Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বার্সার ভুলে ভরা এক ম্যাচ

প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : ম্যাচ দেখলে মনে হতেই পারে হারের বাসনা দিয়েই সেল্টা ভিগোয় গিয়েছিল বার্সেলোনা। নইলে চ্যাম্পিয়ন দলের কাছ থেকে এক ম্যাচে এতগুলো ভুল আশা করা যায় না। ডাগ আউটে প্রথম ভুলটা করেন লুইস এনরিকে আর মাঠে রক্ষণের একের পর এক ভুলে প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে বার্সা। এমন ম্যাচে আবারো পুরোদমে স্ট্রাইকার বনে গিয়ে জোড়া গোল করেন ডিফেন্ডার ডেরার্ড পিকে। এরপরও ম্যাচের ভাগ্য এদিন অনুকূলে আনা গেল না। শেষ দিকে প্রতিপক্ষকে দেয়া গোলরক্ষক টার স্টেগেনের ‘গোল উপহারে’ ৪-৩ গোলে হেরে ভুলের ষোলকলা পূর্ণ বার্সার। মৌসুম শুরু না হতেই দ্বিতীয় হারের সাক্ষি হল স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
এই সেল্টার মাঠেই গেল মৌসুমে সবচেয়ে বড় হারের (৪-১) সাক্ষি হয়েছিল লুইস এনরিকের দল। সেকথা হয়তো বেমালুম ভুলে গিয়েছিলেন স্প্যানিশ কোচ। নইলে লিওনেল মেসির অনুপস্থিতিতে দুই অভিজ্ঞ আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা ও হাভিয়ের মাচেরানোকে বসিয়ে রাখেন কোন যুক্তিতে। এনরিকের এই ভুলের খেসারত দিতে দেরি হয়নি মোটেও। মাত্র ২২ মিনিটে প্রথম ভুলটা করেন গোলরক্ষক টার স্টেগেন। বল বাড়িয়েছিলেন সার্জিও বুসকেট নাকি জর্ডি আলবার কাছে তা বোঝা গেল না,ফলে বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে পালেন না তাদের কেউই। সেই সুযোগে বল পেয়ে লাগো আসপাস বাড়িয়ে দেন ডি বক্সে। বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুরূহ কোন থেকে সেল্টাকে এগিয়ে নেন পিয়েনো সিসতো। দ্বিতীয় গোলটাও হল রক্ষণের ভুল বোঝাবুঝির কারণে। অনেক দূর থেকেই বল নিয়ে এগিয়ে বক্সের ডানপ্রান্তের কোনাকুনি শটে পরাস্ত করেন টার স্টেগেনকে। রক্ষণ সেনানীরা এ সময় যথেষ্ট সময় পেয়েও আসপাসকে থামাতে পারেননি। দুই মিনিট পর আসপাসেরই ক্রস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে জালে পাঠিয়ে দেন জেরেমি ম্যাথিউ। সেল্টা ভিগো ৩, বার্সেলোনা ০! সবকিছু ঘটে গেল মাত্র ১১ মিনিটের ব্যবধানে। ডাক আউটে এনরিকের চোখে তখন বিস্ময়মাখা বিহŸল চাহনি।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফেরার প্রাণপণ চেষ্টা চালায় এরনিকের শিষ্যরা। স্বপ্ন দেখাচ্ছিল পিকে আর নেইমারের গোল। ঠিক সে সময় আবার ছেলেমানুষী করে বসেন টার স্টেগেন। ডি বক্সে বল তার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণেই ছিল, তা ক্লিয়ার বা সতীর্থকে দেয়ার যথেষ্ট সময়ও পেয়েছিলেন। কিন্তু বল ভলি করতে গিয়ে তিনি মেরে বসেন আর্নান্দেজের মুখে। সেখানেই দাঁড়িয়ে ফিরতি বলকে জালে ঢুকতে দেখেন টার স্টেগেন। পরে নির্ধারণীর সময়ের ৩ মিনিট আগে আবারো হেডারের মাধ্যমে ব্যবধান কমান পিকে। কিন্তু হার এড়ানোর জন্য তা যথেষ্ট ছিল না। নেইমারের গোলটি ছিল পেনাল্টি থেকে পাওয়া।
ম্যাচ শেষে ভুল স্বীকার করেন টার স্টেগেন, ‘আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছি, কিন্তু গোলটি ছিল আমার ভুলে, যা ঘটেছে তাতে আমি দলের জন্য সত্যিই দুঃখিত। আমি জর্ডিকে (আলবা) একটা পাস দিতে চেয়েছি। এটা না হওয়াটা ছিল ব্যর্থতা। এবং এ জন্য আমি আবারো দলের জন্য দুঃখিত যারা শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছে।’ কোচ এনরিকে অবশ্য টার স্টেগেনের ভুলকে বড় করে দেখছেন না। ভুলের দায় সবার ওপরেই ন্যস্ত করছেন তিনি। তবে সবচেয়ে বড় ভুল নিজের স্বীকার করে ৪৬ বছর বয়সী বলেন, ‘সবার জন্যই এই হার। প্রথমত আমার জন্য। দলের হারের জন্য আমিই দায়ী। এখন আমাদের উন্নতি করতে হবে।’
অথচ জিতলেই লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠার সুযোগ ছিল কাতালান দলটির। ড্রয়ের বৃত্তে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ আগের ম্যাচে ঘরের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করে বসে এইবারের সাথে। ফলে তারও আগের ম্যাচে ভ্যালেন্সিয়াকে ২-০ গোল হারিয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে আর নামতে হয়নি অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে। দুই মাদ্রিদের পয়েন্টই সমান ১৫ করে। গোল ব্যবধান এগিয়ে রেখেছে ডিয়েগো সিমিওনের দলকে। বার্সার সামনে সুযোগ ছিল সেল্টাকে হারিয়ে তাদের টপকে টেবিলের শীর্ষস্থান দখল করা। তা না হওয়ায় ১৩ পয়েন্ট নিয়ে নেমে যেতে হল ৪ নম্বরে। এক পয়েন্ট বেশি নিয়ে তিন নম্বরে আগের দিন আলাভেজকে ২-১ গোলে হারানো সেভিয়া। সমান ৭ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে ১০ নম্বরে সেল্টা।

একনজরে ফল
সেল্টা ভিগো ৪-৩ বার্সেলোনা
এস্পানিওল ০-০ ভিয়ারিয়াল
মালাগা ২-১ অ্যাথ.বিলবাও



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বার্সার ভুলে ভরা এক ম্যাচ
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ