পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সিআরবি প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে হাসপাতাল নির্মাণ বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে প্রতিবাদী নাগরিক সমাজ। একই দাবিতে আজ বুধবার থেকে লাগাতার প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচির ডাক দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউট নির্মাণ প্রকল্প সিআরবি থেকে সরিয়ে রেলওয়ের অন্য কোন জায়গায় স্থানান্তরের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান প্রবীণ সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেন, যারা সিআরবির প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে হাসপাতাল নির্মাণের পক্ষ নেবেন, তারা চট্টগ্রামের তথা দেশের শত্রæ। সিআরবি রক্ষায় চট্টগ্রামের মানুষ তথা সারা দেশবাসী এখন ঐক্যবদ্ধ। চট্টগ্রামের ফুসফুস সিআরবি রক্ষায় আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চাই। তিনি বলেন, আমরা হাসপাতাল চাই। তবে সেটা কোনভাবেই সিআরবি ধ্বংস করে নয়। যারা এর পক্ষ নেবেন তারা চট্টগ্রাম তথা দেশের শত্রæ হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, মো. ইউনুস, আওয়ামী লীগ নেতা মফিজুর রহমান, নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার, প্রফেসর মো. হোসাইন কবির, প্রফেসর ড. ইদ্রিস আলী, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বলেন, মহানগরীর হৃৎপিন্ডে অবস্থিত, শত বছরের হাজার হাজার বৃক্ষরাজী শোভিত, ছোটবড় পাহাড়-টিলা নিয়ে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্য ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে সিআরবি। নগরীতে এমন কোন উন্মুক্ত স্থান আর নেই, যেখানে নগরবাসী বুকভরে নি:শ্বাস নিতে পারেন। পাহাড় ও প্রাচীন বৃক্ষবেষ্টিত সিআরবিকে চট্টগ্রামবাসী শ্বাস নেয়ার উন্মুক্ত সবুজ স্থান হিসেবে মনে করে। সারা বছর ধরেই সেখানে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সিআরবি এখন চট্টগ্রাম নগরীর সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র। সিআরবি ১৯৭টি প্রজাতির উদ্ভিদসহ হরেক পাখ-পাখালি ও জীবজন্তুর আবাসস্থল। এখানে হাসপাতাল হলে প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস হবে।
সিআরবিকে ঘিরে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন এবং মহান স্বাধীনতা আন্দোলনের ঐতিহাসিক স্মৃতি ম্লান করার চক্রান্ত চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুকৌশলে চট্টগ্রামের হৃদপিন্ড ধ্বংস করা হচ্ছে। হাসপাতাল নির্মাণের নির্ধারিত স্থানেই তিনশ শতবর্ষী গাছ আছে। প্রস্তাবিত স্থানটিতে রয়েছে অসংখ্য শহীদের কবর। হেরিটেজ ঘোষিত সিআরবিতে বাণিজ্যিক স্থাপনা বানিয়ে স্বাধীনতার মহান বীরসেনানীদের স্মৃতি ম্লান করার আয়োজন চলছে।
চট্টগ্রামের গণমানুষের তীব্র আন্দোলনের মধ্যেও সেখানে হাসপাতাল নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি সুস্পষ্ট আইনের লঙ্ঘন। হেরিটেজ জোনে স্থাপনা নির্মাণ বেআইনি এবং অসাংবিধানিক। রেল কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পের শুরু থেকেই মিথ্যা, জালিয়াতি এবং তথ্য গোপনের আশ্রয় নিয়েছে। হাসপাতাল নির্মাণের টেন্ডারে স্থান হিসেবে সিআরবির নাম উল্লেখ ছিল না। অথচ চুক্তিতে স্থান হিসেবে সংরক্ষিত সিআরবিকেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় চট্টগ্রামবাসী মর্মাহত ও সংক্ষুব্ধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ বিরোধী আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছে। আমরা মনে করি পরিবেশ বান্ধব প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের গণমানুষের এ দাবি মেনে নিয়ে হাসপাতাল প্রকল্পটি সিআরবি থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা দেবেন। সিআরবি সুরক্ষার দাবিতে আজ থেকে প্রতিদিন বিকেলে সিআরবি সাত রাস্তা মোড়ে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। একই স্থানে আগামী ২৪ আগস্ট সিআরবি সুরক্ষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. গাজী সালেহ উদ্দিনের স্মরণসভা অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।