Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হু হু করে বাড়ছে তিস্তার পানি, নিরাপদ স্থানে ছুটছে মানুষ

রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ আগস্ট, ২০২১, ৭:৪২ পিএম

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে আবারো ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করছে তিস্তা নদী। শুক্রবার ভোর রাত থেকে হু হু করে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। ইতিমধ্যে ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দিতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে। বন্যার আশঙ্কায় নদীতীর ও চরাঞ্চলের মানুষ নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে সহস্রাধিক পরিবারের বসতবাড়িতে বানের পানি ঢুকে পড়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, শুক্রবার মধ্য রাত থেকেই তিস্তার পানি হু হু করে বাড়তে শুরু করে এবং সকাল থেকে ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। ওই পয়েন্টে বিপদসীমার লেভেল ৫২ দশমিক ৬০ মিটার। বেলা ২টা পর্যন্ত একই লেভেলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহিত হতে থাকে।

এতে করে নীলফামারী জেলার জলঢাকা, ডিমলা, লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম, কালিগঞ্জ, হাতিবান্ধা, আদিতমারী উপজেলা, রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার নদী তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চলের মানুষ তাদের ঘর-বাড়ি থেকে মালামাল সরিয়ে নিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে।

ইতিমধ্যে লালমনিরহাট জেলার পাট গ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, ডাউয়াবাড়ী, পাটিকাপাড়া, কালীগঞ্জ উপজেলার ডাউয়াবাড়ী, নোহালী, ভোটমারী ও চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার পলাশী ও মহিষখোচা, সদর উপজেলার রাজপুর, খুনিয়াগাছ, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তাবাজারসহ নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। নদী ভাঙনের ফলে এসব এলাকার প্রায় পাচঁশতাধিক পরিবার ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে।

নীলফামারী উপজেলার ডিমলা উপজেলার ঝাড় শিঙ্গেশ্বর,কিছামত ছাতনাই, পূর্ব খড়িবাড়ি, পশ্চিম খড়িবাড়ি, চর খড়িবাড়ি, তিস্তা বাজার, তেলির বাজার, ঝুনাগাছ, বাইশ পুকুর, ভেন্ডাবাড়ি, চাঁপানীর ছাতুনামা কেল্লাপাড়া, জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘন্টা, হাবু, ছোট রুপাই, লক্ষীটারী, কোলকোন্দ, বড়াইবাড়ি, নোহালী, কচুয়াসহ কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ, টেপামধুপুর, মধুপুর এবং পীরগাছা উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সেখানকার মানুষ বাড়ির মালামাল ও গবাদি পশু নিয়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে শুরু করেছে। নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে এসব এলাকায় আবারো নতুন করে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এসব এলাকার অধিকাংশেই ইতিমধ্যে বানের পানি ঢুকে পড়েছে। অনেক বাড়িই এখন হাঁটু পানির নিচে অবস্থান করছে। লক্ষীটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি, শংকরদহ, বাগেরহাট আশ্রয়ন, পূর্ব ইচলি, কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা, মটুকপুর, চিলাখাল, খলাইরচরসহ নোহালীর মিনার বাজার, কচুয়াচর, বৈরাতী বাঁধের ধার, চর নোহালী, বাগডহরা, মর্নেয়া ইউনিয়নের মর্নেয়াচর, তালপট্টি, আলাল চর, নরসিং চর, গজঘন্টা ইউনিয়নের কালির চর, ছালাপাক, গাউছিয়া বাজার, জয়দেব, মইশাসুর, রামদেব চরে ৫শসহ আলমবিদিতর ও গঙ্গাচড়া ইউনিয়নের নিম্ন এলাকার ৫/৬শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা জানিয়েছেন, শুক্রবার ভোর রাত থেকে তিস্তার পানি বেড়ে চলেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রেখে তিস্তা অববাহিকা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রংপুর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ