Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

যে কারণে আত্মসমর্পণে বাধ্য হচ্ছে আফগান বাহিনী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০২১, ২:৩৮ পিএম | আপডেট : ২:৩৮ পিএম, ৯ আগস্ট, ২০২১

যুদ্ধরত আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে আফগান সেনাবাহিনী এবং পুলিশ কতটা দিশেহারা হয়ে পড়েছে তার খবর প্রতিদিনই এমনকি পশ্চিমা মিডিয়াতেও প্রকাশিত হচ্ছে। শত শত সৈনিক লড়াই না করেই তালেবানের হাতে অস্ত্র, যানবাহন, রসদ তুলে দিয়ে ইউনিফর্ম খুলে চলে যাচ্ছে। তারা তালেবানকে আলিঙ্গন করছে। অনেক সময় তালেবানরা তাদের পকেটে কিছু টাকা গুঁজে দিয়ে বাড়িতে চলে যেতে বলছে।

মাসখানেক আগে এক হাজারেরও বেশি সৈন্য দলত্যাগ করে তাজিকিস্তানে পালিয়ে গেছে। এসব আত্মসমর্পণের ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে শহরের বাইরে যেসব সৈন্যরা বিভিন্ন ফাঁড়ি, তল্লাশি চৌকি পাহারা দিচ্ছে তারা আরও বেশি অসহায় বোধ করছে।
পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের সুপরিচিত বিশ্লেষক ও ইসলামাবাদের সিনিয়র সাংবাদিক জাহিদ হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, আফগান সেনাবাহিনীর পেছনে যুক্তরাষ্ট্র অনেক টাকা খরচ করেছে, কিন্তু তাদের পেশাদারিত্ব এখনও দারুণভাবে প্রশ্নবিদ্ধ।
জাহিদ হোসেন বলেন, তালেবানের মত একটা অত্যন্ত পটু, অভিজ্ঞ একটি লড়াকু গোষ্ঠীর সাথে যুদ্ধের জন্য যে সরঞ্জাম, রসদ, মনোবল প্রয়োজন তা আফগান সেনাবাহিনীর নেই।
তার মতে, এগুলোর সাথে রয়েছে জাতিগত বিভেদের সমস্যা। সিংহভাগ সিপাহী পশতুন জাতিগোষ্ঠীর, কিন্তু সিনিয়র অফিসারদের সিংহভাগ জাতিগত তাজিক। তার ভাষায়, ‘এ নিয়ে একটা রেষারেষি, মনোমালিন্য সবসময় রয়েছে। আর সবচেয়ে বড় কথা, আফগানিস্তানের শাসক এলিটদের মধ্যে যে অব্যাহত বিভেদ সেটি বিশ্বের কোনো জাতীয় সেনাবাহিনীর মনোবলের জন্য নেতিবাচক।’
পাশাপাশি রয়েছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব পর্যায়ে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ। এটা প্রায় ওপেন সিক্রেট যে কাগজে কলমে সেনাবাহিনীর যে সংখ্যা দেখানো হয়, প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে কম। তালিকায় ভুতুড়ে সৈনিকদের বেতন-ভাতা সিনিয়র কমান্ডারদের পকেটে যায়- এমন অভিযোগ প্রচুর।
এমন খবরও দেশ-বিদেশের মিডিয়ায় বেরিয়েছে যে, যুদ্ধাহত অনেক সেনা সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসা বা এমনকি খাবারের অভাবে মারা গেছে। অনেক সময় লড়াইতে নিহত এবং আহত সহযোদ্ধাদের হাসপাতালে নেওয়ার যানবাহন পর্যন্ত সৈন্যরা পায় না। এসব নিয়ে সাধারণ সৈনিকদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।
পাশাপাশি, এটাও সত্যি যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যে মাত্রায় প্রাণহানির শিকার আফগান সেনাবাহিনী ও পুলিশ হয়েছে, তা যে কোনো দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মনোবল ভাঙার জন্য যথেষ্ট।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে তালেবানের সাথে লড়াইতে যেখানে ৭ হাজার ন্যাটো সৈন্য মারা গেছে, সেখানে ২০০৭ সাল থেকে আফগান পুলিশ ও সেনা সদস্যদের মৃত্যুর সংখ্যা কমপক্ষে ৭৩ হাজার। মৃত্যুর এই ভীতি আত্মসমর্পণের প্রবণতা বাড়িয়ে দিয়েছে।
পরিস্থিতি এতই নাজুক হয়ে পড়েছে যে, উপায়ান্তর না দেখে কাবুলের সরকার এখন তালেবান বিরোধী বিভিন্ন উপজাতীয় মিলিশিয়াদের সাহায্য চাইছে। অথচ গত বছর পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি এসব মিলিশিয়া গোষ্ঠীদের নিরস্ত্র করার কথা ভাবছিলেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা



 

Show all comments
  • মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ৯ আগস্ট, ২০২১, ৫:৩৯ পিএম says : 0
    যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খমতা তালেবানদের দিয়ে দিন,অযথা নিরীহ জনগণ মেরে লাভ নেই ।তালেবান আফগানিস্তান মুক্তি যোদ্ধা এদের কেউ রুখতে পারবে না,তারা যাই করতেছে দেশের সারথের জন্য করতেছে,আর বর্তমান সরকার যাই করতেছে শুধু আমেরিকা কে খুশি করার জন্য। কিন্তু তাদের এই আশা পুরন হবে না ,তালেবানদের কাছে রাশিয়া পযন্ত হার মেনেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • সোহাগ তানভীর ৯ আগস্ট, ২০২১, ৭:০৭ পিএম says : 0
    যুদ্ধ নয় শান্তি চাই
    Total Reply(0) Reply
  • Mufti Elias Sultani ৯ আগস্ট, ২০২১, ৭:০৭ পিএম says : 0
    আত্মসমর্পণ না করে উপায় নাই।
    Total Reply(0) Reply
  • কাজী সানাউল্লাহ ৯ আগস্ট, ২০২১, ৭:০৮ পিএম says : 0
    আত্মসমর্পণ করাই উত্তম
    Total Reply(0) Reply
  • Saiful islam ৯ আগস্ট, ২০২১, ৮:৫১ পিএম says : 0
    Taleban jindabd
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Shahjalal ৯ আগস্ট, ২০২১, ৯:১২ পিএম says : 0
    শান্তিকামী বাহিনীর বিজয় হোক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ