নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশেষ সংবাদদাতা : বন্ধু নাসিরের সঙ্গে লড়াইটা বছরের পর বছর চালিয়ে যাচ্ছেন সাব্বির। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকে ২৫ বলে ৪৪ রানের ম্যাচ উইনিং ইনিংসে দ্য ফিনিশার চরিত্র মেলে ধরায় নাসিরের জায়গাটি নড়বড়ে করে দিয়েছেন সাব্বির রহমান রুম্মান। সেই থেকেই ৫০ ওভারের ক্রিকেটে শ্লগে মার মার কাট কাট ব্যাটিংয়ে কখনো ৭, কখনো ৮, কখনোবা ৬ নম্বর পজিশনে ব্যাটিংটা হয়ে গেছে তার নির্ধারিত। তবে ঘরোয়া ক্লাব ক্রিকেটে তিন নম্বরে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিংয়ের অতীত আছে যে ছেলেটির, এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ৩ নম্বরে নামিয়ে দিলে কেমন হয়? এই আইডিয়া থেকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) তৃতীয় সংস্করণে ইলিমিনেটর রাউন্ডের ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটের বিপক্ষে রুম্মানকে নামিয়ে দিয়েই বরিশাল বুলস অফিসিয়ালদের দিয়েছেন আস্থার প্রতিদান। তার ৪১ রানের ইনিংসে ভর করেই ফেভারিট ঢাকা ডায়নামাইটসকে হারিয়েছে বরিশাল বুলস। কোয়ালিফাইয়ার ‘টু’ তে রংপুর রাইডার্সের ১৬১’র চ্যালেঞ্জে হেসে ফাইনালের টিকিট পেয়েছে বরিশাল বুলস রুম্মানের ৪৯ বলে ম্যাচ উইনিং ইনিংসে।
ঘরোয়া টুয়েন্টি-২০তে তিন নম্বরে চেনানো রুম্মানকে তাই আন্তর্জাতিক টি-২০তে এই পজিশনে করেছেন পরীক্ষা হাতুরুসিংহে এবং সেই পরীক্ষায় সফল রুম্মান। এ বছরে টি-২০তে বাংলাদেশের হয়ে যাওয়া ১৬টি ম্যাচের সব ক’টিতেই নাম্বার থ্রি-তে করেছেন ব্যাট রুম্মান, মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৫৪ বলে ম্যাচ উইনিং ৮০ রানের ইনিংসটি সত্যিই মনে রাখার মতো। ৫০ ওভারের ম্যাচে যেখানে তিন নম্বর নিয়ে হচ্ছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। কখনো ইমরুল, কখনো বিজয়, কখনোবা মাহামুদুল্লাহকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে তিন নম্বরে। অথচ কেন এই পজিশনে বিবেচ্য হচ্ছেন না রুম্মান? আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে এ প্রশ্নই মিডিয়া উঠিয়েছে। কিন্তু চিরাচরিত ফর্মূলা ভেঙ্গে এক দিবসীয় ক্রিকেটের পরীক্ষায় রুম্মানকে তিন নম্বরে নামিয়ে দেয়া ঝুঁকিপূর্ণÑ সেই বদ্ধমূল ধারণা থেকে বের হতে পারেনি হাতুরুসিংহে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ২ ম্যাচে। প্রথম ম্যাচে তিন নম্বরে নামিয়ে দেয়া ইমরুল ফিরে গেছেন ৩৭ রানে। সেই অপবাদে পরবর্তী ম্যাচে জায়গা হারিয়েছেন ইমরুল, ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন এনে ৪ নম্বর থেকে তিনে নামিয়ে দেয়া হয়েছে মাহামুদুল্লাহকে। তাতেও হয়নি লাভ, ২৫ রানে ফিরে গেছেন তিনি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে।
সিরিজের শেষ ম্যাচে এসে ভুলটা ভাঙল টিম ম্যানেজমেন্টের। শুধু টি-২০ই নয়, ৫০ ওভারের ম্যাচেও যে তিন নম্বরে সময়োচিত ব্যাটিংয়ের দাবিটা মেটাতে পারেনÑ ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৬তম ম্যাচে এসে প্রথমবারের মতো সেই দায়িত্ব পেয়েই দিয়েছেন প্রমাণ রুম্মান। ওয়ানডে ম্যাচে ওয়ান ডাউনে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমেই উদযাপন করেছেন ফিফটি! ৭৯ বলে ৬৫ রানের ঝকঝকে ইনিংস দিয়েছেন উপহার। যে ইনিংসে ছিল ৬ বাউন্ডারির পাশে দৌলত জাদরানকে দর্শনীয় পুশ শটে মিড উইকেট, সামিউল্লাহ শেনওয়ারী এবং রহমত শাহকে লং অনের উপর দিয়ে তিন তিনটি ছক্কা! খেলতে এসে শুরুতে করেছিলেন ভুল, দৌলত জাদরানের বলে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এসে ভুলের ফাঁদে পা দিয়েও গেছেন বেঁচে। এর পর চেনা সাব্বিরকেই দেখেছে দর্শক। তামীমের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় ১৪০ রানের পার্টনারশিপে রুম্মানের ৬৫ই ম্যাচে বাংলাদেশকে দেখিয়েছে বড় স্কোরের স্বপ্ন। যতোক্ষণ ছিলেন উইকেটে, ততোক্ষণ দিয়েছেন আস্থা। ইনিংসের মাঝপথে রানের চাকা সচল রাখতে খেলেছেন মাঠজুড়ে। তামীম-রুম্মানের পার্টনারশিপে ওভারপ্রতি রান উঠেছে ৫.৬৭। যার মধ্যে ২১ থেকে ৩০Ñএই ১০ ওভারে যোগ হয়েছে ৬০ রান। রহমত শাহ’র বলে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে প্রলুদ্ধ হয়ে শর্ট থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ওয়ানডের এই মেকশিপ্ট টপ অর্ডার। ২০১২ সালে ভারতের বিপক্ষে মিরপুরে তামীম-জুনায়েদের ১১২’র পর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১শ’র অতীত ছিল না। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তামীম-রুম্মানের ১৪০ রান ৩১৫টি ওয়ানডে ম্যাচে এই জুটির তৃতীয় সর্বোচ্চ। ২০১০ সালে শ্রীলংকার ডাম্বুরায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ইমরুল-জুনায়েদের ১৬০ এখনো এই জুটির সর্বোচ্চ, ২০০৫ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়ী ম্যাচে রফিক-আফতাবের ১৫০’র পর রাখতে হচ্ছে গতকাল তামীম-রুম্মানের ১৪০ রানের পার্টনারশিপকে।
টি-২০তে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে ১৯ ইনিংসে ৫০৪ রানে রেখেছেন এই পজিশনে আস্থার স্বাক্ষর। ওয়ানডে ম্যাচে প্রথমবারের মতো তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ের সুযোগকেও লাগিয়েছেন কাজে। এর পরেও কি তিন নম্বরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে টিম ম্যানেজমেন্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।