মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তান আশা করে যে তালেবানরা নারী ও মানবাধিকার বিষয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে এবং আফগানদের ভূমি অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেবে না। গত শুক্রবার পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া এই মন্তব্য করেছেন। এদিকে, আফগানিস্তানে দ্রæততম সময়ে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জাহিদ হাফিজ চৌধুরী নিয়মিত সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আমরা তালেবানের মুখপাত্রের প্রথম প্রেস ব্রিফিংয়ে দেয়া বিবৃতিও লক্ষ্য করেছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বিশেষ করে আফগানিস্তানকে সন্ত্রাসের আস্তানায় পরিণত না হওয়া, আফগান ও বিদেশীদের জীবন ও সম্পদের সুরক্ষা, নারীসহ সকল আফগানদের অধিকারের প্রতি সম্মান, শিক্ষার অধিকার এবং রাজনৈতিক সমঝোতার বিষয়ে তার মন্তব্য লক্ষ্য করেছি।’ ‘এগুলো আসলেই ইতিবাচক ইঙ্গিত,’ কাবুলে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ব্যাপক ভিত্তিক সরকার থাকবে বলে আশা প্রকাশ করে মুখপাত্র উল্লেখ করেন।
জাহিদ হাফিজ চৌধুরী বলেন, কাবুলে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত তালেবান নেতাদের, সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই, ডক্টর আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ এবং অন্যান্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। আফগানিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের একটি প্রতিনিধি দল, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী এবং রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্বকারীরা পাকিস্তান সফরেও ছিলেন। মুখপাত্রের মতে, ‘এই সমস্ত বৈঠকের সময় আমরা আফগানিস্তানের বর্তমান এবং ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি এবং সামনের পথ সম্পর্কে পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গি ভাগ করেছি।’ তিনি বলেন, আফগানিস্তান একটি প্রতিবেশী দেশ হওয়ায়, তাদের সাথে ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত ভাগ করায় এবং ৪০ লাখের বেশি আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার কারণে আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য পাকিস্তানের আগ্রহ এবং আকাঙ্খা ছিল।
মুখপাত্র ক্ষমতার দ্রæত ও মসৃণ উত্তরণের গুরুত্ব এবং সব আফগান পক্ষকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য জড়িত এবং কাজ করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানে টেকসই শান্তি, নিরাপত্তা এবং উন্নয়ন অর্জনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত অংশগ্রহণও গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে, আমরা আফগানিস্তানে আমাদের উল্রেখ করা উদ্দেশ্যগুলোকে এগিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে একসঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এদিকে, গত শুক্রবার পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি (পিএমএ) কাকুল-এ পতাকা উপস্থাপনা প্যারেডে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাজওয়া। সেখানে দেয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, পাকিস্তান আফগানিস্তান এবং এই অঞ্চলে শান্তি চায়। প্রতিবেশী দেশে কয়েক দশক ধরে সংঘর্ষের সমাধানের জন্য আফগান নেতৃত্বাধীন প্রক্রিয়াকে সমর্থন করতে তার ‘আন্তরিক প্রচেষ্টা’ দ্বারা তারা এর প্রমাণও দিয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য পাকিস্তান তার ভূমিকা অব্যাহত রাখবে, যা সমগ্র অঞ্চলের জন্য বিশেষ করে আফগানদের জন্য ‘অত্যন্ত প্রয়োজন’। তিনি বলেন, আমরা আশা করি তালেবান বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে দেয়া নারী ও মানবাধিকার সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে এবং আফগান ভূখন্ড অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে না।
জেনারেল বাজওয়া কাশ্মীর ইস্যু নিয়েও কথা বলেন। ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের (আইওকে) জনগণ ‘মানব ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ সামরিক দখলের’ অধীনে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাকিস্তানিদের হৃদয় কাশ্মীরে তাদের ভাইদের সাথে স্পন্দিত হয় এবং তারা অধিকৃত উপত্যকার জনগণের সাথে ‘ছিল এবং সবসময়’ থাকবে। তিনি বলেন, ‘কাশ্মীর ইস্যুর ন্যায্য ও শান্তিপূর্ণ সমাধান ছাড়া আঞ্চলিক শান্তি অধরা থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, উপমহাদেশের জনগণ অবশ্যই ভুলে যাবে না যে, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের চ‚ড়ান্ত লক্ষ্য ছিল ‘একটি স্বাধীন ও সমৃদ্ধ অঞ্চল যেখানে সবাই সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারে’।
জেনারেল বাজওয়া বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী চ্যালেঞ্জগুলোর বিষয়ে ‘সম্পূর্ণরূপে সচেতন’ এবং তাদের মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত। তিনি বলেন, ‘আমরা মূল দক্ষতা এবং প্রযুক্তির উপর মনোযোগ দিয়ে দেশের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করব।’ অনুষ্ঠানে ক্যাডেটদেরকে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, ‘কেবল শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনীই মাতৃভ‚মির সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিতে পারে।’ তিনি তাদের প্রশিক্ষণে মনোনিবেশ করার এবং সর্বশেষ প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী তার তরুণ অফিসারদের জন্য গর্বিত যারা মাতৃভ‚মির স্বাধীনতা রক্ষায় সাহস এবং নিষ্ঠার সাথে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছে।’ সূত্র : ডন, ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।