জিডিপির দুই-পঞ্চমাংশের বেশি। বাস্তবে যদিও, তালেবানের নগদ প্রবাহ অনুমানের চেয়ে কম হতে পারে। চলতি মাসে লন্ডনের একটি থিংক ট্যাঙ্ক ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে যে, শুধুমাত্র একটি সীমান্ত শহর, জারঞ্জের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন থেকেই সরকারী হিসাবেই রাজস্ব আয় হয় বছরে প্রায় ১৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। বাস্তবে যা আরও বেশি হতে পারে। তালেবানরা এখন এরকম প্রতিটি সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিবেদনের সহ-লেখক এবং আফগানিস্তানের বিশেষজ্ঞ গ্রায়েম স্মিথ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক দাতাদের কাছে তাদের ধারণার চেয়ে কম সুবিধা রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব নিজেকে বোকা বানাচ্ছে যে তালেবান নেতৃত্ব নিষেধাজ্ঞার কারণে পঙ্গু হতে পারে।’
যদিও জনসন বা জি৭ এর বিবৃতিতে তালেবানদের উপর আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা উল্লেখ করা হয়নি, তবে সাম্প্রতিক দিনগুলিতে ক‚টনীতিকরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু তারা আরেকটি সমস্যা উপলব্ধি করেছেন। এর ফলে সাধারণ আফগানদের জন্য মারাত্মক পরিণতি হতে পারে। নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের সেক্রেটারি-জেনারেল জন এগেল্যান্ড বলেন, ‘মানবিক পরিস্থিতি খারাপ থেকে খারাপের দিকে চলে গেছে।’ তিনি উল্লেখ করেন যে, সংঘাত, খরা এবং মহামারী ইতিমধ্যেই ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে; দূরবর্তী এলাকা থেকে কাবুলে শরণার্থীদের বিপুল প্রবাহ সেই চ্যালেঞ্জগুলোকে আরও বাড়িয়ে দেয়। ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি নামে একটি এনজিওর মতে, গত দুই সপ্তাহে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৫৩ শতাংম বেড়ে ৫ লাখ ৫০ হাজারে পৌঁছেছে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ, থিঙ্ক-ট্যাঙ্কের রিচার্ড গোয়ান বলেন, ‘জি৭ আফগান অর্থনীতির পতনকে ত্বরান্বিত করতে তাদের আর্থিক প্রভাব ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু অর্থনৈতিক পতনের ফলে সেখানে আরো সহিংসতা এবং আরো শরণার্থী বাড়তে পারে। যা ইউরোপীয়রা সবচেয়ে বেশি ভয় পায়। এ কারণে ক্লাবের সাত সদস্যই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। উদাহরণস্বরূপ, তালেবান নেতাদের উপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ক্ষমতা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের হাতে রয়েছে, যার বর্তমান সভাপতি ভারত। তবুও জি৭ এর বিপরীতে, কাউন্সিলে রাশিয়া এবং চীন অন্তর্ভুক্ত, উভয়ই স্থায়ী সদস্য হিসাবে ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারে। সেখানে যে কোন সমাধান অবশ্যই উভয় দেশকে সন্তুষ্ট করতে হবে, যাদের নাগরিক আফগানিস্তানে কম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে, তালেবানদের সাথে উষ্ণ সম্পর্ক এবং চীনের ক্ষেত্রে বৃহত্তর অর্থনৈতিক স্বার্থ।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আফগানিস্তানে জ্বালানি রফতানি পুনরায় শুরু করা ইরান কিংবা বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়া পাকিস্তান, জি৭ এর এ ধরণের কোন পরিকল্পনায় ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে না যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সাবেক ব্রিটিশ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্ক লায়াল গ্রান্ট বলেন, ‘আপনাকে ১৯৯৬ এর সাথে তুলনা করতে হবে যখন মাত্র তিনটি দেশ পাঁচ বছরের জন্য তালেবান শাসনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল।’ তিনি বলেন, ‘এই সময়টা খুব আলাদা হবে, সব প্রতিবেশী সহ কোন বড় শর্ত ছাড়াই তালেবান শাসনকে অবিলম্বে ৫০ টিরও বেশি দেশ স্বীকৃতি দিতে পারে।’ হতাশ বরিস জনসন নিজেও স্বীকার করেছেন, ‘যদি কোনো দেশ নিজে তা করতে রাজি না হয়, তাহলে পশ্চিমা শক্তির পক্ষে কোনো দেশের ওপর এই ধরণের আদেশ চাপিয়ে দেয়া খুব কঠিন।’ সূত্র : দ্য ইকোনমিস্ট, ইউরোনিউজ, ডন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।