চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
পরকীয়া একটি মারাত্মক ব্যাধি। একটি পরিবারের জন্য মহা হুককি স্বরূপ হচ্ছে এ-পরকীয়া। পরকীয়ার এ-জের ধরে কত সংসার ভেঙে খান খান হয়ে গেছে।জীবন হয়ে যাচ্ছে একেবারে হাহাকার।এভাবে চললে যে, জীবনের প্রতিটি পাঠ একেবারে ধ্বংস স্তুপে পরিণত হবে।তা আমাদের বিবেচনা করার ব্যাপার নয় কী? প্রতুত্তরে আমরা বলবো অবশ্যই বিবেচনা করার ব্যাপার।
স্ত্রীর প্রতি স্বামী অসন্তুষ্টি। স্বামীর প্রতি স্ত্রীও বেমান ভাবেই রাগান্বিত। পাশের বাড়ির সুন্দরী মেয়ের সাথে সুযোগ পেলেই জড়িয়ে যাচ্ছে পরকীয়ার মত অবাধ মেলে মেশায়। স্বামীকে একান্ত কাছে না পেয়ে স্ত্রী পরকীয়ার বিষবাষ্পে নিজের গা ডুবিয়ে দিচ্ছে।যেনো নিজের গাকে নিজেই উনুনের অগ্নিকান্ডে জ্বালিয়ে ছাই করে দেওয়ার মত অবস্থা।এব্যাপারে দিশেহারা হয়ে গেছে প্রায় কিছু মানুষ।ব্যক্তি জীবন একেবারেই অতিষ্ঠ হয়ে গেছে তাদের। জীবন হয়ে গেছে কলুষে বিবর্ণ,ধূসরতায় গিয়ে পৌঁছলো জীবনের রূপ এবং রঙ। অবচেতনার দিকে ধাবিত হচ্ছে সময়ের কিছু মুহূর্ত। আবার পারিবারিক জীবনেও কিছু মানুষ শান্তির হিমেল বাতাস লাগাতে চাই তাদের গায়ে।
কিন্তু আমাদের রগ রেশায় এ-ব্যাধিটা যে একেবারে মিশে গেছে। স্ত্রীর হাতে স্বামী নিহত আবার স্বামীর হাতেও স্ত্রী নিহত হচ্ছে প্রায় প্রতিদিন। খবরের পাতা উল্টোলেই বের হয়ে আসে পরকীয়ার জেরে একে অপরের হাতে হত্যার কথা। এ ব্যাধির উৎসের মূল হচ্ছে একে অপরকে সময় না দেওয়া এবং স্বামী স্ত্রী দুজন দুজনকে মূল্যায়ন না করা।
দুহাজার উনিশ সালের এক সমীক্ষায় জানা যায় যে পুরুষের তুলনায় নারীরাই বেশি পরকীয়ায় জড়িয়ে আছে। এর আরেকটি কারণ হতে পারে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটির ফলে একে অপরের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা। অনেক সময় এমনটাও দেখা যায় অনলাইন অ্যাপসের মাধ্যমে কোন পুরুষের সাথে চ্যাটিংয়ে জড়িয়ে যাওয়ার কারণে পারিবারিক জীবনে দ্বন্দ্ব কলহ সৃষ্টি এভাবেই দুজনের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।
এ পরকীয়ার আবির্ভাব কোথা থেকে ঘটে আর তার নিরসনের পন্থাই বা কি! এর থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে চোখকে পর নারী বা পরপুরুষের কুদৃষ্টি থেকে যত সংযোমী হওয়া যায় বা নিজের আত্মাকে যত নিবৃত্ত রাখা যায়। চোখ দিয়ে আমরা দেখি আর এই দেখাটা যখন আমরা অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করি বা অনুভূতি জাগায় তখন থেকে ভালো লাগা শুরু হতে থাকে।আর তখন থেকেই সেই রূপবতী চেহারার ম্যাপ আঙ্কন করি।
কখনো কখনো পর নারীকে আমরা কল্পনার জগতে এত্ত সুন্দর করে সাজাই একেবারে পাগল পাড়া হয়ে যায় তার জন্য । আগাগোড়া পুরোটাই মেলে ধরি কল্পনার মহারাজ্যে।তার দেহের ছবিটা একেবারে মনের গভীরে নিয়ে কামনা বাসনার স্বপ্ন বুনি সেই নারীকে নিয়ে। আর সেই নারীর কারণে নিজের স্ত্রীর ওপর অনেক সময় জুলুমের স্টিম রোলার চালাতে খানিকটা দ্বিদ্বাবোধও করি না আমরা।ঠিক তখন আমরা নরপুশুর রূপ ধারণ করি।
এভাবেই আমরা এ সুন্দর কলুষমুক্ত জীবনকে গভীর অরণ্যে নিপতিত করি।যার ধরুন সব কিছুতে জীবনটা বিকৃত রূপ ধারণ করে।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো কোন আমল মানুষকে বেশি জান্নাতে নিয়ে যাবে রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহভীতি এবং সচ্চরিত্র রাসুল (সা.)কে এটাও জিজ্ঞাসা করা হলো আর কোন আমল মানুষকে বেশি জাহান্নামে নিয়ে যাবে তিনি বলেন মুখএবং যৌনাঙ্গ। (তিরমিজি ২০০৪)।
হাদিস শরীফে এসেছে ‘তুমি যদি আল্লাহ তায়ালার ভয়ে কোনো কিছু ছেড়ে দাও তাহলে আল্লাহ তায়ালা তোমাকে এর চেয়ে উত্তম কিছু দান করবেন।’ (তিরমিজি )। হাদিস শরীফে আরো এরশাদ হয়েছে ‘যে যুবক কোনো তরুণীকে একা পেয়েও আল্লাহ তায়ালার ভয়ে তার ওপর কোন হামলা করলো না তাহলে তার জন্য রয়েছে জান্নাতুল ফেরদাউস।’ (বোখারি)। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে দ্বীনের ওপর অটুট রাখুক। আমীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।