সিআরবি থেকে সরকারি-বেসরকারি অংশদারিত্বে (পিপিপি) হাসপাতাল নির্মাণের প্রকল্পটি সরিয়ে নিতে রেলমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছে আন্দোলনরত নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রাম। নাগরকি সমাজের চেয়ারম্যান সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেন এবং সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল সাক্ষরিত এক চিঠিতে এ দাবি জানানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়- নগরীর ফুসফুস খ্যাত সিআরবিতে ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের যে হাসপাতাল ও কলেজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, তাতে চট্টগ্রামের আপামর জনতা দ্বিমত পোষণ করছে। ২০০৮ সালের ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ) সিআরবিকে কালচার অ্যান্ড হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণার বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়, এটি সংরক্ষণের জন্য আটটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। সিআরবিতে বাণিজ্যিক কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না এবং নির্দেশনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব রেলওয়ে ও সিডিএসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার বলে ড্যাপ এ উল্লেখ আছে।

এছাড়া এ প্রকল্পের জন্য ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর ইনভাইটেশন ফর বিড (আইএফবি) নোটিসে যে তফসিল দেওয়া হয়, তাতেও প্রকল্প স্থান হিসেবে সিআরবির কথা উল্লেখ ছিল না। হাসপাতালটি রেলওয়ের কোনো এক স্থানে নির্মাণ করা হবে বলে আইএফবিতে বলা হয়েছিল। পরে চুক্তিতে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য সিআরবিকে স্থান হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করায় চট্টগ্রামবাসী মর্মাহত ও সংক্ষুব্ধ।

প্রকল্প স্থানটিতে চবির প্রথম জিএস বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবদুর রবসহ ১১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধি রয়েছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, চট্টগ্রামবাসী মনে করে, এই সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের প্রক্রিয়ায় অনেক তথ্য রেলওয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

এদিকে, সমবেত লালকার্ড প্রদর্শন ও বাঁশি বাজিয়ে সিআরবি এলাকায় ইউনাইটেড হাসপাতাল প্রকল্প নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে সিআরবি রক্ষা মঞ্চ। সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে গতকাল বিকেলে সিআরবি সাত রাস্তার মোড়ে এ লালকার্ড প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়। এ সময় মঞ্চের সমন্বয়ক ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, আজ লালকার্ড দেখাচ্ছি। কারণ সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ বেআইনী, অসাংবিধানিক, প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসকারী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী। এতে বক্তব্য রাখেন মঞ্চের সহ সমন্বয়ক রাজা মিঞা, গণসংহতির সমন্বয়কারী হাসান মারুফ রুমি। সমাবেশ থেকে আজ বিকাল ৪ টায় সাইকেল র‌্যালি সফল করার আহবান জানানো হয়।