Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাজার বছরের পুরনো মসজিদের গৌরবগাঁথা

প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বিভিন্ন সময় ধর্মীয় কারণে চাইনিজ মুসলিমদের ওপর অত্যাচার-নিপীড়নের কথা শোনা যায়। রমজানে রোজা রাখার নিষেধাজ্ঞা থেকে শুরু করে নানান ধরনের মুসলিম রীতি পালনে পদে পদে বাধাগ্রস্থ হন তারা। আর এসব ঘটনায় দেশটি বিভিন্ন সময় সমালোচনার মুখে পড়েছে। তবে ইতিহাস বলে এক সময় চীনে মুসলিমদের বেশ প্রভাব-প্রতিপত্তি ছিল। মিং সাম্রাজ্যের ছয়জন জেনারেল ছিলেন মুসলিম। তাদের দাপটে শত্রু বাহিনী সব সময় তটস্থ থাকতো। দেশটিতে মুসলিমদের আগমন হয় হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মৃত্যর প্রায় শত বছর পর। তখন খলিফা উসমান (রা) শাসনামল। সিল্করুটে ব্যবসা সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে চীনের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়তে থাকে মুসলিমদের। তখন চীনে ট্যাং রাজবংশের শাসনামল। খলিফা ওসমানের প্রতিনিধি হিসেবে রাজা গোয়াওজংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রা.)। তিনি রাজাকে খলিফার একটি সৌজন্য পত্র প্রদান করেন। ওই পত্র পাঠ করে রাজা গোয়াওজং খুব সন্তুষ্ট হন। তিনি মুসলিমদের ব্যবসা ও অন্যান্য কাজ করার সুযোগে পাশাপাশি তাদের ধর্মীয় রীতি ও আচার-আচরু পালনে একটি মসজিদ নির্মাণ করে দেন। সেই মসজিদটি ঘিরেই আজ হুই সম্প্রদায়ের মুসলিমদের বাস। মসজিদটি নির্মাণ করা হয় চীনের শানক্সি প্রদেশের ঐতিহাসিক নগরী জিয়ানে। এ শহরটিতে অন্তত ২০ হাজার মুসলিমের বসবাস। দেশটির উত্তর পশ্চিমাঞ্চল থেকে তারা এখানে আসেন। আর দেশটিতে হুই সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছে প্রায় এক কোটি। এদের ভাষা মান্দারিন। জিয়ানের এই মসজিদটি ঘিরে বর্তমানে মুসলিম পরিবারগুলো বাস করে। জিয়ান শহরটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব থাকায় প্রতিদিন হাজারো পর্যটক পরিদর্শনে আসেন। পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ ওই ঐতিহাসিক মসজিদ ও এর আশপাশের মুসলিমদের দোকান ও খাবারের দোকান। কারু হাজারো বছরের চীনা মুসলিমদের নানা উপকরণের একটি উৎস সেখানকার দোকানগুলো। আর খাবারের দোকানে মিলে শতভাগ হালাল খাবার। এসব দোকানের বিক্রয়কর্মী মেয়েরা পুরো গা ঢেকে ও হিজাব পরিধান করে কাজ করেন। ঐতিহাসিক মসজিদটি এত বছরেও বেশ টিকে আছে। ট্যাং রাজবংশের সময় নির্মিত মসজিদটি শত শত বছর যাবৎ পরিবর্তন ও সংযোজনের পথ ধরে আজকের অবস্থানে এসেছে। এই মসজিদটির বেশিরভাগ উন্নয়ন সাধিত হয় মিং ও মাঞ্চু শাসনামলে। মসজিদটি একটি ইটের প্রাচীর দিয়ে ঘেরা হয়েছে। মসজিদটি চীনা ডিজাইনে বানানো। এর একটি চত্বর দিয়ে ভেতরে দিকে এগুতে হয়। তবে এই পথে থাকা আচ্ছাদন ও স্তম্ভগুলো বেশ সুন্দর। এগুলোতে রয়েছে সমৃদ্ধ ক্যালিগ্রাফিক নকশা ও পুষ্পশোভিত নিদর্শন। ভিন্ন ভিন্ন আচার পালনের জন্য প্রতিটি চত্বরে আলাদা কক্ষ রয়েছে। আর সর্বশেষ করিডোর দিয়ে মূল প্রার্থনা কক্ষ বা মসজিদে প্রবেশ করতে হয়। মসজিদের মূল ভবনটিও বেশ সুন্দর করে সাজানো। ঐতিহাসিক নিদর্শন সমৃদ্ধ ভবনটিতে চাইনিজ ও আরবি ভাষায় নানান নকশা করা রয়েছে। সিনহুয়া।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাজার বছরের পুরনো মসজিদের গৌরবগাঁথা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ