বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া ও গুরুদল গ্রামের সরকারী কাউনিয়া খাল দখল মুক্ত করে বাঁধ কেটে দেওয়ায় জলাবদ্ধ মুক্ত হয়েছে ১০ হাজার একর কৃষি জমি। শুক্রবার সকালে ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সদস্য উদ্যোগ নিয়ে শত শত মানুষের উপস্থিতিতে অবৈধ ভাবে দখল করা খাল উদ্ধার করে বাঁধ কেটে দেন তারা।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া ও গুরুদল গ্রামের মাঝ খান দিয়ে কাউনিয়া নামে একটি সরকারী খাল প্রবাহিত হয়ে জলেখার ৫ ব্যান্ডের সুইস গেটের সাথে মিলিত হয়েছে। এই দুই গ্রামের পানি নিষ্কাষনের একমাত্র কাউনিয়া খালটিতে স্থানীয় বাসিন্দা নাননু মোল্লা গত ১০ বছর ধরে অবৈধ ভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে আসছে। খালের গতি পথের ৫টি জায়গায় বাঁধ এবং একটি কালভাটের মুখ বন্ধ করে মাছ চাষ করায় গত কয়েকদিনের অতি এবং ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ওই এলাকা ৩-৪ ফুট পানিতে তলিয়ে জায়। দেখা দেয় মারাত্মক জলাবদ্ধতা। তলিয়ে জায় ১০ হাজার একর কৃষি জমি। বাঁধের কারনে পানি নামতে না পারায় গ্রামের অধিকাংশ বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে ব্যাপকভাবে জলাবদ্ধার সৃষ্টি হয়। পানির কারনে কৃষকরা হালচাষ করতে না পারায় প্রাায় ১০ হাজার একর জমি অনাবাদী থাকার আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পরে স্থানীয় কৃষকরা। এ নিয়ে জাতীয় এবং স্থানীয় বিভিন্ন দৈনিকে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ করায় টনক নরে স্থানীয় প্রশাসন এবং জন প্রতিনিধিদের। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃধবার সকালে সরেজমিনে তদন্ত করতে জান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিএম রেজাউল করিম। তিনি ঘটনার সত্যতা পেয়ে বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রশাসনের নিকট বাঁধ কাটার সুপারিশ করে প্রতিবেদন পেশ করেন। এ খবর ছড়িয়ে পরায় ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক ও জেলা পরিষদের সদস্য এ্যাডভোকেট আরিফুল হাসন বাঁধ কাটার উদ্যোগ নেন। তারা শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শত শত মানুষের উপস্থিতিতে সরকারী কাউনিয়া খালের অবৈধ ৫টি বাঁধ কেটে এবং একটি কালভার্টের বন্ধ মুখ খুলে দিয়ে জলাবদ্ধ মুক্ত করেন হলদিয়া ও গুরুদল গ্রামের ১০ হাজার একর কৃষি জমি এবং দুই গ্রামের শত শত বাসিন্দাদের।
হলদিয়া গ্রামের বাসিন্দা রুহুল আমিন প্যাদা বলেন, বাধ কাইট্যা দেওয়ায় মোরা এহন আল চইতে পারমু। মোগো জমিতে আর পানি জইম্যা থাকপে না। নাননু মোল্লা সরকারী খালে ঘের বানাইয়া মোগো ব্যামালা ভোগাইছে। আল্লায় যেন হ্যার বিচার হরে।
গুরুদল গ্রামের খালেক মোল্লা বলেন, নাননু মোল্লা বান দিয়া পানি আটকাইয়া থোয়ায় মোগে হগল জমি তলাইয়া জাওয়ায় এতদিন আল চইতে পারি নাই। চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সদস্য বান কাইট্যা মোগো অনেক হুগার করছে।
ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক বলেন, নাননু মোল্লা কাউনিয়া খালে অবৈধ ভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় হাজার হাজার একর কৃষি জমি পানিতে তলিয়ে জাওয়ায় কৃষকের হাল চাষ বন্ধ হয়ে জায়। এ খবর জানতে পেরে শুক্রবার সকালে দুই গ্রামের মানুষ নিয়ে খালের অবৈধ বাঁধ কেটে দেওয়া হয়। এখন ওই দুই গ্রামের মানুষ জলাবদ্ধ মুক্ত।
জেলা পরিষদের সদস্য এ্যাডভোকেট আরিফুল হাসান জানান, হলদিয়া ও গুরুদল গ্রামের কাউনিয়া খালে জোতদার খারাপ প্রকৃতির লোক নাননু মোল্লা অবৈধ ভাবে বাঁধ দিয়ে ১০ বছর ধরে মাছ চাষ করে ভোগ দখল করে আসছে। এতে বৃষ্টির পানিতে দুই গ্রাম জলাবদ্ধতায় তলিয়ে জায়। শুক্রবার সকালে গ্রাম বাসীদের সাথে নিয়ে বাঁধ কেটে জলাবদ্ধ মুক্ত করা হয় দুই গ্রামের হাজার হাজার একর কৃষি জমি ও বাসিন্দাদের।
আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিএম রেজাউল করিম জানান, হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া ও গুরুদল গ্রামের মাঝ খান দিয়ে প্রবাহিত সরকারী কাউনিয়া খালে ৫টি বাঁধ এবং একটি কালভর্টের মুখ বন্ধ করে অবৈধ ভাবে মাছ চাষ করে আসছে স্থানীয় বাসিন্দা নাননু মোল্লা। সরেজমিনে তদন্ত করে এর সত্যতা পাই। শুক্রবার সকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নাননু মোল্লার নিকট থেকে খাল উদ্ধার করে বাঁধ অপসারন করে পানি প্রবাহ নিশ্চিত করায় এখন জলাবদ্ধ মুক্ত হয়েছে ওই দুই গ্রামের ১০ হাজার একর কৃষি জমি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।