মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আফগান তালেবানকে নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) -এর সাথে যুক্ত ‘মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসীদের’ একটি তালিকা হস্তান্তর করেছে পাকিস্তান। কারণ ইসলামাবাদ এবার সংগঠনটির বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে চায়। পাকিস্তান অভিযোগ করে আসছে যে, টিটিপি আফগানিস্তানকে সীমান্তে সন্ত্রাসী হামলার ষড়যন্ত্রের জন্য ব্যবহার করছে। এই অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিশন গঠন করেছেন আফগান তালেবান প্রধান হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা।
সম্প্রতি বিশ্বকে হতবাক করে দিয়ে বিদ্যুতের গতিতে কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবানরা। তার পরেই পাকিস্তান দলটির নেতৃবৃন্দের কাছে তালিকাটি হস্তান্তর করে। কাবুলে আফগান তালেবান সরকার গঠনের প্রস্তুতি নিলে টিটিপি এবং এর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইসলামাবাদ ইতোমধ্যেই গোষ্ঠীটির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। পাকিস্তানের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা তাদেরকে (তালেবান) বিষয়টি জানিয়েছি। এরপর আমরা তাদের কাছে আফগানিস্তান থেকে সক্রিয় টিটিপি সন্ত্রাসীদের তালিকা দিয়েছি।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, পাকিস্তান আশা করছে আফগানিস্তানে তালেবানের নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার টিটিপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
যদিও ওই কর্মকর্তা তালিকায় কাদের নাম রয়েছে তা জানাননি। তবে ধারণা করা হয় যে, পাকিস্তান টিটিপি প্রধান এবং তার অন্যান্য শীর্ষ কমান্ডারদের বিরুদ্ধে প্রত্যর্পণ বা ব্যবস্থা নিতে চেয়েছিল। আলাদাভাবে, তালেবান কর্তৃক গঠিত একটি কমিশন পাকিস্তান বিরোধী জঙ্গিদের প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ করতে এবং সীমান্তের ওপারে তাদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাতে কাজ করছে বলে জানিয়েছে ভয়েস অব আমেরিকা। ইসলামাবাদে সূত্রের বরাত দিয়ে, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, টিটিপি নেতাদেরকে তালেবানের কমিশন পাকিস্তানের সাথে তাদের সমস্যা নিষ্পত্তির করতে বলেছে এবং পাকিস্তান সরকারের সম্ভাব্য ক্ষমার বিনিময়ে তাদের পরিবারসহ দেশে ফিরে যেতে বলেছে। সূত্রগুলো টিটিপি’র কোনো দাবি পাকিস্তানের মেনে নেয়ার সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়েছে এবং জোর দিয়ে বলেছে যে, দেশের সংবিধান এবং আইনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সাধারণ ক্ষমার প্রস্তাব দেয়া হবে, যার জন্য জঙ্গিদের তাদের অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, দোহায় আফগান তালেবান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ২০২০ সালের ফেব্রæয়ারি চুক্তি অনুসারে, গোষ্ঠীটি আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আফগান মাটি ব্যবহার করে বৈশ্বিক নিরাপত্তা হুমকির জন্য অনুমতি দিতে পারে না। আফগান তালেবানের মুখপাত্র সুহেল শাহীনও গণমাধ্যম সংস্থাগুলোকে বলেছেন, ‘এই উদ্বেগ বৈধ এবং আমাদের নীতি স্পষ্ট যে আমরা কাউকে পাকিস্তান সহ প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে দেব না।’ তিনি বলেন, টিটিপি বা অন্য কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ‘আমাদের দেশে কোন স্থান থাকবে না এবং এটি সবার জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা।’ টিটিপি প্রধান সম্প্রতি একটি বিবৃতি দিয়ে আফগান তালেবানের বিজয়কে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং এর প্রধান আখুন্দজাদার প্রতি নতুন করে আনুগত্য প্রকাশ করেছেন। তালেবানরা দলটির সাবেক উপপ্রধান মৌলভী ফকির মুহাম্মদ সহ অনেক টিটিপি সন্ত্রাসীকে কারাগার থেকে ছেড়ে দিয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে গতকাল পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ জানিয়েছেন, তালেবানরা ইসলামাবাদকে আশ্বস্ত করেছে যে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তারা নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) আফগানিস্তানে পরিচালনা করতে দেবে না। তিনি বলেন, কিছু টিটিপি সদস্য যেমন মৌলভী ফকির মোহাম্মদকে তালেবানরা ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের পর ছেড়ে দিয়েছে। পাকিস্তান সরকার এই ইস্যুতে তালেবানের সাথে ‘সম্পূর্ণ যোগাযোগ’ রেখেছে। পাকিস্তানে যারা সন্ত্রাস করেছে তাদের তালিকা সেখানকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেয়া হয়েছে। রশিদ বলেন, ‘তালেবানরা আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে, তারা টিটিপিকে কোনোভাবেই আফগানিস্তানের ভ‚মি ব্যবহার করতে দেবে না।’ তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান আফগানিস্তানে শান্তি চায় কারণ এক দেশে শান্তি অন্য দেশে শান্তির সাথে সম্পর্কিত।
এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, পাকিস্তান আফগানিস্তানে আগত সরকারকে টিটিপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলবে। এফও মুখপাত্র বলেন, ‘টিটিপি কর্তৃক পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য আফগান মাটি ব্যবহার করতে না দেয়ার বিষয়টি পাকিস্তান পূর্ববর্তী আফগান সরকারের কাছেও বলেছে এবং এটি নিশ্চিত করার জন্য কাবুলে আগত নতুন সরকারের কাছেও বিষয়টি উত্থাপন করবে।’ প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জন্য প্রস্তুত করা একটি প্রতিবেদন অনুসারে, আফগানিস্তান সীমান্তে টিটিপির প্রায় ৬ হাজার প্রশিক্ষিত যোদ্ধা রয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, ‘ক্রমবর্ধমান অবিশ্বাস সত্তে¡ও, টিটিপি এবং তালেবানরা মূলত আগের মতোই সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছে।’ সূত্র : ডন, ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।